ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

পরাশক্তিদের হতাশার রাতে নাটকীয় জয় ম্যানসিটির

প্রকাশিত: ০৪:৫৬, ৩ জানুয়ারি ২০১৫

পরাশক্তিদের হতাশার রাতে নাটকীয় জয় ম্যানসিটির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নতুন বছরের প্রথম দিনেই নাটকীয়তা আর রোমাঞ্চ দেখল ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ। বৃহস্পতিবার ২০১৫ সালের প্রথম দিনের ম্যাচগুলোতে শুধু ম্যানচেস্টার সিটি ছাড়া সব বড় দলই হোঁচট খেয়েছে। ঘরের মাঠ লন্ডনের ইতিহাদ স্টেডিয়ামে চরম নাটকীয়তা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচে ম্যানসিটি ৩-২ গোলে পরাজিত করে সান্ডারল্যান্ডকে। আসরের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের হয়ে গোলগুলো করেন ইয়াইয়া তোরে, স্টেভান জোভেটিক ও ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড। অতিথিদের হয়ে গোল করেন রডওয়েল ও জনসন। অপ্রতিরোধ্য ছন্দে থাকার পর ব্যর্থতা অব্যাহত রেখেছে চেলসি। টানা ১৪ ম্যাচ অপরাজিত থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীদের ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল জোশে মরিনহোর দল। কিন্তু এরপর থেকেই মোড়ক লেগেছে দলটির পারফর্মেন্সে। নতুন বছরের প্রথম দিনে টটেনহ্যাম হটস্পারের কাছে রীতিমতো বিধ্বস্ত হয়েছে দ্য ব্লুজরা। নিজেদের মাঠ হোয়াইট লেনে টটেনহ্যাম ৫-৩ গোলে উড়িয়ে দিয়ে অতিথি চেলসিকে। ব্লুজদের হয়ে তিন তারকা দিয়াগো কোস্তা, ইডেন হ্যাজার্ড ও জন টেরি গোল করেও দলের হার রোধ করতে পারেননি। শিরোপা নিয়ে স্বপ্ন দেখা আরও আগেই শেষ করেছে আর্সেনাল! দলটির নতুন লক্ষ্য, অন্ততপক্ষে সেরা চারে থেকে লীগ শেষ করা। কিন্তু তা সম্ভব কি না সেটা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। কেননা আবারও পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে গানার্সরা। এবার সাউদাম্পটনের কাছে ২-০ গোলে হেরেছে আর্সেনাল। আর গতবারের রানার্সআপ লিভারপুলের ব্যর্থতা তো আরও বড়। পয়েন্ট তালিকায় সবার নিচে থাকা লিচেস্টার সিটির সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে দ্য রেডসরা। তাও আবার ঘরের মাঠ এ্যানফিল্ডে। আরেক পরাশক্তি ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডও ১-১ গোলে ড্র করেছে স্টোক সিটির সঙ্গে। নতুন বছরের প্রথম দিনের আরেক ম্যাচে হাল সিটি ২-০ গোলে এভারটনকে হারায়। বাকি চারটি ম্যাচ অমীমাংসিত থাকে। এ্যাস্টন ভিলা-ক্রিস্টাল প্যালেস ম্যাচ গোলশূন্য, নিউক্যাসল ইউনাইটেড-বার্নলি ম্যাচ ৩-৩ গোলে, কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্স-সোয়ানসি সিটি ম্যাচ ১-১ গোলে ও ওয়েস্টহ্যাম ইউনাইটেড-ওয়েস্টব্রুমউইচের মধ্যকার ম্যাচটিও ১-১ গোলে ড্র হয়। চেলসির অব্যাহত ব্যর্থতা কারণে পয়েন্ট তালিকায় তাদের ছুঁয়ে ফেলেছে ম্যানসিটি। পরশুর ফলাফলের পর দু’দলের ভা-ারেই জমা সমান ৪৬ পয়েন্ট করে। খেলেছে ২০ ম্যাচ। তবে গোল গড়ে এখনও উপরে আছে মরিনহোর দল। ৩৭ পয়েন্ট নিয়ে ম্যানইউ তৃতীয়, ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে সাউদাম্পটন চতুর্থ, ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে টটেনহ্যাম পঞ্চম, ৩৩ পয়েন্ট নিয়ে আর্সেনাল ষষ্ঠ ও ২৯ পয়েন্ট নিয়ে লিভারপুলের অবস্থান আট নম্বরে। পয়েন্ট তালিকার ক্রমবিন্যাস জানান দিচ্ছে, কেমন ধুন্ধুমার লড়াই হচ্ছে ইপিএলে। দিন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যে শিরোপা লড়াই আরও জমে উঠবে সেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। নিজেদের মাঠ হোয়াইট হার্ট লেনে চেলসির বিরুদ্ধে টটেনহ্যামের হয়ে জোড়া গোল করেন হ্যারিকেন। একটি করে গোল করেন ড্যানি রোজ, আন্দ্রোস টাউনসেন্ড ও নাসের চাডলি। ম্যাচের শুরুতে অবশ্য অনুমান করা যায়নি অতিথি চেলসি এভাবে ডুববে। ১৮ মিনিটে দিয়াগো কোস্তার গোলে এগিয়ে যাওয়া দলটির সামনে ছিল জয়ে ফেরার হাতছানি। আগের ম্যাচে সাউদ্যাম্পটনের সঙ্গে ড্র করেছিল তারা। ৩০ মিনিটে কেনের গোলে সমতা ফেরায় টটেনহ্যাম। এরপর আরও ধারাল হয়ে উঠে স্বাগতিকদের আক্রমণগুলো। ৪৪ মিনিটে চাডলির শট বারে লেগে ফিরলে বেঁচে যাচ্ছিল অতিথিরা। কিন্তু তাদের হতাশ করে ফিরতি বল জালে পাঠিয়ে দেন ড্যানি। পরের মিনিটেই চেলসিকে হতাশায় ডুবিয়ে আরেক গোল তুলে নেয় টটেনহ্যাম। গ্যারি ক্যাহিল ডি বক্সে কেনকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় টটেনহ্যাম। স্পট কিক থেকে গোল করতে ভুল করেননি টাউনসেন্ড। বিরতির পর শুরু থেকেই টটেনহ্যামের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে চেলসি। কিন্তু ম্যাচের ৫২ মিনিটে উল্টো আরেক গোল হজম করে মরিনহোর দল। নিজের দ্বিতীয় গোল করেন কেন। ৪-১ গোলে এগিয়ে যেয়ে তখনই জয় অনেকটা নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা। ৬১ মিনিটে দলকে খেলায় ফেরানোর চেষ্টা করেন হ্যাজার্ড। বেলজিক তারকা গোল করে ব্যবধান করেন ৪-২। তবে ব্যবধান কমানোর স্বস্তি বেশিক্ষণ থাকেনি অতিথি শিবিরে। ৭৮ মিনিটে চাডলির লক্ষ্যভেদে টটেনহ্যাম এগিয়ে যায় ৫-২ গোলে। ম্যাচ শেষের তিন মিনিট আগে চেলসির হয়ে সান্ত¡নাসূচক আরেকটি গোল করেন অধিনায়ক জন টেরি। ম্যানসিটি-সান্ডারল্যান্ড ম্যাচের পাঁচটি গোলই হয়েছে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে। তাও আবার ১৬ মিনিটের মধ্যে। ৫৭ ও ৬৬ মিনিটে যথাক্রমে তোরে ও জোভেটিকের গোলে এগিয়ে সিটি। কিন্তু ৬৮ ও ৭১ মিনিটে দুই গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরায় সান্ডারল্যান্ড। ৭৩ মিনিটে ল্যাম্পার্ড দুর্দান্ত গোল করে দারুণ জয় উপহার দিনে ম্যানসিটিকে।
×