ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ব্যাপক শোডাউনের প্রস্তুতি

ওরা কাগুজে বাঘ- মাঠে খুঁজে পাওয়া যাবে না ॥ হানিফ

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ৩ জানুয়ারি ২০১৫

ওরা কাগুজে বাঘ- মাঠে খুঁজে পাওয়া যাবে না ॥ হানিফ

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ রাজপথ দখলে রাখতে আগামী ৫ ও ১০ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকাতে বড় দুটি শো-ডাউন করবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। আগামী ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের এক বছর পূর্তির দিনে ঢাকা মহানগরের ১৬টি নির্বাচনী এলাকায় ১৬টি বড় সমাবেশ ও বিজয় র‌্যালি এবং ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত জনসভাকে ‘জনসমুদ্রে’ রূপ দিয়ে এ দুটি শো-ডাউনের ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে দলটিতে। কর্মসূচী সফল করতে শুক্রবার সন্ধ্যায় ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত যৌথসভা শেষে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এমপি বলেন, যতই হুমকি-ধমকি দিক, ৫ জানুয়ারি বিএনপি নেতাদের রাজপথে খুঁজেই পাওয়া যাবে না। ৫ জানুয়ারি অনেক কিছু করে ফেলবে বলে যারা হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন সেই কাগুজে বাঘদের খুঁজেই পাওয়া যাবে না। ৫ ও ১০ জানুয়ারির আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচী সফল করতেই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগরী থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবং যেসব থানায় দলীয় সংসদ সদস্য নেই সেসকল থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে এই যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে নির্বাচিত দলীয় সংসদ সদস্য এবং সকল থানা-ওয়ার্ডের নেতাদের ওই দুটি কর্মসূচিতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীদের উপস্থিতি নিশ্চিত করে রাজপথ দখলে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়। ১০ জানুয়ারির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নির্বাচনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ৫ জানুয়ারি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়ে মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ওইদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসহ ঢাকা মহানগরীর ১৬টি স্থানে আওয়ামী লীগ সমাবেশ করবে। এতে কেন্দ্রীয় নেতারা ১৬টি টিমে বিভক্ত হয়ে এসব সভা-সমাবেশ ও বিজয় শোভাযাত্রায় অংশ নেবেন। এছাড়াও এদিন সারা দেশেও গণতন্ত্রের বিজয় দিবস উপলক্ষে বর্ণাঢ্য বিজয় শোভাযাত্রা ও সভা-সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে বিএনপির অবস্থানের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, বিএনপির জন্মই হয়েছে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে। সেসময় বিএনপি নেত্রী ও তার দোসররা দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র বানানোর ষড়যন্ত্র করেছিলেন। কিন্তু গণতন্ত্রের বিজয়ের মাধ্যমে দেশ এখন এগিয়ে যাচ্ছে। এ স্বীকৃতি বিশ্ব সম্প্রদায়ই দিচ্ছে বাংলাদেশকে। বিএনপির ‘যে কোন মূল্যে’ সমাবেশ করার ঘোষণার সমালোচনা করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, বিএনপি উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছে। সমাবেশ কাকে করতে দেয়া হবে বা না হবে সেটা নির্ধারণ করা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ। তবে বিএনপির উস্কানিমূলক বক্তব্যই প্রমাণ করে তারা আইনের শাসনে বিশ্বাস করে না। এ ধরনের বক্তব্য বরদাশত করা হবে না। অশুভ তৎপরতা থাকলে তা রাজপথে থেকেই মোকাবেলা করা হবে। বিএনপির আন্দোলনের হুমকি নিয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল। যে কোন ধরনের সংহিতা প্রতিহত করতে প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই আওয়ামী লীগের। যৌথসভা শেষে প্রেস ব্রিফিংকালে নগর আওয়ামী লীগের এম এ আজিজ, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, কেন্দ্রীয় নেতা আহমদ হোসেন, আফম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি, ডা. বদিউজ্জামান ভুঁইয়া ডাবলু, ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, ফরিদুন্নাহার লাইলী, ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি, এনামুল হক শামিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচনের আলোচনা ২০১৮ সালের আগে নয়- সুরঞ্জিত ॥ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেছেন, ২০১৮ সালের আগে নির্বাচন নিয়ে কোন আলোচনা হবে না। আর ২০১৯ সালের আগে জাতীয় নির্বাচনের সুযোগ নেই। শুক্রবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু একাডেমী আয়োজিত চলমান রাজনীতি বিষয়ক এক আলোচনা সভায় তিনি আরও বলেন, নির্বাচন, নির্বাচনী আইন সংশোধন ও অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া যে আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন তাতে কিছু ভাল কথা থাকলেও তা এসেছে অসময়ে। বিষয়টি হচ্ছে খারাপ সময়ে খালেদা জিয়া ভাল কথা বলেছেন, ভাল সময়ে ভাল কথা বললে আরও গুরুত্বপূর্ণ হতো। তবুও আমি মনে করি এই বিষয়গুলো আলোচনার জন্য ২০১৫ সাল নয়, বর্তমান সরকারের মেয়াদপূর্তির শেষভাগ অর্থাৎ ২০১৮-এর শেষদিকে বা ২০১৯ এ গিয়ে এ বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করা যেতে পারে। তিনি বলেন, সাত দফা ঘোষণার মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়ার শুভবুদ্ধির উদয় হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। তবে তাঁকে আরও চার বছর অপেক্ষা করতেই হবে। চার বছর বেশি সময় নয়। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারিকে আমরা গণতন্ত্র রক্ষা দিবস মনে করি। তাই ৫ জানুয়ারি সমাবেশ হবে। আওয়ামী লীগের এই সমাবেশ বানচাল করার সাধ্য কারও নেই। বিদেশীরা ৫ জানুয়ারির নির্বাচন মেনে নিয়েছে। ৫ জানুয়ারি সমাবেশ নিয়ে ঝামেলা করবেন না। খালেদার সাত দফা প্রসঙ্গে সুরঞ্জিত আরও বলেন, আলোচনার আগে জঙ্গীবাদী চক্রের সঙ্গে সংস্পর্শ ছিন্ন করেছেন কিনা, তা আগে স্পষ্ট করুন। যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে আপনার বক্তব্য আরও স্পষ্ট করতে হবে। বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনার যদি সভা করতে চান যথানিয়মে প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই শান্তিপূর্ণ সভা করতে হবে। তবে সমাবেশের নামে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা হলে তা করতে দেয়া হবে না। বিশ্বের কোন গণতন্ত্রেই অশান্তি করে লোক হত্যার সভা করার অধিকার দেয়া হয়নি। আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ সেলিম এমপি, মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই কানু, বঙ্গবন্ধু একাডেমীর মহাসচিব হুমায়ুন কবির মিজি প্রমুখ।
×