ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশ স্বপ্ন দ্যাখে

প্রকাশিত: ০৪:২০, ২ জানুয়ারি ২০১৫

বাংলাদেশ স্বপ্ন দ্যাখে

ভালোয় ভালোয় পার হলো ২০১৪ সাল। নতুন বছরের নতুন সকালে দাঁড়িয়ে স্বপ্ন দ্যাখে বাংলাদেশ। বিদায়ী বছরে অর্জিত সব সূচকে উন্নতি ধরে রাখাই এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ। সেই সঙ্গে বহির্বিশ্বে দেশের মানমর্যাদা এবং ভাবমূর্তিও সমুন্নত রাখা চাই। পেছনের দিকে তাকাতে হয় অতীতকে চিনে নিতে। তা না হলে জঞ্জাল সরিয়ে সামনের দিকে এগুব কিভাবে? সংবিধানসম্মতভাবে গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখার স্বার্থে গত বছরের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত চক্র গোটা দেশকে বার্ন ইউনিটে পাঠাতে চেয়েছিল। যাবতীয় প্রতিক্রিয়াশীলতার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে গণতন্ত্রের সড়কে নিজেকে সংহত করে দেশ যাত্রা করে কাক্সিক্ষত গন্তব্যের দিকে। নির্বাচন বর্জনকারী প্রধান দলটির বোধোদয় ঘটে কিছুটা। তারা হরতাল-অবরোধের মতো আত্মঘাতী চরম কঠোর সিদ্ধান্ত থেকে সাময়িকভাবে বেরিয়ে আসে। তবে তাদের মিত্র জামায়াত তখনই হরতাল দিয়েছে যখন তাদের কোন নেতা একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিশেষ ট্রাইব্যুনালে দ-িত হয়েছেন। এ সব প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে সামনের দিকে। অনেকটা শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকার কারণেই দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা- সচল থেকেছে। দেশের অর্থনীতির এমন শক্তিশালী অবস্থান বিগত চার দশকে এ মাত্রায় পরিলক্ষিত হয়নি। বছরটি যেভাবে শেষ হলো তাতে জনমনে শঙ্কা জাগা অযৌক্তিক নয় যে নতুন বছর ২০১৫ হরতালমুক্ত এবং সন্ত্রাসমুক্ত থাকবে কিনা। বাংলাদেশ ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করছে। সেখানে অন্যায়কে চিরপ্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে বাংলাদেশবিরোধী সেই চেনা অপশক্তি। বিদায়ী বছরের সমাপ্তি এবং নতুন বছরের আগমন ঘটেছে তাদের আরোপিত হরতালের ভেতর দিয়ে। অপরদিকে বিএনপি জোটের মনোভাব জানিয়ে দিচ্ছে তারা হরতালের মতো অর্থনীতি-বিধ্বংসী নেতিবাচক কর্মসূচীর ওপর আগামীতে ভর করতে চলেছে। হরতাল এখন হয়ে উঠেছে সহিংসতারই সমার্থক। সম্প্রতি নোয়াখালীতে এক স্কুলশিক্ষিকার হত্যাকা- এবং ঢাকায় আরেক শিক্ষিকার অগ্নিদগ্ধ হওয়ার পেছনে রয়েছে ওই বিএনপি-জামায়াত। যে রাজনীতি জনগণের কল্যাণের জন্য কাজ করার বদলে মানুষকে মৃত্যু এবং দেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেয়, সেই রাজনীতিকে কোন শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ সমর্থন করতে পারে না। সে কারণেই বিএনপি-জামায়াত আরও গণবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। মঙ্গলবার গণভবনে প্রদত্ত এক বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী ওই দুই শিক্ষিকার মৃত্যুর জন্য বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীদের দায়ী করে বলেছেন, যারা এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করেছে তাদের অবশ্যই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হবে। এ দৃঢ়প্রত্যয় দেশবাসীকে আশ্বস্ত করেছে। মানুষ হরতাল-সন্ত্রাস চায় না। শান্তি ও স্বস্তিপ্রত্যাশী মানুষ আশায় বুক বাঁধে। যে কোন ধরনের অস্থিরতা ও সহিংসতা, তা যে কোন দলের কর্মী দ্বারাই সংঘটিত হোক না কেন, সমাজে গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে যায়।
×