ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল বাঁচাতে সমাবেশ, পদযাত্রা

প্রকাশিত: ০৫:৩১, ২ জানুয়ারি ২০১৫

মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল বাঁচাতে সমাবেশ, পদযাত্রা

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট ॥ বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন ও মংলাবন্দর রক্ষা এবং অবৈধ বাঁধ অপসারণ করে আন্তর্জাতিক নৌরুট মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল দ্রুত খনন, পুনর্খননের দাবিতে বাগেরহাটে দীর্ঘ পদযাত্রা ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার রামপাল উপজেলা ভরাট হয়ে যাওয়া দাউদখালী নদীর বুকে শ্রীফলতলা ব্রিজের নিচ থেকে শুরু হয়ে ঘষিয়াখালী চ্যানেল পর্যন্ত এ পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। পদযাত্রা ও মানববন্ধনের শুরুতে এ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন শেখের সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রামপাল উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি, কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ (সিডিপি), আন্তর্জাতিক মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল রক্ষা সংগ্রাম কমিটি, সার্বিক মানব উন্নয়ন সংগঠন-কারিতাস, পিপলস্ রাইট ভয়েস(পিআরভি)-এর যৌথ উদ্যোগে এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেনÑরামপাল উপজেলা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক মোঃ বজলুর রহমান, মংলা ঘষিয়াখালী চ্যানেল রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এমএ সবুর রানা, কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপের (সিডিপি) খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী এস এম ইকবাল হোসেন বিপ্লব, কারিতাসের উপজেলা মাঠ কর্মকর্তা হারুন গাজী, জাসদ নেতা শেখ আফজাল হোসেন, নবলোকের ভিলেজ প্রকল্প কর্মকর্তা পল্লব রায়, প্রবীর বিশ্বাস, মোঃ সোহরাব হোসেন, মিলন ম-ল, সুভাষ ম-ল, ভিকাস সদস্য নাহার বেগম, জলবায়ুসহিষ্ণু গ্রাম উন্নয়ন কমিটির কৃষ্ণা রানী দে, শাহনাজ সুলতানা পলি, রেবেকা ¯িœগ্ধা বাড়ৈ, আকলিমা খানম, তারিকুল ইসলাম, শাহিনা বেগম, ফিরোজা বেগম। বক্তারা বলেন, দাউদখালী নদী ও এর সংযোগকারী খালসমূহের অবৈধ দখলের কারণে ঘষিয়াখালী চ্যানেলটি ভরাট হয়ে গেছে। যে কারণে তেল ট্যাংকার দুর্ঘটনায় সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হয়। বিপন্ন জীবন-জীবিকার পুনঃ উদ্ধার, জলাবদ্ধতা নিরসনে পরিকল্পিতভাবে দাউদখালী নদীসহ সংলগ্ন সকল সরকারী খালের ওপর অবৈধ বাঁধ ও স্থাপনা অপসারণের দাবি জানান তারা। বক্তারা আরও বলেন, আন্তর্জাতিক মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেলটি পরিকল্পিতভাবে খনন এবং পুনর্খনন প্রয়োজন। বর্তমানে রুটটি যে অবস্থায় আছে সেভাবে খনন করলে ৬ মাসের মধ্যে আবার ভরাট হয়ে যাবে। প্রায় ৭ কিলোমিটার বাঁক থাকায় জোয়ারভাটার সময় দ্বিমুখী পানির টানে সব সময় পানি স্থবির থাকে। যে কারণে পানির প্রবাহ একেবারেই ক্ষীণ হয়ে পড়ায় জোয়ারে আসা সকল পলি এই নদীতে জমা হয়ে দ্রুত ভরাট হয়। চ্যানেলটি সচল করতে হলে এই দ্বিমুখী অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে হবে। বক্তারা দাবি করেন, ধীরগতিতে খনন কার্যক্রম চললে একদিক দিয়ে কাটবে অন্যদিকে ভরাট হবে। অর্থের অপচয় হবে। এজন্য একই সঙ্গে একাধিক ড্রেজার দিয়ে একই মৌসুমে খনন কাজ শেষ করে স্রোতধারা প্রবহমান রাখতে হবে। পরিকল্পিতভাবে যদি এই খনন কাজ পরিচালনা করা না হয় তবে তা কোন কাজে আসবে না। সুন্দরবন এবং মংলাবন্দর একসঙ্গে বাঁচাতে হলে মংলা-ঘষিয়াখালী চ্যানেল খনন, পুনর্খনন করে তা রক্ষা করতে হবে। আর এই চ্যানেল ঠিক রাখতে হলে এর সঙ্গে ১৪০টি সংযোগ নদী-খাল সচল রাখতে হবে। এজন্য সকল খাল খনন ও বাঁধ অপসারণ করতে হবে। এলাকার চিংড়ি চাষ পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হবে। নদী-খাল আটকিয়ে এই চিংড়ি চাষ করতে দেয়া যাবে না। জৌখালী সাবপ্রজেক্টেও অকেজো স্লুইসগেট অপসারণপূর্বক ৩৪/২ এর পরিকল্পিত স্লইসগেট নির্মাণ ও প্রজেক্টভুক্ত ১শ’ ১০ কিলোমিটার নদী-খাল খনন কাজ অব্যাহত রাখার দাবি জানান বক্তারা। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধায়নে এ কাজ করতে হবে। পদযাত্রায় বিভিন্ন শ্রেণীপেশার বিপুলসংখ্যক নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
×