ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

এশিয়ার প্রথম পানি জাদুঘর উদ্বোধন হলো কলাপাড়ায়

প্রকাশিত: ০৫:২৭, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪

এশিয়ার প্রথম পানি জাদুঘর উদ্বোধন হলো কলাপাড়ায়

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া, ২৯ ডিসেম্বর ॥ পটুয়াখালীর কলাপাড়া এখন ইতিহাসের অংশ হয়ে গেল। এশিয়া মহাদেশে প্রথমবারের মতো ‘পানি জাদুঘরের’ উদ্বোধন করা হয়েছে। উপজেলার সবজির ভান্ডারখ্যাত নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারায় কুয়াকাটাগামী মহাসড়কের পাশে এ জাদুঘরের আনুষ্ঠানিক অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টায় জাদুঘরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে এ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির, কলাপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব তালুকদার, নীলগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক খান, বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা আভাসের নির্বাহী পরিচালন রহিমা সুলতানা কাজল, জনপ্রতিনিধি, উন্নয়নকর্মীসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। ব্যতিক্রমধর্মী এ জাদুঘরটি উদ্বোধনের পর থেকে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার দর্শনার্থীর ভিড়ে গোটা এলাকা মুখরিত হয়ে ওঠে। নদী ও পানিসম্পদ রক্ষায় সরকার ও নীতিনির্ধারকদের আরও উদ্যোগী করাও, মানুষকে সচেতন করা এবং নদী ও পানিসম্পদ রক্ষার আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে “পানি জাদুঘরের” প্রতিষ্ঠা করা হয়। নদীমাতৃক বাংলাদেশের ইতিহাস- ঐতিহ্যের প্রধান ধারক নদী ও পানিসম্পদ। মনোরম লোকেশনে জাদুঘরটির সামনে স্থান পেয়েছে নদীপথে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ দেয়ায় পানির প্রবাহ থমকে পরিণত হওয়া বালুরচরের দৃশ্য। যেখানে শোভা পাচ্ছে নদীতে নৌকা চলাচলের পথ স্থায়ীভাবে রুদ্ধ হয়ে যাওয়ার দৃশ্যপট। বিশুদ্ধ পানি ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে জাদুঘরের মূল দরজায়। জাদুঘরে রাখা হয়েছে দেশের প্রধান মেঘনা, হালদা, গড়াই, বুড়িগঙ্গা, পায়রা, যমুনা, পদ্মা, তিস্তা, কীর্তনখোলা, আন্ধারমানিক নদী থেকে সংগৃহীত পানির নমুনা। নদীপথে চলা নৌকা। নদীর পানি ব্যবহারের দৃশ্যপট। নদীকেন্দ্রিক জীবন-জীবিকার বিভিন্ন উপকরণ- মাছ ধরার চাঁই, বিভিন্ন ধরনের জাল, ঝুড়ি, খাড়ই, কাঠের সামগ্রি শোভা পাচ্ছে। উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রফেসর ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘নদী মরে গেলে বাংলাদেশ মরে যাবে। কারণ পানি ও নদীর জন্যই বেঁচে আছে বাংলাদেশ। অথচ মানুষই এই নদীগুলোকে মেরে ফেলছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘পানি জাদুঘরে মূলত এই বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে। নদীর কথা, পানির কথাকে উপজীব্য করে এই পানি জাদুঘর। এই জাদুঘর মানুষকে, সরকারকে, নতুন প্রজন্মকে সচেতন করবে।’ ব্যতিক্রমধর্মী ‘পানি জাদুঘরটির’ উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে নীলগঞ্জের কৃষক-কৃষাণীসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরাজ করে উৎসবমুখর পরিবেশ। পাশাপাশি উপমহাদেশে প্রথম জাদুঘরটি কলাপাড়ায় প্রতিষ্ঠার জন্য এখানকার কৃষকমৈত্রী, গণগবেষণা দলের নেতৃবৃন্দ উদ্যোক্তা সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান।
×