ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

আশঙ্কাজনক আরও তিন, আহত ৯;###;তদন্ত কমিটি গঠন- তিনদিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে;###;চার ঘণ্টা পর বিকেল পাঁচটায় ঢাকা-না’গঞ্জ রুটে ফের ট্রেন চলাচল শুরু

কমলাপুরে ট্রেনে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কা ॥ নারীসহ হত ৬

প্রকাশিত: ০৫:০৫, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৪

কমলাপুরে ট্রেনে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কা ॥ নারীসহ হত ৬

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শনির আছর পড়েছে রেলের ওপর। গত সপ্তাহে পর পর দুটো দুর্ঘটনার রেশ না কাটতেই, সোমবার দুপুরে রাজধানীর কমলাপুরে ইনল্যান্ড কন্টেনার ডিপোর পাশে ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে একটি ট্রেন। নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুর স্টেশনমুখী একটি ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা মেরে দুর্ঘটনা ঘটায় কভার্ডভ্যান। এতে ঘটনাস্থলেই ২ জন, পরে হাসপাতালে আরও ৪ জনসহ মোট ৬ জন নিহত হন। আহত হন আরও ৯ জন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা চলছে। তাদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। দুর্ঘটনার পর ঢাকা- নারায়ণগঞ্জ রুটে রেল চলাচল প্রায় চারঘণ্টা বন্ধ থাকার পর বিকেল পাঁচটায় ফের চালু হয়। এ ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার খরচ রেল মন্ত্রণালয় বহন করবে বলে মন্ত্রী মুজিবুল হক জানান। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে দেখতে রেলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা নাজমুল হাসানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে। হতভাগ্য ৩ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- নাইম ইসলাম (১৬), মুজিবুর রহমান (৫০) ও আলমগীর হোসেন (৪৫)। বাকি তিনজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। নিহত তিনজনের মধ্যে আনুমানিক ২৫ বছর বয়সী এক নারীও আছেন। নিহত নাইমের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জে, মাদ্রাসার নবম শ্রেণীর ছাত্র। তার বাবার নাম ইউনুস আলী। অন্যজন হলেন মুজিবুর রহমান। তার স্ত্রী সখিনা বেগম জানান, তারা মিরপুর শিয়ালবাড়ি ৭ নম্বর রোডে থাকেন। ভোরে কাজে নারায়ণগঞ্জে গিয়েছিলেন মুজিবুর। ফেরার পথে তিনি দুর্ঘটনায় পড়েন। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক মোজাম্মেল হক জানান, দুর্ঘটনার পর ১১ জনকে জখম অবস্থায় ভর্তি করা হয়। এরা হলেন-আনসার সদস্য মিজানুর রহমান (২৫), বাবুল হোসেন (৪৫), নাসিরউদ্দিন (৩০), বেল্লাল হোসেন (২৮), দিলদার আলী (৪০), মোস্তফা প্রধান (২৫), জাবের আলী (৪৫), হারুন অর রশীদ (৪২), মোঃ কালাম (৩০), মোঃ সুমন (২৮) ও জিন্নাহ (৩০), একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ দুঘটনা সম্পর্কে রেল পুলিশের ডিআইজি মল্লিক ফখরুল ইসলাম তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে এসে জানান, সোমবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা একটি ট্রেন কমলাপুর স্টেশনে ঢোকার মুখে কভার্ডভ্যানটি সামনে পড়লে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেন, লরির চালক হয় নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিল নয় তার গাফিলতি ছিল। আসলে এ্যাক্সিডেন্ট ইজ এ্যাক্সিডেন্ট। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করার কথা জানিয়েছেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ট্রেন দুপুর ১টায় আইসিডি টার্মিনালের প্রবেশপথে এনএস সার্ভিস লিমিটেডের একটি কভার্ডভ্যানকে (ঢাকা মেট্রো-১১-৮৮৫০) ধাক্কা দিলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে রেলের লোকজন দাবি করেছেন, কভার্ডভ্যানটিই ইঞ্জিনের পেছনের বগিতে আঘাত হানে। কভার্ডভ্যানের প্রচ- ধাক্কায় ইঞ্জিনের পেছনের বগিটি লাইনচ্যুত হয়। এতে দুমড়েমুচড়ে যায় বগিটি। দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে ছুটে যায় এবং উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার আনিসুর রহমান বলেন, উদ্বারকাজ চলছে। বিকেলের মধ্যেই রেললাইন চালু সম্ভব হবে আশা করা হচ্ছে। এক যাত্রী জানান, দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনটি দুপুর ১টায় নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুরে আসছিল। ট্রেনটি শানটিং গেট দিয়ে টার্মিনালে প্রবেশের সময় বিপরীত দিকে আসা এনএস কার্গো কন্টেনার সিগনাল অমান্য করে ওই গেটে ঢুকে পড়ে। রেলের অতিরিক্ত মহাপরিচালক আমজাদ হোসেন জানান, ট্রেনটি তার স্বাভাবিক গতিতেই স্টেশনে ঢুকছিল। কিন্তু কভার্ডভ্যানটি ট্রেনটির ইঞ্জিনের পরের বগির মাঝখানে আঘাত হানে। এতে বগিটি উল্টে যায়। ট্রেনটি চলমান থাকায় তা প্রায় ৭৫ ফুট সামনের দিকে টেনে নিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হরতাল থাকার কারণে নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা ট্রেনটিতে প্রচুর যাত্রী ছিল। সেই সঙ্গে ইঞ্জিনের চারপাশেও ছিল প্রচুর যাত্রী। দুর্ঘটনার পর থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা জানা যায়, ওই ট্রেনেই নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া থেকে ঢাকা আসছিলেন রিকশাচালক কাশেম। তিনি ছিলেন ইঞ্জিনের পেছনে ছাদে। জানান, ট্রেনটি যখন স্টেশনের আগে কনটেনার ডিপোতে ঢোকে লরিটি তখন পূর্ব থেকে পশ্চিমদিকে যাচ্ছিল। গতিও খুব বেশি ছিল না। কিন্তু ট্রেন দেখেও চালক লরি না থামিয়ে এগিয়ে গেলে ইঞ্জিনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় এবং লরিটি ঘুরে গিয়ে ইঞ্জিনের পেছনের বগিতে সজোরে আঘাত করে। ওই অবস্থায় লরিটি প্রায় ৫০ গজ ছেঁচড়ে নিয়ে ট্রেনটি থেমে যায়। এ সময় ট্রেনের ইঞ্জিনের পেছনে থাকা বগি ও ছাদের আরোহীরাও আহত হন। ডিপোর ভেতরে দাঁড়িয়ে পুরো ঘটনাটি দেখেন মিজান নামের আরেকজন। সেখানকার আনসার সদস্যরা ট্রেন দেখে লরির চালককে থামার সংকেত দিয়েছিলেন। কিন্তু চালক না থামিয়ে ট্রেনের লাইন পার হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এরপর চোখের পলকে দুর্ঘটনা ঘটে যায়। ইঞ্জিনের সঙ্গে সংঘর্ষের পর লরিটি ছিটকে এসে ধাক্কা দিলে পেছনের বগিটি কাত হয়ে লাইনে পড়ে যায়। ওই অবস্থায় ট্রেন আরও এগিয়ে যাওয়ায় লরির চেসিস পুরো ভেঙেচুড়ে যায় এবং ট্রেনের বগির একপাশের দেয়াল ভেঙ্গে দুমড়ে যায়। এ্যাক্সিডেন্ট ইজ এ্যাক্সিডেন্ট ॥ এ সংঘর্ষের ঘটনাকে অনাকাক্সিক্ষত ও দুঃখজনক উল্লেখ করে রেলপথমন্ত্রী মুজিবুল হক বলেছেন ‘এ্যাক্সিডেন্ট ইজ এ্যাক্সিডেন্ট’। তিনি ওই ঘটনায় কভার্ডভ্যান চালকের অসতর্কতাকেই দায়ী করেন। দুপুরে কমলাপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রেলপথমন্ত্রী। এ সময় তিনি আরও বলেন, কভার্ডভ্যান ড্রাইভারের গাফলতি ছিল। ড্রাইভারের অসতর্কতার কারণেই কভার্ডভ্যানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমাদের ট্রেনকে ধাক্কা দিয়েছে। এ ধরনের ঘটনা অনাকাক্সিক্ষত, দুঃখজনক ও মর্মান্তিক, তবে এ্যাক্সিডেন্ট ইজ এ্যাক্সিডেন্ট। যারা হাসপাতালে আহত অবস্থায় আছে আমরা তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করব। ঘটনা সংঘটনের স্থানটি কমলাপুর রেলস্টেশনের এলাকার মধ্যে অবস্থিত উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, জায়গাটি রেল স্টেশনের ভেতরেই। তাই এখানে কোন রেলক্রসিং নেই। কখনও রেল ক্রসিং ছিলও না। রেলওয়ে বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা নাজমুল হাসানকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তিনদিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর সোয়া একটার দিকে কমলাপুর আইসিডি থেকে এনএস কার্গো সার্ভিসের একটি কভার্ডভ্যান বের হচ্ছিল। এ সময় নারায়ণগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী একটি ট্রেন স্টেশনে প্রবেশ করলে ট্রেন ও কভার্ডভ্যানটির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে। আইসিডির ভেতর থেকে কভার্ডভ্যান বের হওয়ার সময় কোন সিগন্যাল ছিল না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিআইজি ফখরুল ইসলাম মল্লিক বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। ট্রেনটি সরিয়ে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। ঢাকা রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ বলেন, ‘দুর্ঘটনা কবলিত ট্রেনটি নারায়ণগঞ্জ থেকে কমলাপুরে ফিরছিল। টিটিপাড়া রেলক্রসিং মোড় হয়ে স্টেশনে ফেরার সময় চলন্ত অবস্থায় একটি কভার্ডভ্যান ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ট্রেনের দুই যাত্রী নিহত হন। হাসপাতালে মারা গেছেন আরও দুজন। আহত অন্তত ৯ থেকে ১০ জনকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আহতদের উদ্ধার করে অনেককে স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ জন্য আহতদের সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। সর্বশেষ বিকেল পাঁচটায় তিনি জানান, কভার্ড ভ্যানের চালক পলাতক। তাকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে। মূলত তার খামখেয়ালিপনার জন্যই এ দুর্ঘটনা। ঢাকা মেডিক্যালে আহাজারি, মাতম ॥ এদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় হতাহতদের আর্তচিৎকার। তাদের স্বজনের আহাজারি। এ সময় জানা যায়, নিহত মুজিবুর রহমান ব্যানারের বাঁশ (কঞ্চি) সাপ্লাই দিতেন। তার বাবার নাম মরহুম আব্দুল হক। গ্রামের বাড়ি বিক্রমপুর-মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজংহ থানা এলাকায়। তিনি মিরপুর থানাধীন শিয়ালবাড়ি এলাকার ৭ নম্বর রোডস্থ ১৪ নম্বর বাড়িতে সপরিবারে থাকেন। ২ মেয়ে ১ ছেলের জনক তিনি। বড় মেয়ে অন্তরা (১৮) মিরপুর বাংলা কলেজে অনার্স ভর্তির জন্য চেষ্টা করছেন। ছেলে শাহজাহান (১২) স্থানীয় একটি স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র। ছোট মেয়ে সুমাইয়া (৬) একটি মাদ্রাসায় পড়াশুনা করেন। খবর পেয়ে সখিনা বেগম সোমবার বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে তার স্বামী মুজিবুর রহমানের লাশ শনাক্ত করেন। স্বামীর লাশ দেখে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন সখিনা বেগম। বিলাপ করে বলছিলেন, ও (মুজিবুর রহমান) তিন সন্তান এতিম করে চলে গেল। এখন আমি কি নিয়ে বাঁচব। এখন ও লাশ হয়ে ফিরলো। এই বলে তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। বার বার বিলাপ করে বলছিলেন ও কোনদিন আমার কাছে মোবাইল করেনি। আমি উল্টো তাকে মোবাইল করে খোঁজ খবর নিতাম। দুপুরে ও (মুজিবুর) আমাকে মোবাইলে জানিয়েছে, হরতালের কারণে ট্রেনযোগে ঢাকায় আসছিল। তুমি চিন্তা করো না। এর কয়েক ঘণ্টা পর কমলাপুর কনটেইনার ডিপোর কাছাকাছি লেভেল ক্রসিংয়ে ট্রেন ও কাভার্ডভ্যানের সংঘর্ষের সংবাদ পাই। এরপরই বিকেলে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছুটে আসি। সখিনা বেগম জানান, হরতালের কারণে সোমবার ভোর ৪টার দিকে স্বামী মুজিবুর ব্যানারের কঞ্চি সাপ্লাইয়ের জন্য নারায়ণগঞ্জ যান। আগেরদিন এক ব্যবসায়ী মিরপুর বাসায় এসে ব্যানারের বেশ কিছু কঞ্চি (বাঁশ গোড়ার অংশ) দেয়ার জন্য বলে যায়। হাসপাতালে নিহত আলমগীরের নাম জানা গেছে। মৃত্যুর আগে তিনি তাঁর নাম বলে গেছেন। তাঁর আর কোন ঠিকানা পাওয়া যায়নি। তার খোঁজে কেউ আসেনি। অন্যদিকে ঘটনাস্থলে নিহত নাঈদ শিকদারের বাবার নাম ইউনুস শিকদার। গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার খোদাবক্স কাঠি গ্রামে। সে খোদাবক্স কাঠি নেসারিয়া মাদ্রাসার দশম শ্রেণীর ছাত্র। এখানে সে মুগদা এলাকায় তার খালু জাফরের বাড়িতে বেড়াতে আসে। হাসপাতালে আহতদের নিয়ে আসা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী হান্নান জানান, দুপুর ১২টার দিকে কামলাপুর কনটেইনার ডিপোর কাছাকাছি লেভেল ক্রসিংয়ে একটি মালবাহী কাভার্ডভ্যান মোড় ঘোরাচ্ছিলেন। এ সময় কমলাপুর থেকে ছেড়ে আসা একটি ট্রেন দ্রুতগতিতে আসার সময় ওই কাভার্ডভ্যানটিকে সজোরের ধাক্কা দেয়। এতে কাভার্ডভ্যানটি প্রায় ৫০ গজ দূরে গিয়ে আছড়ে পড়ে। বিকট আওয়াজ আতঙ্কে পথচারীদের মাঝে দিগি¦দিক ছুটোছুটি লেগে যায়। মুহূর্তে পুরো এলাকা থমকে যায়। এটা দেখার পর আমি দৌড়ে এক কোণে নিরাপদ স্থানে দাঁড়িয়ে পড়ি। এরপর দেখি আহতদের বাঁচাও বাঁচাও চিৎকার চেঁচামেচি শুরু হয়ে যায়। পরে ছুটে যাই ঘটনাস্থলে। হান্নান আরও জানান, দুর্ঘটনায় আহত অধিকাংশ ট্রেনের যাত্রী। ট্রেনের বগির ভেতর থেকে অনেকে আহত যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন। পরে আমিসহ অনেকে তাদের আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসি। এদিকে আহত যাত্রীদের ২০ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছেন রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক। সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আহতদের দেখতে গিয়ে এ অনুদানের ঘোষণা দেন তিনি।
×