ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ত্রিপুরার মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা ভানুলাল সাহা সস্ত্রীক শ্বশুরবাড়ি হবিগঞ্জে

প্রকাশিত: ০৪:২৪, ৪ জানুয়ারি ২০১৫

ত্রিপুরার মন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা ভানুলাল সাহা সস্ত্রীক শ্বশুরবাড়ি হবিগঞ্জে

রফিকুল হাসান চৌধুরী তুহিন, হবিগঞ্জ থেকে ॥ বাংলা-ভারত গোটা বাঙালীর শুধু নয়, হবিগঞ্জবাসীরও গর্ব বটে। ভারতে থেকেও নানা কর্ম ব্যস্ততার মাঝে যিনি ভুলতে পারেননি পেছনে ফেলা সেই শ্বশুরবাড়ির জামাই আদর আর ভাপা পিঠা, ইলিশ মাছ ও ভাজা বেগুনীর স্বাদ। তাই তো তিনি দীর্ঘ ৪৩ বছর পর সহধর্মিণী অপূর্ণা রায়কে নিয়ে এবার খোদ মন্ত্রী হিসেবে পা রাখলেন বাংলাদেশের মাটিতে। ছুটে গেলেন হবিগঞ্জের উপজেলা লাখাইয়ের পল্লী বামৈ এর চিরচেনা শ্বশুরবাড়ির আঙ্গিনায়। তিনি হলেনÑ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের অর্থ, খাদ্য, সংস্কৃতি ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও এই জেলার জামাতা মুক্তিযোদ্ধা ভানু লাল সাহা। তবে তার শ্বশুরবাড়িটি আর তাদের নেই। বেদখল হয়ে যাওয়া আইনের মারপ্যাঁচে এই বাড়িতে এখন বাস করছেন আলমগীর মিয়া নামে এক শিক্ষক। বৃহস্পতিবার সড়কপথে ত্রিপুরা থেকে সীমান্ত পথে বি-বাড়ীয়া সদরে প্রবেশ করেন মন্ত্রী ভানু লাল সাহা। এদিন এখানেই তিনি তার নিজবাড়িতে অবস্থান করেন। পরদিন শুক্রবার সকালে শ্বশুরবাড়ি বামৈ’র উদ্দেশে হবিগঞ্জ সার্কিট হাউসে আসেন। তাঁকে জেলা প্রশাসক মোঃ জয়নাল আবেদীন ও পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র স্বাগত জানান। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তিনি রওনা হন হবিগঞ্জের গ্রাম বামৈ’র শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে। দুপুর ১২টায় শ্বশুরবাড়ির আঙ্গিনায় সহধর্মিণী অপূর্ণা রায়কে নিয়ে প্রথম পা রাখেন ভানু লাল। এ সময় অপূর্ণা ও ভানু লালের চোখে-মুখে চাপা আনন্দ। এই বাড়িটি এখন শুধুই স্মৃতি। তার বেশি কিছু নয়। কারণ এখানে অন্য এক সম্প্রদায়ের মানুষ বাস করছে। প্রকাশ্যে মুখে কিছু না বললেও বুঝতে পারছেন এখানে এই শীতে ভাপা পিঠা, ইলিশ মাছ আর ভাজা বেগুনী দিয়ে জামাই আদর করার মতো আর কোন পরিস্থিতি নেই। শুধু আশপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হাতেগোনা দু’একজন আত্মীয়-স্বজন। এক সময়ের জামাতা এখন প্রভাবশালী মন্ত্রী হয়েও এখানে বেশিক্ষণ বসে থাকার সুযোগ নেই। তবে এই ফাঁকে তার সহধর্মিণী অপূর্ণা রায় পার্শ্ববর্তী কয়েকজনের সঙ্গে ঘুরে দেখার কাজটি সেরে ফেললেন। এক সময় চলে গেলেন দুপুরের ভুুরি ভোজের আয়োজক বামৈ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মাহফুজুল আলম মাহফুজের বাড়িতে। সেখানে জেলা প্রশাসক মোঃ জয়নাল আবেদীন, পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র, ইউএনও মোহাম্মদ শওকত আলীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সন্ধ্যায় বিদায়ক্ষণে মন্ত্রী ভানু লাল সাহা আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, আমি ’৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। তখন আমার বয়স ছিল ২৪। তাই মুক্তিযোদ্ধা ও এই স্বাধীন দেশটাকে খুবই ভালবাসি। শুধু তাই নয়, শ্বশুরবাড়ির ভিটেটিকেও আমি ও আমার স্ত্রী ভুলতে পারেনি।
×