ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সিলোনার বছর শুরু পরাজয়ে

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৬ জানুয়ারি ২০১৫

রিয়াল মাদ্রিদ, বার্সিলোনার বছর শুরু পরাজয়ে

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নতুন বছর ২০১৫ সালের শুরুটা পরাজয় দিয়ে করেছে দুই পরাশক্তি রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সিলোনা। রবিবার স্প্যানিশ লা লীগার নিজ নিজ এ্যাওয়ে ম্যাচে হার মানে বিশ্বের অন্যতম সেরা ও জনপ্রিয় ক্লাব দুটি। স্বাগতিক ভ্যালেন্সিয়ার কাছে ২-১ গোলে পরাজিত হয় অতিথি রিয়াল। তেমনি স্বাগতিক রিয়াল সোসিয়েডাডের কাছে ১-০ গোলে নতি স্বীকার করে সফরকারী বার্সা। পরশুর অপর দুই ম্যাচে রায়ো ভায়োকানো ২-১ গোলে গেটাফেকে ও একই ব্যবধানে এবার হারায় এস্পানিওলকে। চলমান মৌসুমে অপ্রতিরোধ্য ছন্দে ছুটে চলছিল রিয়াল। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ২২ জয়ের রেকর্ড গড়েছিল দলটি। এটি আরও বাড়িয়ে বিশ্বরেকর্ড গড়ার সুযোগ ছিল গ্যালাক্টিকোদের। কিন্তু ভ্যালেন্সিয়ার কাছে পতন হয়ে অপরাজেয় যাত্রা থেমেছে রোনাল্ডো, বেল, বেঞ্জামাদের। অবাক করা বিষয় হচ্ছে, ২০১৪ সালের শেষ ম্যাচেও হেরেছিল রিয়াল। দুবাইয়ে প্রীতি ম্যাচে ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলান ৪-২ গোলে হারিয়েছিল রিয়ালকে। হার দিয়ে বছর শেষ করা রিয়াল তাই হারের ক্ষত নিয়েই শুরু করেছে নতুন বছর। অন্যদিকে বেহাল অবস্থা অব্যাহত আছে বার্সিলোনার। আগের ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল হেরে যাওয়ায় পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে ওঠার সুযোগ ছিল ক্যাটালানদের। কিন্তু জর্ডি এ্যালবার আত্মঘাতী গোলে পরাজিত হয়ে সেই সুযোগ হারিয়েছে লুইস এনরিকের দল। বিরতির পর বদলি হিসেবে মেসি-নেইমার মাঠে নেমেও দলের হার এড়াতে পারেননি। এদিকে দুই পরাশক্তির পরাজয়ে আর নিজেদের জয়ে পয়েন্ট তালিকায় এগিয়ে এসেছে এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। শনিবার আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা ৩-১ গোলে পরাজিত করে লেভান্তেকে। হারের পরও বর্তমানে ১৬ ম্যাচ শেষে ৩৯ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে শীর্ষে আছে রিয়াল। ১৭টি করে ম্যাচ শেসে সমান ৩৮ পয়েন্ট করে ভা-ারে বার্সিলোনা ও এ্যাটলেটিকোর। ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে আছে ভ্যালেন্সিয়া। এসি মিলানের কাছে হারলেও টানা জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়েই ভ্যালেন্সিয়ায় খেলতে গিয়েছিল রিয়াল। কিন্তু শুরু থেকেই স্বাগতিকদের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয় অতিথিদের। ম্যাচের প্রথম দশ মিনিট ভ্যালেন্সিয়ার আক্রমণ রুখতেই ব্যস্ত থাকতে হয় রিয়ালকে। তবে বল দখলে নিয়ে পাল্টা আক্রমণে যেতে দেরি করেনি তারা। ১৪ মিনিটে এগিয়েও যায় কার্লো আনচেলোত্তির দল। ভ্যালেন্সিয়ার ডি বক্সে স্বাগতিক ফরোয়ার্ড আলভারো নেগ্রেডোর হাতে বল লাগলে পেনাল্টি পায় রিয়াল। স্পট কিক থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন সুপারস্টার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। লীগের এবারের আসরে ১৫ ম্যাচ খেলা সি আর সেভেনের এটা ২৬ নম্বর গোল। ১৫ গোল করে গোলদাতাদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছেন লিওনেল মেসি। এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে রিয়াল। বিরতির পর ৫২ মিনিটে ভ্যালেন্সিয়া সমতা ফেরায়। স্পেনের ডিফেন্ডার এ্যান্টোনিও বারাগান ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শট নেন। বলের দিকে লক্ষ্য রেখে ডান দিকে ঝঁঁপিয়ে পড়েন রিয়ালের গোলরক্ষক ইকার কাসিয়াস। কিন্তু ডিফেন্ডার পেপের পায়ে লেগে দিক পাল্টে বল জালে জড়ায়। সমতায় ফেরার পর আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠা ভ্যালেন্সিয়া আরও আক্রমণাত্মক হয়। ৬৫ মিনিটে এগিয়েও যায় তারা। স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ড্যানিয়েল পারেহোর কর্নারে হেড করে গোলটি করেন আর্জেন্টিনার ডিফেন্ডার নিকোলাস ওটামেন্ডি। বাকি সময়ে আপ্রাণ চেষ্টা করেও গোল পরিশোধে ব্যর্থ হয় রিয়াল। ফলে লা লীগায় চলমান মৌসুমে প্রথম হার নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের। রিয়াল সোসিয়েডাড আরও একবার আটকে দিল বার্সিলোনাকে। দারুণ জয়ে উচ্ছ্বাসে ভাসছে দলটি। এই জয়ে অসাধারণ কৃতিত্ব গড়েছে সোসিয়েডাড। চলমান মৌসুমে লীগের শীর্ষে থাকা তিনটি দলকেই হারালো তারা। গত আগস্টে রিয়াল মাদ্রিদকে ৪-২ গোলে হারানোর পর গত নবেম্বরে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদকে ২-১ ব্যবধানে হারায় সোসিয়েডাড। এবার তাদের শিকার বার্সা। প্রতিপক্ষের মাঠ আনোয়েটায় বার্সিলোনার শুরুটা হয় যাচ্ছেতাই। নিজেদের ভুলে দ্বিতীয় মিনিটেই পিছিয়ে পড়ে তারা। ডান দিক থেকে মাপা ক্রস করেছিলেন স্বাগতিকদের স্প্যানিশ মিডফিল্ডার জাভি প্রিয়েটো। সেটা বিপন্মুক্ত করতে গিয়ে হেড করে নিজেদের জালেই বল জড়ান বার্সা মিডফিল্ডার জর্ডি এ্যালবা। লিওনেল মেসি ও নেইমার বড় দিনের লম্বা ছুটি কাটানোয় যথেষ্ট অনুশীলন করতে পারেনি। যে কারণে তাদের প্রথমার্ধে খেলাননি কোচ এনরিকে। বিরতির পর এই দুই মহাতারকাকে নামিয়েও ম্যাচে ফিরতে পারেনি ক্যাটালানরা। ফলে আরেকটি হার নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় বার্সিলোনাকে।
×