ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

দেশজুড়ে কনকনে ঠাণ্ডা শৈত্যপ্রবাহ আরও দুদিন থাকতে পারে

প্রকাশিত: ০৫:১২, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪

দেশজুড়ে কনকনে ঠাণ্ডা শৈত্যপ্রবাহ আরও দুদিন থাকতে পারে

স্টাফ রিপোর্টার॥ সারাদেশের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, এ অবস্থা আরও দুদিন বিরাজ করতে পারে। তবে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের পর তাপমাত্রা কিছুটা বাড়তে পারে। জানুয়ারির ৩ থেকে ৪ তারিখের মধ্যে আবারও বড় ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষজ্ঞ আব্দুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, শীতকালে ঠা-ার প্রকোপ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। শৈত্যপ্রবাহের কারণে কখনও তা বেশি মাত্রায় রূপ নেয়। তিনি বলেন, আগামীকালের মধ্যে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে যেতে পারে। ইতোমধ্যে দেশে দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। ঢাকাতেও সোমবার তাপমাত্রা সামান্য বেড়েছে। তবে তিনি বলেন, দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহের কারণে তাপমাত্রা কিছুটা স্থিতিশীল থাকার কারণে শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন। এদিকে সোমবার সারাদেশে অব্যাহত শৈত্যপ্রবাহের কারণে শীতের তীব্র অনুভূতি ছিল। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে টাঙ্গাইল, রাজশাহী, পাবনা, যশোর, কুষ্টিয়া, সৈয়দপুর এবং শ্রীমঙ্গল অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। এসব অঞ্চলের ওপর দিয়ে আরও দু’একদিন এ অবস্থা চলতে পারে। তবে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। তারা জানান, আগামী তিনদিনের মধ্যে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে হালকা থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া সুস্পষ্ট লঘুচাপটি দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের অদূরে শ্রীলঙ্কার উপকূলে অবস্থান করছে। উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এদিকে আবহাওয়া অধিদফতরের রেকর্ডে সোমবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় ৭.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। ঢাকার তাপমাত্রাও অপরিবর্তিত অবস্থায় রয়েছে। অর্থাৎ ১২.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। এ রেকর্ডে দেখা গেছে ময়মনসিংহের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রয়েছে ১১.৬, টাঙ্গাইলে ৯.৫, ফরিদপুরে ১১, মাদারীপুরে ১০.৪, চট্টগ্রামে ১৫.২, সন্দ্বীপে ১৩.৫ সীতাকু-ে ১১, রাঙ্গামাটিতে ১৪, কুমিল্লায় ১০.২ চাঁদপুরে ১৩.১, মাইজদীকোটে ১২.৮, ফেনীতে ১১, হাতিয়ায় ১১.৮, কক্সবাজারে ১৬.৫, কুতুবদিয়ায় ১৫.৮, টেকনাফে ১৪.৮, সিলেটে ১২.৮, শ্রীমঙ্গলে ৯, রাজশাহীতে ৮.৮, ঈশ্বরদীতে ৮.৫, বগুড়ায় ১০.৫, রংপুরে ১১, দিনাজপুরে ১০, সৈয়দপুরে ১০, খুলনায় ১১.৯, মংলায় ১২.৮, সাতক্ষীরায় ১১, যশোরে ৯.২, বরিশালে ১১.৩, পটুয়াখালীতে ১১.৯, খেপুপাড়ায় ১২.৮ এবং ভোলাতে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এদিকে চুয়াডাঙ্গা থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, গত রবিবারের পর সোমবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্র বিরাজ করছে চুয়াডাঙ্গায়। জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭.৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস; যা রবিবারের চেয়ে দশমিক ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস কম। জেলায় গত ১০দিন ধরে শীতের মাত্রা বেড়েই চলেছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ থেকে ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। সোমবার সকাল ১০টার পর সূর্যের দেখা মিললেও তীব্র হিমেল হাওয়ায় চুয়াডাঙ্গার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এতে বেশি সমস্যায় পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ, শিশু ও বৃদ্ধরা। একদিকে হিমেল হাওয়া অন্যদিকে কুয়াশাচ্ছন্ন থাকায় মানুষজন ঘর হতে বের হতে পারছেন না। খড়কুটো যোগাড় করে আগুন জ্বেলে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। খেটেখাওয়া মানুষ পড়েছে চরম বিপাকে। তারা কাজ করতে বেরুতে পারছে না। দামুড়হুদা থেকে সংবাদদাতা জানান দামুড়হুদা সহ চুয়াডাঙ্গা জেলার পার্শ্ববর্তী এলাকার ওপর দিয়ে কয়েকদিন ধরে বয়ে যাওয়া মৃদু শৈত্যপ্রবাহ মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। তীব্র শীতে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। জরুরী কাজ না থাকলে সন্ধ্যার পর যেমন কেউ রাস্তায় বের হচ্ছেন না। সকালেও সূর্যের তাপ না বাড়া পর্যন্ত রাস্তায় ভিড় বাড়ছে না। বিভিন্ন ব্যক্তি সংগঠনের উদ্যোগে দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে। শীতজনিত কারণে চুয়াডাঙ্গা জীবননগরে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। তীব্র শীতের কারণে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা হাসপাতালে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
×