ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

অস্বস্তি দিয়ে শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত স্বস্তির বছর ॥ জীবনযাত্রার ব্যয় কমেছে,

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ১ জানুয়ারি ২০১৫

অস্বস্তি দিয়ে শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত স্বস্তির বছর ॥ জীবনযাত্রার ব্যয় কমেছে,

কাওসার রহমান ॥ অস্বস্তি দিয়ে শুরু হলেও শেষ পর্যন্ত স্বস্তির বছর পার হলো। অর্থনীতির জন্য ২০১৪ সাল ছিল বেশ শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়ানো এবং স্বস্তির বছর। সারা বছর ছিল না দ্রব্যমূল্যের কোন পাগলা ঘোড়া। বরং এই প্রথম কোন বছরে মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় কমে গেছে। অনেকটা স্থিতিশীল পণ্যমূল্যের কারণে মানুষ স্বস্তির বছর পার করেছে। রাজনৈতিক সহিংসতার কারণে বছরের প্রথম দিকে অর্থনীতি ভঙ্গুর হয়ে পড়লেও শেষ পর্যন্ত বেশ ভালভাবেই ঘুরে দাঁড়ায় অর্থনীতি। মূল সূচকগুলোও ছিল উর্ধমুখী। বছরের শেষ দিকে এসে মূলধন যন্ত্রপাতি ও কাঁচামালের আমদানি বৃদ্ধি গত কয়েক বছরের বিনিয়োগের খরা কাটিয়ে উঠার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সেই সঙ্গে পদ্মা সেতুর মতো ম্যাগা প্রকল্পের কাজ শুরু অর্থনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি ছাড়া আর কোন কালো দাগ নেই অর্থনীতিতে। হরতাল-অবরোধের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালের। বছরের গোড়ার দিকে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল তার প্রথম আঘাত এসেছিল দেশের অর্থনীতির ওপর। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রায় টানা দুই মাসের হরতাল-অবরোধে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল দেশের অর্থনীতি। ওই নির্বাচনে তৎকালীন প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশ না নিলেও, নির্বাচনের পর সরকার দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ফলে দেশে ফিরে আসে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। আর এতে বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে অর্থনীতিও ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। বছর শেষে অর্থনীতির সেই ক্ষত অনেকটা শুকিয়ে এলেও বিনিয়োগ ছাড়া অর্থনৈতিক সূচকগুলো আবার উর্ধমুখী হয়। নির্বাচন-পরবর্তী সময়ে প্রায় গোটা বছর ধরে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ মোটামুটি শান্ত থাকলেও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আস্থা সঙ্কট বিরাজ করছিল। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে বছরের শেষ দিকে এসে সেই আস্থা সঙ্কট কাটতে শুরু করে। গেল বছর দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল সর্বোচ্চ। রেমিটেন্সের প্রবাহও ছিল স্থিতিশীল। রফতানির প্রবৃদ্ধিও বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পায়। আমদানিও ছিল স্থিতিশীল। ফসলের বাম্পার ফলন হয়। ডলারের বিপরীতে টাকার অবস্থান ছিল শক্তিশালী। বছরের প্রথমার্ধে মূল্যস্ফীতি কিছুটা উর্ধমুখী হলেও, বছরের দ্বিতীয়ার্ধে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। ফলে প্রায় সারা বছর ধরেই মানুষের মধ্যে একটি স্বস্তিভাব বিরাজ করে। এক্ষেত্রে সরকারের কৃতিত্ব হচ্ছে শেষ দিকে মূল্যস্ফীতি কমে এলেও, সরকার পুরো বছরই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়। এক্ষেত্রে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও নিয়ামক হিসেবে কাজ করে। মূলত পণ্য সরবরাহ চেইন সঠিকভাবে কাজ করায় চাহিদা অনুযায়ী পণ্য পাওয়া যায়। মাঠ পর্যায় পণ্যের কোন সঙ্কট সৃষ্টি হয়নি। এটিও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। বছরের প্রথম দিকে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি সাত থেকে সাড়ে সাত শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও, বছরের দ্বিতীয়ার্ধে তা সাত শতাংশে নিচে নেমে আসে। এতে সারা বছর ধরে মূল্যস্ফীতিতে একটি স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। তবে এই স্থিতিশীলতার ধারা থেকে বেরিয়ে খুব বেশি নিম্নমুখী হতে পারেনি। পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে নবেম্বরে মূল্যস্ফীতির হার গত ২২ মাসের মধ্যে সাড়ে ছয় শতাংশের নিচে নেমে এলেও গড় মূল্যস্ফীতি এখনও ৭ শতাংশের বেশি। তা সত্ত্বেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় জনজীবনে স্বস্তি বিরাজ করে। সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলোÑ এই প্রথম কোন বছর মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় কমে যাওয়া। অতীতে এমনটি দেখা যায়নি। প্রতি বছরই দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া দাবড়িয়ে বেরিয়েছে দেশের মানুষকে। সেই অবস্থা অনেকটাই অনুপস্থিত ছিল ২০১৪ সালে। কনজুমারস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) এক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সদ্য সমাপ্ত ২০১৪ সালে পণ্যমূল্য ও সেবার সার্ভিসের মূল্য বেড়েছে ছয় দশমিক ৩১ শতাংশ। আর জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ছয় দশমিক ৮২ শতাংশ। অথচ ২০১৩ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছিল ১১ শতাংশ। এ থেকে দেখা যায়, ২০১৪ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় চার দশমিক ১৮ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। সেই সঙ্গে দ্রব্যমূল্যও ছিল অনেকটা স্থিতিশীল। মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে থাকায় সারা বছর দ্রব্যমূল্যও সাধারণ মানুষে ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ছিল। সদ্য সমাপ্ত বছরে অর্থনীতির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক ছিলÑ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের শক্তিশালী অবস্থা। বছরের শেষ দিকে এসে এটি বরং অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ২২ দশমিক ৩৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। ৪৩ বছরের মধ্যে যা সর্বোচ্চ রিজার্ভ। মূলত রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি ও রফতানি আয় বৃদ্ধির কারণেই রিজার্ভের নতুন এ রেকর্ড হয়েছে। গত ৫ বছরে দেশে রিজার্ভ বেড়েছে ৩ গুণ। তারই ধারাবাহিকতায় বছর শেষে তা নতুন উচ্চতায় পৌঁছে রিজার্ভ। ২৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিদেশে বসবাসরত প্রবাসীরা ১৪ দশমিক ৭১ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছে, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ১৩ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের তুলনায় এ বছর রেমিটেন্সের প্রবাহ ১১ দশমিক ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিসেম্বরের শেষ দিন পর্যন্ত এ রেমিটেন্সের প্রবাহ দেড় হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। গেল জুলাই মাসে এ যাবতকালের মধ্যে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছে। রেমিটেন্সের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৯২ দশমিক ৪৭ মিলিয়ন ডলার। গেল বছরে দেশের রফতানি আয় ছিল স্থিতিশীল। জুলাই থেকে নবেম্বর পর্যন্ত এর পরিমাণ ছিল ১২ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ সময়ে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ২৭৩ কোটি ৫৫ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে রফতানি আয়ের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৯৬ কোটি ডলার। একই ক্ষেত্রে গত অর্থবছরে দেশ প্রথমবারের মতো ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের সীমা অতিক্রম করে। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে বিগত ২০১৩-১৪ অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রাজস্ব আদায়ের হার ছিল ১৪ দশমিক ২৪ শতাংশ বেশি। চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৩৮ হাজার ৫ কোটি ৮১ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়। আগের অর্থবছরে একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৩৩ হাজার ২৬৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। তবে গত তিন অর্থবছরের মতো এবারও রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে না পারাটা সরকারের চিন্তারও কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজস্ব আহরণে ঘাটতির কারণে বাড়ছে সরকারের ব্যাংক ঋণের পরিমাণ। যদিও বাজারে ঋণের চাহিদা কম থাকায় দেশের ব্যাংকগুলোতে আমানতের তুলনায় ঋণ বিতরণ হচ্ছে না। ফলে বাড়ছে অলস টাকা। সংঘাতময় বছর পেরিয়ে নির্বাচনের পর রাজনীতিতে ‘স্বস্তি’ এলেও সরকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী (এডিপি) বাস্তবায়নে তার প্রভাব দেখা যায়নি। চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে (জুলাই-নবেম্বর) ২১ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং নির্বাচনের আগে ব্যাপক সংঘাতময় অবস্থার মধ্যেও গত অর্থবছরের ওই পাঁচ মাসে এডিপি বাস্তবায়নের হার ছিল ২০ শতাংশ। তবে এডিপি বাস্তবায়ন কম হলেও সব অংশের চুক্তি সম্পাদন করে দেশের সবচেয়ে বড় অবকাঠামো প্রকল্প পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন শুরু গেল বছরের বিশেষ উল্লেখযোগ্য দিক। শুধু তাই নয়, বছরের শেষ দিকে এসে পদ্মা সেতু প্রকল্পের প্রায় ৯ দশমিক ৯ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়। এতে নতুন বছরে অর্থনীতিতে একটি প্রাণচাঞ্চল্যের ইঙ্গিত দিচ্ছে। তবে অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়ানোতে চলতি অর্থবছরে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংক গবর্নর ড. আতিউর রহমান। বর্তমানে অর্থনীতির যে গতি রয়েছে তাতে চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির হার সাড়ে ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে। বিশ্বব্যাংকের মতে, এবার জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ২ শতাংশ হবে। চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা সরকার ধরেছে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। বিশ্ব ব্যাংক এর চেয়ে কম ধরলেও তা সন্তোষজনক মনে করছে তারা। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৬ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়। এবার তা ৬ দশমিক ২ শতাংশে উন্নীত হবে বলে বিশ্ব ব্যাংকের পূর্বাভাস। অবশ্য বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির বিষয়ে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের আভাস আরেকটু বেশি। এডিবি এ বছর ৬ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জনের সম্ভাবনা দেখছে। দারিদ্র্য বিমোচন এবং মানব উন্নয়নে বাংলাদেশ গেল বছরে বেশ ভাল করেছে। ২০১৪ সালে দারিদ্র্যের হার ২৪ দশমিক ৪৭ শতাংশে নেমে আসে, যা সরকারের একটি বড় অর্জনই নয়, পুরো দেশ ও অর্থনীতির জন্যই মঙ্গলের বার্তা। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশের ৫৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। ২০১০ সালে ছিল ৩১ শতাংশ। জাতিসংঘের সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি) অনুযায়ী, ২০১৫ সালে তা ২৮ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া অন্যান্যের মধ্যে বিদেশে অর্থ পাচার, ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতি ও পুঁজিবাজারের ওঠা-নামা বছরজুড়ে ছিল আলোচনায়। বছরের প্রথম ভাগে দেশ থেকে অর্থ পাচার একটি আলোচিত ঘটনায় পরিণত হয়। সুইস ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের ব্যাংকে বাংলাদেশের নাগরিকদের ২০১৩ সালে তিন হাজার ২৩৬ কোটি টাকা গচ্ছিত রাখার তথ্য প্রকাশ করলে দেশে হৈচৈ পড়ে যায়। এর বাইরে আরও অনেক ব্যাংকে বাংলাদেশের টাকা পাচারকারীদের টাকা রয়েছে বলে তথ্য বেরিয়ে আসে। এর মধ্যে মালয়েশিয়ার সেকেন্ড হোম প্রকল্পে বাংলাদেশ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিনিয়োগকারী। কানাডায় রয়েছে বাংলাদেশ অধ্যুষিত বেগমপাড়া অঞ্চল। এ ছাড়া ব্রিটেন, হংকং ও সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন ব্যাংকেও বাংলাদেশীদের টাকা রয়েছে বলেও তথ্য বেরিয়ে আসে। এদিকে সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক ঋণ কেলেঙ্কারির ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই ২০১৪ সালে এসে ঋণ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের বেসিক ব্যাংক। এ বছর রাষ্ট্রমালিকানাধীন বেসিক ব্যাংকের তিনটি শাখা চার হাজার ২৪৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে। এই ঋণের বড় অংশই দেয়া হয়েছে কোন নিয়মকানুন না মেনে। ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি করেছে বেসিক ব্যাংক। শেষ পর্যন্ত দায়িত্বে অবহেলা ও ঋণ অনিয়মের দায়ে বেসিক ব্যাংকের এমডি ফখরুল ইসলামকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। আর ঋণ কেলেঙ্কারির দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চু। ঋণ কেলেঙ্কারির পাশাপাশি সুড়ঙ্গ কেটে ব্যাংকের ভল্ট থেকে টাকা লুটের ঘটনাও ঘটে গেল বছর। বছরের শুরুতে গোপন সুড়ঙ্গপথে কিশোরগঞ্জে সোনালী ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে অবশ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় কিছু টাকা উদ্ধার হয়। শেয়ারবাজারের উল্লেখযোগ্য অর্জন হচ্ছেÑ স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা ও মালিকানা পৃথকীকরণ (ডিমিউচ ুয়ালাইজেশন)। পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতা আনতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সফলভাবে এই ডিমিউচুয়ালাইজেশনের কাজ সম্পন্ন করে। গত এক বছরে বাজারের উত্থান-পতন বিনিয়োগকারীদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যদিও আগের বছরের তুলনায় বাজার মূলধন, সূচক ও কোম্পানির সংখ্যা অর্থাৎ বাজারের ব্যাপকতা বেড়েছে। তবে বিভিন্ন ইস্যুতে নেতিবাচক প্রভাব বিরাজ করায় বাজারের উত্থান-পতন ঘটেছে। ডিমিউচুয়ালাইজেশনের পর পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের উন্নয়নে নেয়া কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়েছে, কিছু এখনও প্রক্রিয়াধীন। স্টক এক্সচেঞ্জ ও বিএসইসি যেসব উদ্যোগ নিয়েছে তা ভবিষ্যতে সুফল বয়ে আনবে। এ সুফল ভোগ করবেন বিনিয়োগকারীরা- এমনই প্রত্যাশা থাকছে নতুন বছরে।
×