ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দিনাজপুরে পাঠ্যবইয়ের নামে পড়ানো হচ্ছে অপাঠ্য

প্রকাশিত: ০৫:২৮, ৩ জানুয়ারি ২০১৫

দিনাজপুরে পাঠ্যবইয়ের নামে পড়ানো হচ্ছে  অপাঠ্য

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) তালিকাভুক্ত ছাড়া অন্য কোন বই সহায়ক গ্রন্থ না করার নির্দেশ থাকলেও অধিকাংশ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তা মানা হচ্ছে না। সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে নিম্নমানের, ভুলে ভরা বই পাঠ্য তালিকাভুক্ত করার বিনিময়ে এক শ্রেণীর স্কুলশিক্ষক ও স্কুল পরিচালনা কমিটি সংশ্লিষ্ট বইয়ের প্রকাশক এবং লেখকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে এসব বই অভিভাবকরা চড়া দামে কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। অপাঠ্য বইকে পাঠ্যবইয়ে রূপান্তর করার ফলে শিক্ষার্থীরা ক্রমেই মেধাশূন্য হয়ে পড়ছে। এছাড়া একেক স্কুলে একেক ধরনের বই সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে কিনতে বাধ্য করায় অভিভাবকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। বছরের শুরুর তিন মাস জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চে পাঠ্যবইয়ের এই রমরমা বাণিজ্য চলে। প্রতিবছর জানুয়ারি মাসের শুরুতে নানা খ্যাত ও অখ্যাত প্রকাশনা সংস্থার নিয়োগকৃত এজেন্টরা এই ব্যবসায় নেমে পড়ে। বছরের পর বছর স্কুলশিক্ষক ও প্রকাশকদের এই বাণিজ্য চললেও এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কার্যকরী কোন উদ্যোগ নেই। শুধু বছরের শুরুতেই সরকারী সংস্থা এনসিটিবির নির্ধারিত পাঠ্যবইয়ের তালিকা স্কুলে স্কুলে পাঠানো ছাড়া শিক্ষা অফিসের এ ব্যাপারে আর কোন ভূমিকা নেই। দীর্ঘদিন ধরে অনেক স্কুলে অপাঠ্যবইকে পাঠ্যবই হিসেবে চালিয়ে রমরমা বাণিজ্য চলছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, মাধ্যমিক স্তরে এনসিটিবির বাইরে বাংলা ও ইংরেজি ব্যাকরণ দ্বিতীয় পত্র এবং বাংলা ও ইংরেজি সংকলনের (গল্প) এই চারটি বিষয় নিয়েই মূলত পাঠ্যবই বাণিজ্য চলে। এসব বই পাঠ্য করার ব্যাপারে প্রতিবছরের শুরুতে এনসিটিবি থেকে তালিকা স্কুলে পাঠানো হয়। কিন্তু তালিকা অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট লেখকের ও প্রকাশনী সংস্থার এই ৪টি সহায়ক গ্রন্থ স্কুলে পাঠ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে কিনা, পরবর্তীতে আর কোন খবর নেয়া হয় না। তদারকি না থাকার কারণে বিভিন্ন স্কুল বিভিন্ন লেখক ও প্রকাশনা সংস্থার পুস্তক ইচ্ছামতো তালিকাভুক্ত করে। এক্ষেত্রে অধিকাংশ স্কুলে পাঠ্যপুস্তক সিলেকশন কমিটি থাকলেও এই কমিটি বা স্কুলপ্রধানরা বাইরের গুণগতমানের চেয়ে বেশি নজর দেন অর্থের দিকে। যে প্রকাশনা সংস্থা যত বেশি টাকা ‘ডোনেশন’ দেয়, সে প্রকাশনা সংস্থার বই পাঠ্য তালিকার জন্য নির্ধারিত বা মনোনীত করা হয়।
×