ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাদ রাজ্জাক-ইমরুল-নাঈম-শফিউল

সৌম্য, সাব্বির, তাসকিন ও তাইজুলের স্বপ্ন পূরণ

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ৬ জানুয়ারি ২০১৫

সৌম্য, সাব্বির, তাসকিন ও তাইজুলের স্বপ্ন পূরণ

মোঃ মামুন রশীদ ॥ ঘোষণার আগেই নির্বাচকরা জানিয়েছিলেন অভিজ্ঞদের নিয়েই গড়া হবে বিশ্বকাপ দল। তবে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পক্ষে সর্বাধিক উইকেট শিকারি অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক দলে ঠাঁই পাননি। তাঁর পরিবর্তে জিম্বাবুইয়ে সিরিজে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখানো আরাফাত সানিকে দলে সুযোগ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করা তরুণ স্পিনার তাইজুল ইসলামের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। এ ছাড়াও প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেয়েছেন টপঅর্ডার ব্যাটিং অলরাউন্ডার সৌম্য সরকার, অলরাউন্ডার সাব্বির রহমান রুম্মান ও পেসার তাসকিন আহমেদ। বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বাস জানিয়েছেন এ ক্রিকেটাররা। তবে গত বিশ্বকাপ খেলা ওপেনার ইমরুল কায়েস, নাঈম ইসলাম ও পেসার শফিউল ইসলামও ছিটকে পড়েছেন। সব মিলিয়ে এবারই প্রথম বিশ্বকাপের মতো মর্যাদার আসরে প্রথমবার খেলার সুযোগ পাচ্ছেন ৯ ক্রিকেটার। বিশ্বকাপের ১১তম আসরে বাংলাদেশের চূড়ান্ত দলে ঠাঁই পাওয়া ১৫ জনের ৯ জনই প্রথবারের মতো অংশ নিতে যাচ্ছেন। সেই তালিকায় থাকা নাসির হোসেন, মুমিনুল হক সৌরভ, এনামুল হক বিজয় এবং আল-আমিন হোসেনের অভিজ্ঞতা আছে দীর্ঘদিন দলের হয়ে খেলার। গত ২-৩ বছর ধরে জাতীয় দলে নিয়মিত মুখ তারা। নাসির-বিজয়-মুমিনুলরা দেশে অনুষ্ঠিত টি২০ বিশ্বকাপেও খেলেছেন এ বছর। তবে ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ; প্রতিটি ক্রিকেটারের কাছেই আলাদা কিছু, অনেক বড় প্রাপ্তি। টি২০ বিশ্বকাপ এবং অনুর্ধ-১৯ বিশ্বকাপ খেলা বিজয় সে কথাটাই জানালেন উচ্ছ্বাসের সঙ্গে। অভিষেকের পর থেকে ধারাবাহিক পারফরমেন্স দেখিয়ে লোয়ার-মিডল অর্ডারে নাসিরের নাম হয়ে গিয়েছিল ‘দ্য ফিনিশার’। তবে মাঝে দীর্ঘদিন ব্যাটে রানখরা থাকায় সর্বশেষ জিম্বাবুইয়ে সিরিজের দলেও ছিলেন না। তাঁর জায়গা নেয়া সাব্বির সুযোগটা কাজে লাগিয়েছে দারুণভাবে। তাই বিশ্বকাপের দলে শেষ পর্যন্ত নাসির থাকবেন কিনা সেটা নিয়ে ছিল শংসয়। তবে এবার প্রিমিয়ার লীগে আবাহনীর হয়ে দুর্দান্ত খেলে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছেন নাসির। ১৬ ম্যাচের ১৫ ইনিংস ব্যাট করে ৫০ গড়ে সংগ্রহ করেছেন ৫৫০ রান। গড় ছিল ৫০ করে। ১টি সেঞ্চুরি এবং ৪টি হাফ সেঞ্চুরি ছিল তাঁর। নাসিরকে দলে ফিরিয়ে আনলেও নির্বাচকরা সাব্বিরকে বাদ রাখতে পারেননি। সুযোগ পেয়ে দারুণ খুশি সাব্বির, ‘বিশ্বকাপে খেলব, ভেবেই ভাল লাগছে। জিম্বাবুইয়ে সিরিজে ভাল খেলার পর আশা ছিল।’ তবে রাজ্জাককে বাদ দেয়ার বিষয়ে প্রধান নির্বাচক ফারুক জানান সাম্প্রতিক অফফর্ম এবং ফিটনেস সমস্যার কারণে তাঁকে বাদ দেয়া হয়েছে। পরিবর্তে দলে আছেন দীর্ঘদিন ঘরোয়া ক্রিকেটে এবং সম্প্রতি জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে আলো ছড়ানো আরাফাত। ২০১১ বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের অপরিহার্য খেলোয়াড় বাঁহাতি ওপেনার ইমরুল এবার বাদ পড়েছেন। তাঁর পরিবর্তে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে সৌম্যের। ১৫ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৬১৫ রান। গড় ৪১ করে। সঙ্গে সেঞ্চুরি একটি এবং হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে ৪টি। তিনি বলেন, ‘আত্মবিশ্বাস শুরু থেকেই ছিল যে ভাল খেললে ভাল ফল আসবে।’ আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে উল্কার বেগে আগমন ঘটেছে তরুণ স্পিনার তাইজুলের। অভিষেকেই হ্যাটট্রিক করার বিরল বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন তিনি। তাই বিশ্বকাপ দলে তাঁর থাকাটা নিশ্চিতই ছিল। সুযোগ পাওয়ার পর তাইজুল বলেন, ‘বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকতে পেরে অনেক ভাল লাগছে। ২টি সিরিজ খেলে এবং ঘরোয়া লীগে ভাল খেলে বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়েছি। সে জন্য বেশ ভাল লাগছে। সামনে যেন ভাল করতে পারি সে জন্য সবার দোয়া চাই।’ এ ছাড়া জাতীয় দলের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার নাঈম প্রিমিয়ার লীগে দারুণ ফর্মে থাকার পরও দলে জায়গা পাননি। অফফর্মের কারণে বাদ পড়েছেন শফিউলও। তাঁর জায়গায় ঠাঁই করে নিয়েছেন তাসকিন। সুযোগ পাওয়ার পর অভিষেকেই ভারতের বিরুদ্ধে ৫ উইকেট নেয়া তাসকিন বলেন, ‘বিশ্বকাপ স্কোয়াডে নাম দেখে খুব ভাল লেগেছে। এখন আমার টার্গেট হচ্ছে বিশ্বকাপের সেরা একাদশে সুযোগ পাওয়া। সুযোগ পেলে নিজের সেরাটা উপহার দেয়ার চেষ্টা থাকবে।’
×