ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বছরের শেষ দিনে সূচকের বড় ধরনের উর্ধগতি

প্রকাশিত: ০৫:৫৫, ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪

বছরের শেষ দিনে সূচকের বড় ধরনের উর্ধগতি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বছরের শেষ কার্র্যদিবসে সূচকের বড় ধরনের উর্ধগতি দিয়ে দেশের পুঁজিবাজারের লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে। সাধারণের সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ার কারণে সব ধরনের সূচকই বেড়েছে। মূলত লোকসান কমিয়ে আনতে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কৌশলে বিনিয়োগ করেছেন। তাদের পোর্টফলিও বা পত্রকোষে লোকসান কমানোর উদ্যোগ হিসেবেই বছরের শেষ দিনে লেনদেনেও অগ্রগতি হয়েছে। বাজার বিশ্লেষকরা বলেছেন, সকালে সূচকের ইতিবাচক প্রবণতা দিয়ে লেনদেন শুরুর পর মঙ্গলবার ডিএসইর আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৫০ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৮৬৪ পয়েন্টে। সারাদিনে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩০৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২২৮টির, কমেছে ৫২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯টি কোম্পানির শেয়ার। সেখানে লেনদেন হয়েছে ২৬৫ কোটি ৪০ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বছরের শেষদিনে পুনর্মূল্যায়নজনিত অনাদায়কৃত ক্ষতি (আনরিয়েলাইজড লস) কমিয়ে আনতে নতুন করে শেয়ার কিনেছেন। পূর্বে বেশি দরে কেনা শেয়ারের দর সমন্বয় করতে এদিন তারা কম দরে শেয়ার কিনে কস্ট প্রাইস বা ক্রয়মূল্য কিছুটা কমিয়ে এনেছেন। এর ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা এক্সপোজার টু ক্যাপিটাল মার্কেট (শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের অবস্থান) কিছুটা ইতিবাচক অবস্থানে নিতে পেরেছেন। এ কারণে এদিন অধিকাংশ শেয়ারের দর বেড়েছে। এ ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাষ্ট্রায়ত্ত মার্চেন্ট ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, ব্যাংক, বীমা, মিউচুয়াল ফান্ড– এসব প্রতিষ্ঠান বছরের শেষ হিসাব কষতে বিনিয়োগ সমন্বয় করেছে। অনেকে নতুন করে শেয়ার কিনে আগের বেশি দরে কেনা শেয়ারের দর সমন্বয় করেছে। ফলে এদিন বাজার কিছুটা উর্ধমুখী হয়েছে। মঙ্গলবার ডিএসইর টপ-২০ তালিকায় থাকা কোম্পানিগুলোর মোট ৯৮ কোটি ৮৪ লাখ ৭৮ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৩৭.২৪ শতাংশ। এদিন ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি শেয়ার লেনদেন হয়েছে এমজেএল বিডির। দিনভর এ কোম্পানির ৮ লাখ ৫৮ হাজার ১৭৯টি শেয়ার ১০ কোটি ৭৬ লাখ ৪৬ হাজার টাকায় লেনদেন হয়েছে, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪.০৫ শতাংশ। এছাড়া বেক্সিমকো ফার্মার ১০ কোটি ৬৫ লাখ, গ্রামীণফোনের ৯ কোটি ১৬ লাখ, লাফার্জ সুরমা সিমেন্টের ৮ কোটি ১১ লাখ, আইডিএলসির ৫ কোটি ১৪ লাখ, ডেসকোর ৪ কোটি ৯৬ লাখ, স্কয়ার ফার্মার ৪ কোটি ৮৭ লাখ, সামিট এ্যালায়েন্স পোর্টের ৪ কোটি ৩৮ লাখ, এসিআই লিমিটেডের ৪ কোটি ৩২ লাখ এবং এ্যাকটিভ ফাইনের ৪ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ডিএসইর দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলোÑ আলহাজ টেক্সটাইল, দেশ গার্মেন্টস, প্রাইম লাইফ, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, বার্জার পেইন্টস, এক্সিম ব্যাংক ১ম মিউচুয়াল ফান্ড, আইএফএলএ১ম, ফারইস্ট নিটিং, ৮ম আইসিবি ও সাউথ ইস্ট ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ড। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলোÑ সাফকো স্পিনিং, নদার্ন জুটস, আজিজ পাইপস, শ্যামপুর সুগার, মাইডাস ফাইনান্স, শাহজিবাজার পাওয়ার, ডেফোডিল কম্পিউটার, ফু-ওয়াং ফুড, জেমিনি সী ফুড ও ন্যাশনাল পলিমার। দিনশেষে দেশের অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও সব ধরনের সূচক ও লেনদেন বেড়েছে। সেখানকার (সিএসই) সাধারণ মূল্যসূচক ৮৫ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৯০৬৭ পয়েন্টে। দিনভর লেনদেন হওয়া ২৩৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫৯টির, কমেছে ৫৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টি কোম্পানির শেয়ার দর। সেখানে লেনদেন হয়েছে ৬২ কোটি ১৬ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের দিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১৫ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। সেই হিসাবে মঙ্গলবার সিএসইতে লেনদেন বেড়েছে ৪৬ কোটি ৯৬ লাখ টাকা বা ৩০৮ শতাংশ।
×