অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বড় ধরনের সূচকের উর্ধগতি দিয়ে নতুন বছর শুরু করল দেশের পুঁজিবাজার। প্রধান বাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ৭৩ ভাগ কোম্পানির দরবৃদ্ধির দিনে প্রায় ২ শতাংশ সার্বিক সূচক বাড়লেও সেই হারে লেনদেন বাড়েনি। আরও দর বাড়বে বিনিয়োগকারীদের এমন প্রত্যাশা বেড়ে যাওয়ায় দিনটিতে ক্রেতা থাকলেও বিক্রেতা ছিল কম। লেনদেন কমার কারণে পেছনে এটিই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন। অন্যদিকে নেটওয়ার্কি অসুবিধার কারণে প্রায় ৩০টি ব্রোকারেজ হাউসের প্রায় ২ ঘণ্টা লেনদেন বন্ধ থাকে। সেটিও কিছুটা লেনদেন কমার পেছনের ভূমিকা রেখেছে।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২২৭ কোটি ৫৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যা আগের দিনের তুলনায় ৩৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা কম। আগের দিন এ বাজারে ২৬৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
জানা গেছে, সকাল সাড়ে ১০টায় লেনদেন শুরু হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ব্রোকার হাউজে সমস্যা দেখা দিতে থাকে। এক পর্যায়ে কোনও কোনও হাউজে লেনদেন একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ১২টা ৫২ মিনিটে সমস্যার সমাধান হলে লেনদেন পুনরায় শুরু হয়। এদিন ডিএসইতে মোট লেনদেনে অংশ নেয় ৩০৮টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২২৬টি, কমেছে ৫৮টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টি শেয়ারের দর।
সকালে সূচকের ইতিবাচক প্রবণতা দিয়ে লেনদেন শুরুর পর ডিএসইএক্স বা প্রধান সূচক ৭৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৯৪১ পয়েন্টে। আর ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ২৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৭৪ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএস৩০ সূচক ৪০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ৮৪৩ পয়েন্টে।
টাকার পরিমাণে ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে থাকা দশ কোম্পানি হচ্ছে - লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট লিমিটেড, এমজেএলবিডি, অগ্নি সিস্টেমস লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মা, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল, গ্রামীণফোন, আইডিএলসি, ডেসকো, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট লিমিটেড এবং অ্যাক্টিভ ফাইন।
দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো- আলহাজ্ব টেক্সটাইল, সোনালি আঁশ, ফার্মা এইড, বেক্সিমকো ফার্মা, আনালিমা ইয়ার্ন, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, জেএমআই সিরিঞ্জ, যমুনা ব্যাংক, কাসেম ড্রাইসেল ও সাফকো স্পিনিং।
দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো- প্রগেসিভ লাইফ, সামাতা লেদার, শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড, প্রাইম লাইফ, কেয়া কসমেটিকস, এবিবি ১ম মিউচ্যুয়াল ফান্ড, আরএন স্পিনিং, ইবিএল এনআরবি ১ম, ইসলামিক ইন্স্যুরেন্স। অপরদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ২১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এদিন সিএসই সার্বিক সূচক ২২৮ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ হাজার ১৬৭ পয়েন্টে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৩৬টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭৩টির, কমেছে ৪৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬টির।
সিএসইর লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, গ্রামীণফোন, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, মবিল যমুনা বিডি, সাইফ পাওয়ার টেক, সামিট এলায়েন্স পোর্ট লিমিটেড, বেক্সিমকো, ন্যাশনাল ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা ও কেয়া কসমেটিকস।
মূলধন বাড়াবে সামিট পাওয়ার ॥ সামিট পাওয়ার লিমিটেডের পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিটি ১০ কোটি ৬৭ লাখ ৯১ হাজার ৯৬১টি শেয়ার ইস্যু করবে। প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা। এর মাধ্যমে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন একশ ৬ কোটি ৭৯ লাখ ১৩ হাজার ৬১০ টাকা বাড়বে।
উল্লেখ, সামিট পাওয়ার তার সহযোগী প্রতিষ্ঠান মাধ্যমে সামিট মেঘনাঘাট পাওয়ার লিমিটেড কিনে নিচ্ছে। এ কোম্পানির মালিক সামিট ইন্ডাস্ট্রিয়াল মার্কেন্টাইল কর্পোরেশন। সামিট মেঘনা ঘাটের শেয়ার সংখ্যা ২০ কোটি ৩৯ লাখ ৭১ হাজার ৫০০টি। শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন ২০৩ কোটি ৯৭ লাখ ১৫ হাজার টাকা। সামিট পাওয়ার ১০ কোটি ৬৭ লাখ ৯১ হাজার ৯৬১টি শেয়ারের বিপরীতে সামিট মেঘনাঘাটের ২০ কোটি ৩৯ লাখ ৭১ হাজার ৫০০টি শেয়ার পাচ্ছে। অর্থাৎ মেঘনাঘাটের ১ দশমিক ৯০ শেয়ারের বিপরীতে সামিট পাওয়ারের একটি শেয়ার ইস্যু করা হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: