ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

এবারের দলটি ২০০৭-এর চেয়ে সমৃদ্ধ

প্রকাশিত: ০৫:৪২, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪

এবারের দলটি ২০০৭-এর চেয়ে সমৃদ্ধ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আগামী সপ্তাহে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দল ঘোষণা করবেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ। ২০০৭ সালে অভিজ্ঞ উইকেটরক্ষক খালেদ মাসুদ পাইলটের পরিবর্তে তরুণ উদীয়মান মুশফিকুর রহীমকে দলে ভিড়িয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন। পরবর্তীতে তাঁর এ সিদ্ধান্তটা যথার্থতা প্রমাণ হয়েছিল। তবে এবার দল ঘোষণার ক্ষেত্রে তেমন কোন চ্যালেঞ্জ নেই, কারণ আগের তুলনায় অনেকটাই থিতু হয়েছে দল। ২০০৭ বিশ্বকাপে দল ঘোষণার সময় যতটা কঠিন ছিল এবার তেমন নেই বলে দাবি ফারুকের। কারণ আগের চেয়ে অনেক সমৃদ্ধ দলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। তবে এবার দলকে নিয়ে আগের চেয়ে অনেক বেশি প্রত্যাশা ঘিরে আছে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে। এবার বিশ্বকাপ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে যৌথভাবে আয়োজিত হবে। জিম্বাবুইয়েকে বছরের শেষে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ ৫-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছে। আর বিশ্বকাপের আগে সর্বশেষ এ সিরিজ জয়টা দারুণ উপজীব্য হিসেবে প্রেরণার কারণ হবে। জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা হার দেখা বাংলাদেশ দল আবার জয়ের ধারায় দারুণভাবে ফেরার পর প্রত্যাশার পারদস্তম্ভটাও আগের চেয়ে ওপরে উঠেছে। ২০০৭ সালে দল ঘোষণার আগে অনেক বিনিদ্ররজনী কাটিয়েছেন ফারুক। কিন্তু এবার দলে ধারাবাহিক পারফর্মারের অভাব না থাকায় দল ঘোষণাটা অনেকখানিই সহজতর কাজ তাঁর জন্য। টানা ফর্মহীনতা থেকে ফিরেছেন তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। আর ধারাবাহিকভাবেই নিজেদের নৈপুণ্যে উদ্ভাসিত মুশফিক, সাকিব আল হাসান ও মাশরাফি। তাই নিশ্চিতভাবেই এ কয়েকজন ক্রিকেটার স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিশ্বকাপের চূড়ান্ত দলে ঠাঁই পেতে যাচ্ছেন কোন ধরনের ইনজুরি সমস্যা না থাকলে। মার্শাল আইয়ুব, লিটন কুমার দাস ও মোহাম্মদ শহীদদের মতো বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার আছেন দলে ঠাঁই করে নেয়ার মতো। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনভিজ্ঞতা এবং এবার বিশ্বকাপ মঞ্চের পরিবেশ ও উইকেটের পরিস্থিতি বিবেচনায় হয় তো শেষ পর্যন্ত তাঁরা জায়গা করে নিতে ব্যর্থ হবেন। এছাড়া ওয়ানডেতে দেশের হয়ে সর্বাধিক উইকেটশিকারি অভিজ্ঞ আব্দুর রাজ্জাক গত ১২ মাসে ফর্মহীনতায় ভুগেছেন এবং সম্প্রতি তিনি ইনজুরির কারণে ফিটনেস সমস্যায়ও আছেন। তাই তাঁকে বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ রাখা হলেও সেটা নিয়ে তেমন আশ্চর্য হবেন না কেউ। এ বিষয়ে ফারুক বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সবাইকে কোন চমক উপহার দেয়ার চেয়ে বরং হিসেব-নিকেশ করে কিছু ঝুঁকিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারি। এ কারণে আমি খেলোয়াড়দের পারফর্মেন্স এবং প্রত্যাশার চাপের মুখেও স্বাভাবিক থাকতে সক্ষমদের নিয়েই ভাবব। আমি সবসময়ই নির্ভুল হতে পারি না। কিন্তু কিছু যুক্তি অবশ্যই দল গঠনের ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারি। দুটি সম্পূর্ণই ভিন্ন পরিস্থিতি। সে সময় আমাদের হাতে সীমিত বিকল্প কিছু ছিল। তখন মুশফিক একেবারেই আনকোরা, তামিমও নতুন এবং সাকিব সবেমাত্র ৬ মাস আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কাটিয়েছিল। এবার তাঁরা সবাই অভিজ্ঞ এবং যথেষ্ট পরিণত খেলোয়াড় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।’ আগের যে কোন বারের চেয়ে দলকে নিয়ে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির চাপটা ছাড়া ফারুক বেশ ফুরফুরে অবস্থাতেই আছেন এবার। হয় তো আগের মতো গণমাধ্যমগুলো সমালোচনায় পড়তে হবে না দল ঘোষণার পর। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেও এখন এ বিষয়ে অভিজ্ঞ হয়ে গেছি। কিন্তু পরিষ্কারভাবে সম্মানের সঙ্গেই বলছি ঘোষিত দল নিয়ে গণমাধ্যমগুলোর এত পর্যালোচনার কোন কারণ নেই। কারণ আমাদের অনেক কিছু বিবেচনা করে, অনেক বিষয় পর্যবেক্ষণ করে দল নির্বাচন করতে হয়। তাঁদের সেটা প্রয়োজন নেই।’
×