ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোন প্রশ্নই ওঠে না ॥ নাসিম

প্রকাশিত: ০৫:১২, ২ জানুয়ারি ২০১৫

বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোন প্রশ্নই ওঠে না ॥ নাসিম

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বিএনপি চেয়ারপার্সনের সংলাপের আহ্বান নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, বিএনপির সঙ্গে সংলাপের কোন প্রশ্নই ওঠে না। নির্বাচন কমিশন ছাড়া কারও সঙ্গে কোন সংলাপ হবে না। বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ের ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। মোহাম্মদ নাসিম বলেন, খালেদা জিয়ার আহ্বানে সাড়া দেয়ার বিষয়টির আমাদের কাছে কোন গুরুত্ব নেই। সাংবাদিক সম্মেলনে খালেদা জিয়ার দেয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, তাঁর বক্তব্য আমার কাছে মনে হচ্ছে উনি ২০১৩ সালের বক্তব্য দিচ্ছেন। ২০১৩ সালে সংলাপের প্রয়োজন ছিল এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু মানুষ তো এত বোকা নয়। শেখ হাসিনা আপনাকে প্রকাশ্যে সংলাপের আহ্বান জানিয়েছিলেন। এটা বাংলার মানুষ জানে। আর আপনি খালেদা জিয়ার সংলাপের আহ্বানে সাড়া দেননি। উল্টো মানুষ পুড়িয়ে মারলেন, গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া শুরু করেছিলেন। বিএনপি নেত্রীর উদ্দেশে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আন্দোলনের নামে অনেক নাটক করেছেন, দয়া করে ক্ষান্ত হন। আগামী ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্রের বিজয় দিবস পালনে মহানগরীর সকল নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে বিএনপি-জামায়াত জোটের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলারও আহ্বান জানান মোহাম্মদ নাসিম। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এমএ আজিজের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী মোহাম্মদ সেলিম। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এ্যাভিনিউয়ের আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী সমর্থক জোটের উদ্যোগে আয়োজিত হরতালবিরোধী বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বিএনপি নেত্রীর উদ্দেশে বলেছেন, সন্ত্রাসের পথ পরিহার না করলে সাত দফা কেন, ৭শ’ দফা দিয়েও কোন লাভ হবে না। দেশের সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই ২০১৯ সালে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাদের সাত দফার বিপরীতে আমাদের এক দফা হলো সংবিধান অনুযায়ী ২০১৯ সালের আগে দেশে কোন জাতীয় নির্বাচন হবে না। আর এই এক দফা মেনেই ২০১৯ সালে শেখ হাসিনার অধীনে তাদের নির্বাচনে আসতে হবে। এর থেকে পিছু হটার কোন সম্ভাবনা নেই। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বিদেশী প্রভুদের এবং স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সহায়তায় ক্ষমতায় আসার স্বপ্ন দেখেছিলেন। তবে তার এ স্বপ্ন কখনও বাস্তবায়িত হবে না। তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিকে সহায়তা এবং পৃষ্ঠপোষকতা দানের জন্য খালেদা জিয়াকে একদিন বিচারের কাঠগড়ায় দঁাঁড়াতে হবে। মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী বলেন, বিএনপির অনেক নেতা খালেদা জিয়ার প্রতি আস্থা হারিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের জন্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। তারা কেন আওয়ামী লীগে আসতে চান, সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া হচ্ছে। ৫ জানুয়ারি দলীয় নেতাকর্মীদের রাজপথে থাকার নির্দেশ দিয়ে ত্রাণমন্ত্রী বলেন, ৫ জানুয়ারি ঢাকা শহর আওয়ামী লীগের দখলে থাকবে। তিনি বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, আমরাও দেখব আপনারা কেমন দিবস পালন করেন। জামায়াতকে কুকুর হিসেবে আখ্যায়িত করে মায়া বলেন, আগে দেখতাম কুকুর মানুষকে কামড় দিত। এখন দেখছি জামায়াত-শিবির মানুষকে কামড় দিচ্ছে। এ ধরনের হিংস্র, বর্বরতার নেতৃত্বে আছেন খালেদা জিয়া। তবে মানুষ কামড়ের মতো প্রতিহিংসা ও বর্বরতার রাজনীতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা যাবে না। খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, তারেক রহমান জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার পরই বিএনপিকে রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করতে দেয়া হবে। খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি যেমন ৭টি শর্ত দিয়েছেন, আমাদেরও একটি শর্ত আছে। আপনার বেয়াদব সন্তান তারেক রহমানের অসংলগ্ন কথাবার্তা বন্ধ করতে হবে এবং যে সকল কটূক্তি করেছে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। তাহলেই শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরে আসবে। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আব্দুল হক সবুজের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, ঢাকা মহানগর দফতর সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মিলন। রাজধানীর মতিঝিলের বলাকা চত্বরে গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষা দিসব উপলক্ষে শ্রমিক লীগ আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, নির্বাচনে অংশ না নেয়ার একটি ভুল সিদ্ধান্তে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া সংসদ থেকে মাইনাস হয়েছেন। এখন আরেকটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণে তিনি রাজনীতি থেকেও মাইনাস হতে পারেন। যদিও মাইনাসের ফর্মুলা আওয়ামী লীগের নয়। তবে মিথ্যাচার ও ভুল সিদ্ধান্তের জন্য দেশের জনগণই তাকে মাইনাস করবে। সাংবাদিক সম্মেলনে খালেদা জিয়ার বক্তব্যে জাতির ভাগ্য উন্নয়নের কোনো কথা নেই। খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনি এখন বলছেন আলোচনা চান। তাহলে কেন তখন আমাদের আহ্বানের পরেও আলোচনায় রাজি হলেন না? কেন জ্বালাও-পোড়াও করে মানুষ হত্যা করলেন? আগে দেশে জনগণের কাছে সেই জবাব দিন। হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ১৯৬৬ সালের ছয় দফায় অনুপ্রাণিত হয়ে সেই আদলে বুধবার জাতির সামনে খালেদা জিয়া সাত দফা উপস্থাপন করেছেন। তবে তার এই অসাংবিধানিক প্রস্তাবের সঙ্গে আওয়ামী লীগ একমত নয়। এই প্রস্তাব নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনাও করতে চাই না। দেশবাসীর সঙ্গে আওয়ামী লীগও খালেদা জিয়ার এই প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। ‘দেশে গণতন্ত্র নেই’ মর্মে সম্প্রতি খালেদা জিয়ার বক্তব্যের সমালোচনা করে হানিফ বলেন, দেশে যদি গণতন্ত্র না থাকে তাহলে আপনি কিভাবে, কিশোরগঞ্জ, কুমিল্লা ও কাঁচপুরসহ বিভিন্ন স্থানে সভা-সমাবেশ নির্বিঘেœ করছেন। কোথাও কোন সমস্যা হচ্ছে না। এর বাইরে যদি কোন গণতন্ত্র থাকে তবে আপনি বলুন, আমরা আপনার কাছ থেকে জানতে ও শিখতে চাই। জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান সিরাজ, শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, মহানগর দক্ষিণের সভাপতি শামসুল আলম বকুল। আওয়ামী লীগের যৌথসভা আজ আওয়ামী লীগের এক যৌথসভা আজ শুক্রবার বিকেল ৪টায় ধানম-ির আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হবে। পাঁচ জানুয়ারি গণতন্ত্রের বিজয় দিবস ও ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসকে সফল করার লক্ষ্যে এ যৌথসভার আয়োজন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে ঢাকা মহানগরের অন্তর্গত দলীয় জাতীয় সংসদ সদস্যগণ এবং যেসব থানায় দলীয় জাতীয় সংসদ সদস্য নেই, সেই সকল থানার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা যৌথসভায় অংশ নেবেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
×