ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রায় ৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

এমএলএল কোম্পানির জালালউদ্দিনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশিত: ০৬:০৪, ১ জানুয়ারি ২০১৫

এমএলএল কোম্পানির জালালউদ্দিনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রায় সাড়ে ৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাসহ মেজর জেনারেল (অব) জালাল উদ্দীন আহমেদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রাজধানীর বনানী থানায় দুদকের উপ-পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এছাড়া অর্পিত সম্পত্তি ব্যক্তির নামে নামজারি করে মোট এক কোটি ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে র‌্যাব সদর দফতরের আইন কর্মকর্তাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুদক। রাজধানীর তেজগাঁও থানায় দুদকের সহকারী পরিচালক আবু বকর সিদ্দীক বাদী হয়ে মামলাটি (মামলা নং-৪১) দায়ের করেন। অপরদিকে ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ গ্রহণের উদ্যোগ নেয়ার অভিযোগে ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক দুই কর্মচারীর বিরুদ্ধে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় দুদকের উপসহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। বুধবার দুদক রাজধানীর ৩টি থানায় পৃথক এ ৩টি মামলা দায়ের করে। দুদক সূত্র জানায়, সাড়ে ৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় অভিযুক্তরা হলেন ধারা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সভাপতি মেজর জেনারেল (অব) জালাল উদ্দীন আহমেদ, সহ-সভাপতি আলিয়া ফাতেমা (জালালের স্ত্রী), সাধারণ সম্পাদক তালহা আহমেদ (জালালের ছেলে) ও যুগ্ম-সম্পাদক রাদিয়া আহমেদ (জালালের মেয়ে)। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, জালাল উদ্দীন আহমেদ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে ২০০৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর অবসর গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি ও তার স্ত্রী আলেয়া ফাতেমা ধারা মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড নামে সমবায় ব্যবসা শুরু করেন। ২০০৫ সালের ১৭ জুলাইয়ে এটি নিবন্ধিত হয় ও রাজধানীর বনানীর ব্লক সি, সড়ক নম্বর-১৭, ইউএই মৈত্রী কমপ্লেক্সের ৪/এফ-২ নম্বর এ্যাপার্টমেন্টে যাত্রা শুরু করে। মেজর জেনারেল (অব) জালাল উদ্দীন আহমেদ গ্রাহকদের আশ্বাস দেন, মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের অনুকূলে এফডিআরের মাধ্যমে টাকা রাখলে কেউ কখনও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। এমন আশ্বাসের ভিত্তিতে প্রতি লাখে দুই হাজার টাকা লাভের আশায় জালাল উদ্দীন আহমেদের কাছে গ্রাহকরা আমানত রাখেন। এভাবে তিনি ১ হাজার ৪৪৯ জন বিনিয়োগকারীর মোট ৫৯ কোটি ৩৯ লাখ ১ হাজার ৪৫৪ টাকা ওই মাল্টিপারপাসের নাম রশিদের মাধ্যমে জমা নেন। কিন্তু উক্ত সোসাইটির নামের ব্যাংক হিসাবে কোন অর্থ জমা না দিয়ে প্রতারণামূলকভাকে তা আত্মসাত করে পরবর্তী সময়ে তিনি যুক্তরাত্রে বসবাসরত ছেলে ও মেয়ের কাছে এ অর্থ পাচার করেন। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরের শেষদিকে সাবেক ওই সেনা কর্মকর্তা ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ৮২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আমলে নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অক্টোবরের শেষদিকে অভিযোগ অনুসন্ধানে ৩ সদস্যের একটি টিম গঠন করে কমিশন। দুদকের অনুসন্ধানে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। অপরদিকে অর্পিত সম্পত্তি ব্যক্তির নামে নামজারি করে আত্মসাতের মামলায় অভিযুক্তরা হলেন র‌্যাব ফোর্সেস সদর দফতরের আইন কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (কোতোয়ালি সার্কেলের সাবেক ভূমি সহকারী কমিশনার) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, ধানম-ি সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কোতোয়ালি সার্কেলের সাবেক সার্ভেয়ার সমর চন্দ্র সূত্রধর, সাবেক ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (অবসরপ্রাপ্ত) মোঃ হুমায়ুন মোল্লা, ঢাকা জেলার ওয়ারী থানার কাপ্তান বাজারের মোহাম্মদ আলী হোসেন, মোঃ মহিউদ্দীন ও জিনাত আরা পারভীন।
×