ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের জয়

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪

ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের জয়

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ক্রাইস্টচার্চে ‘বক্সিং ডে’ টেস্টে সফরকারী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। প্রথম ইনিংসে স্বাগতিক কিউইদের ৪৪১ রানের জবাবে সফরকারী শ্রীলঙ্কা ১৩৮Ñএ গুটিয়ে ফলোঅনে পড়ার পরই মূলত ম্যাচের ভাগ্য তৈরি হয়ে যায়। মাঝে লঙ্কান তরুণ দিমুথ করুনারতেœর সেঞ্চুরিতে সেটি কেবল প্রলম্বিত হয়। তার ১৫২ রানের সৌজন্যে দ্বিতীয় ইনিংসে ৪০৭ রান করে শ্রীলঙ্কা। জয়ের জন্য ১০৫ রানের লক্ষ্যে পৌঁছাতে কিউদের মাত্র দুটি উইকেট খোয়াতে হয়। প্রথম ইনিংসে ১৯৫ রানের ম্যারাথন ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককুলাম। এ জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে ১-০তে এগিয়ে গেল নিউজিল্যান্ড। নতুন বছর ২০১৫ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে ওয়েলিংটনে হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। টিম সাউদি আর ট্রেন্ট বোল্টই ক্রাইস্টচার্চে নিউজিল্যান্ডের জয়ের মূল কারিগর। শ্রীলঙ্কার ২০ উইকেটের মধ্যে দুজনে মিলে নিয়েছেন ১৩টি। সেই সঙ্গে প্রথম ইনিংসে ম্যাককুলামের ১৯৫ রানের ঝকঝকে ইনিংস। ৫ উইকেটে ২৯৩ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করা শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় আগের দিনের সংগ্রহের সঙ্গে ১১৪ রান যোগ করে। এ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ৬৬ রানে আউট হন। তবে শেষের দিকে শামিন্দা এরাঙ্গার ৪৫ রান করলে নিউজিল্যান্ডের সামনে শতাধিক রানের লক্ষ্যটা দাঁড় করাতে সক্ষম হয় তারা। মাত্র ১০৫ রানের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে দুটি উইকেটই খরচ করতে হয়েছে তাদের। দ্বিতীয় ইনিংসে কেন উইলিয়ামসন ও রস টেইলরের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই নিউজিল্যান্ডের জয় নিশ্চিত করে। উইলিয়াামসন ৩১ ও টেইলর ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন। শ্রীলঙ্কার হয়ে দুটি উইকেট তুলে নেন থারিন্দু কুশল ও শামিন্দা এরাঙ্গা। সিরিজে ১-০তে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বছরটা দুর্দান্তভাবে শেষ করে নিউজিল্যান্ড। এ নিয়ে চলতি ২০১৪ সালে পাঁচ টেস্ট জেতে কিউইরা। এক বছরে নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি জয়ের নতুন নজির এটি। প্রতিক্রিয়ায় ম্যাচের নায়ক ম্যাককুলাম বলেন ‘জানতাম আমরা কি করতে পারি। মাঠে নিজেদের সামর্থ্য প্রয়োগে আত্মবিশ্বাসের কমতি ছিল না। অনেকে হয়ত আমাদের নিয়ে সেভাবে ভাবেনি। কিন্তু বছর শেষে প্রমাণ করেছি, সবকিছুই সম্ভব। ২০১৪ সালটা সত্যি দারুণ ছিল। এ ধারা অব্যাহত রাখতে চাই।’ এ বছর ৯ টেস্ট খেলে ৫টিতেই জয় তুলে নেয় নিউজিল্যান্ড, হার ২ ও ড্র ২। এর আগে ৪টি করে টেস্ট জিতেছিল কিউইরাÑ ১৯৮৫, ১৯৮৮, ১৯৯৯, ২০০২ ও ২০০৮ সালে। কিউইদের দারুণ সাফল্যে এবার ব্যাট হাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন ম্যাককুলাম। অধিনায়কের ১৩৪ বলে ১৯৫ রানের ম্যারথন ইনিংসের ওপর ভর করেই ৭ উইকেটে ৪২৯ রান তুলে শক্ত ভিত পায় স্বাগতিকরা। ম্যাককুলামের ইনিংসটি ১১টি বিশাল ছক্কা ও ১৮টি চার দিয়ে সাজানো! চলতি বছর ব্যাট হাতে তিনি ১ ট্রিপল সেঞ্চুরি, ২ ডাবল সেঞ্চুরি ও এই ১৯৫ নিয়ে ক্যারিয়ারের সেরা পাঁচ ইনিংসের চারটিই খেললেন ২০১৪ সালে! দীর্ঘ দশ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো এক ক্যালেন্ডার ইয়ারে ১ হাজার বা তার বেশি রান (১১৬৪) তুলে নেন ড্যাশিং এই উইলোবাজ। লঙ্কানদের হতাশার মাঝে প্রাপ্তি দিমুথ করুনারতেœর সেঞ্চুরি। দুরন্ত ব্যাটিংশৈলিতে ক্যারিয়ারসেরা ১৫২ রান তুলে নিয়েছেন লঙ্কান ওপেনার। ১৫২ রানের চমৎকার ইনিংসটি ১৭ চার দিয়ে সাজানো। এর মধ্য দিয়ে এক রকম লঙ্কান ইতিহাসেই জায়গা করে নিয়েছেন ২৬ বছর বয়সী কলম্বো প্রতিভা। এশিয়া মহাদেশের বাইরে শ্রীলঙ্কার হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংসের মালিক এখন তিনিই। সাবেক তারকা সনাথ জয়সুরিয়া ও বর্তমান কোচ মারভান আতাপাত্তুর পর তৃতীয় লঙ্কান ওপেনার হিসেবে নিউজিলান্ডে সেঞ্চুরির অনন্য নজির স্থাপন করেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। চৌদ্দতম টেস্টে পাওয়া জীবনের প্রথম সেঞ্চুরিকে দেড় শ’তে রূপ দেন করুনারতেœ। তবে সতীর্থদের ব্যর্থতায় বছরের শেষ ম্যাচে শেষ পর্যন্ত হারই দেখতে হয় তাকে!
×