ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শেষ পর্বে তারকাদের ব্যাটিং ঝলক, রানার্সআপ প্রাইম দোলেশ্বর

প্রিমিয়ার ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন প্রাইম ব্যাংক

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ৬ জানুয়ারি ২০১৫

প্রিমিয়ার ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন প্রাইম ব্যাংক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কোন হিসেব-নিকেশের মধ্যে যেতে হলো না। সরাসরিই চ্যাম্পিয়ন হয়ে গেল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জয় ছিনিয়ে নেয়ার পরই তাই উল্লাসে মাতলেন ক্লাব কর্মকর্তা আর ক্রিকেটাররা। রবিবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেটে সুপার লীগের শেষ ম্যাচে প্রতিপক্ষ আবাহনী লিমিটেডকে ৯ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে এবার শিরোপা ঘরে তুলেছে দলটি। শিরোপা দৌড়ে শেষ রাউন্ড পর্যন্ত টিকে থাকা প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব শেষ পর্যন্ত মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডকে ৩ উইকেটে হারিয়ে দিলেও ২৪ পয়েন্ট নিয়ে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থেকেছে। বিকেএসপিতে তাই জয়ের পরও তেমন আনন্দ করেনি দোলেশ্বর। দিনের অপর ম্যাচে ফতুল্লায় এনামুল হক বিজয়ের দুর্দান্ত হার না মানা শতকে কলাবাগান ক্রিকেট একাডেমি (সিএ) ৩৮ রানে হারিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে। তৃতীয় অবস্থানে থেকে আবাহনী এবং চতুর্থ অবস্থানে থেকে কলাবাগান সিএ এবার লীগ শেষ করল। সৌম্যের বিধ্বংসী ব্যাটিং ॥ পুরো আসরেই ব্যাট হাতে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েছেন সৌম্য। পাশাপাশি বল হাতেও সমানতালে পারফরমেন্স দেখিয়ে দলকে পুরো লীগেই দারুণ সার্ভিস দিয়েছেন তিনি। আবাহনীর বিরুদ্ধে জয় পেলেই শিরোপা। তাই যেন ব্যাটে-বলে জ্বলে উঠলেন সৌম্য। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ফরহাদ রেজা ও সৌম্যের পেসে বেসামাল আবাহনী নিয়মিত বিরতিতে উইকেট খোয়ায়। তবে পুরো আসরে দারুণ উজ্জ্বল নাসির হোসেন এদিনও একা লড়ে ৬৯ বলে ৬ চারে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন। লিটন দাস ৬৪ বলে ৪ চারে ৩৯ করে কিছুটা সঙ্গ দিয়েছিলেন। অন্যদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ৪৪.২ ওভারে ১৬০ রানেই গুটিয়ে যায় আবাহনী। জবাব দিতে নেমে এক সৌম্যের আগ্রাসী মনোভাবের সামনেই দাঁড়াতে পারেনি আবাহনীর কোন বোলার। তিনি ৯১ বলে ৭ চার ও ৭ ছক্কায় ৯৭ রান করে ফিরে গেলেও সৈকত আলী ৭২ বলে ৭ চারে ৫৮ রান করে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ২৭.৩ ওভারে ১ উইকেটে ১৬৩ রান তুলে ৯ উইকেটের বিশাল জয় পায় প্রাইম ব্যাংক। স্কোর ॥ আবাহনী-৪৪.২ ওভারে ১৬০/১০ (নাসির ৫৫, লিটন ৩৯, মোসাদ্দেক ২২; ফরহাদ ৪/১৭, এনামুল ২/২৫, সৌম্য ২/৩৬)। প্রাইম ব্যাংক-২৭.৩ ওভারে ১৬৩/১ (সৌম্য ৯৭, সৈকত ৫৮*; মজিদ ১/১৬)। ফল ॥ প্রাইম ব্যাংক ৯ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা ॥ সৌম্য সরকার (প্রাইম ব্যাংক)। রানার্সআপ দোলেশ্বর ॥ শুধু জয় পেলেই চলবে না পাশাপাশি প্রাইম ব্যাংকের পরাজয়টাও জরুরী শিরোপা জিততে। তবে জয় তুলে নিতেই বেশ কষ্ট করতে হয়েছে প্রাইম দোলেশ্বরকে। আর প্রাইম ব্যাংকও জিতে গেছে। তাই ২ পয়েন্ট পিছিয়ে থেকে রানার্সআপই হয়েছে দলটি। রবিবার তারা ৩ উইকেটে হারিয়েছে মোহাডেমানকে। প্রথম ব্যাট করে মোহামেডান ৯ উইকেটে ২২০ রান তোলে। এদিনও দারুণ। ব্যাটিং করে মাশরাফি বিন মর্তুজা ৪৬ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় ৩৮, মোঃ মিঠুন ৪৫ ও নাঈম ইসলাম অপরাজিত ৪০ রান করেন। জবাবে দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মেহেদি মারুফ ও রনি তালুকদারের জোড়া হাফ সেঞ্চুরির পরও বাকি ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় শেষ পর্যন্ত ৪৮.৫ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে কষ্টার্জিত জয় পায় দোলেশ্বর। স্কোর ॥ মোহামেডান-৫০ ওভারে ২২০/৯ (মিঠুন ৪৫, সায়েম ৪০, নাঈম ৪০*, মাশরাফি ৩৮; আসিফ ৩/২৯, শফিউল ৩/৩৭)। প্রাইম দোলেশ্বর-৪৮.৫ ওভারে ২২৩/৭ (রনি ৬৩, মেহেদী ৫৮, ইলিয়াস ২৭; নবি ২/৩০)। ফল ॥ প্রাইম দোলেশ্বর ৩ উইকেটে জয়ী। ম্যাচ সেরা ॥ রনি তালুকদার (প্রাইম দোলেশ্বর)। এনামুলের অপরাজিত শতক ॥ ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকলেন এনামুল হক বিজয়। খেললেন বিস্ফোরক এক ইনিংস। ১৪৬ বলে ৭ চার ও ১০টি বিশাল ছক্কায় তিনি ১৫০ রানে অপরাজিত থাকেন। ৪৫ ওভারে ৩ উইকেটে ২৮৮ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় কলাবাগান সিএ। জবাব দিতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে ৮৫ রান করলেও আর কোন জুটি বড় করতে পারেনি রূপগঞ্জ। শেষ পর্যন্ত ৪৫ ওভারে ৬ উইকেটে ২৫০ রানে শেষ হয় তাদের ইনিংস। ৩৮ রানের জয়ে দারুণভাবেই এবার লীগ শেষ করল কলাবাগান সিএ। স্কোর ॥ কলাবাগান সিএ-৪৫ ওভারে ২৮৮/৩ (এনামুল ১৫০*, নাফিস ৫২, ইমতিয়াজ ৪২, সাব্বির ৩৬; ফয়সাল ১/৩৪, কাপালি ১/৪১)। রূপগঞ্জ-৪৫ ওভারে ২৫০/৬ (জুনায়েদ ৫০, নাজমুল মিলন ৪৩*, ফয়সাল ৩৫; বিশ্বনাথ ২/২৭)। ফল ॥ কলাবাগান সিএ ৩৮ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা ॥ এনামুল হক বিজয় (কলাবাগান সিএ)।
×