ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সবার জন্যই সুযোগ আছে ॥ নান্নু

প্রকাশিত: ০৫:২৬, ২৯ ডিসেম্বর ২০১৪

সবার জন্যই সুযোগ আছে ॥ নান্নু

মোঃ মামুন রশীদ ॥ আসন্ন বিশ্বকাপে বাংলাদেশের দল কেমন হতে পারে তা নিয়ে আগেই কিছু পূর্বাভাস দিয়েছেন ফারুক আহমেদ। অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড যৌথভাবে এবার বিশ্বকাপ আয়োজন করবে। সে কারণে অভিজ্ঞদের দিকেই বেশি মনোযোগী নির্বাচকরা। কারণ দেশের পরিবেশ ও উইকেটের সঙ্গে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম হওয়ায় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে খেলার অভিজ্ঞতা আছে কিংবা দেশের বাইরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলেছেন এমন ক্রিকেটারদের নিয়েই চূড়ান্ত দল গড়বে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। একই সঙ্গে ক্রিকেটারদের ইনজুরি নিয়েও ভাবতে হচ্ছে নির্বাচকদের। তাছাড়া প্রিমিয়ার ক্রিকেটের সুপার লীগও চলছে সেখানে সম্ভাব্যদের পারফর্মেন্স পর্যবেক্ষণ করেই সে ভিত্তিতে দল গড়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচক কমিটির অন্যতম সদস্য মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। তবে প্রিমিয়ার লীগে যারা খেলতে পারেননি তাঁদেরও সুযোগ থাকছে। আবার আগামী ২ জানুয়ারি ফিটনেস প্রতিবেদন পাওয়া যাবে ক্রিকেটারদের। এরপরই দল চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডে মূলত পেসারদের জন্য সহায়ক উইকেট থাকবে। তাই গতিময় পেসারদের নিয়েই দল গঠনের চিন্তা মাথায় রেখেছেন নির্বাচকরা। আগেই বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি বিন মর্তুজার নাম ঘোষণা হয়ে গেছে। সর্বশেষ জিম্বাবুইয়ের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজেও তিনি দলকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আর পূর্ণ ছন্দে বোলিং করে নিজেকে পুরোপুরি ফিট হিসেবে প্রমাণ করেছেন মাশরাফি। তাই তাঁর পাশাপাশি আরও তিনজন পেসারকে দলে নেয়ার বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন নির্বাচকরা। ইনজুরি থেকে সম্প্রতিই ফিরলেও শফিউল ইসলাম ও আবুল হাসান রাজু তেমন সুবিধা করতে পারেননি। তবে তরুণ তাসকিন আহমেদ লীগে দারুণ বোলিং করছেন। তবে আইসিসির নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা আলআমিন হোসেন তেমন সুবিধা করতে পারেননি। এ বিষয়ে নান্নু বলেন, ‘পেসারদের নেয়ার ক্ষেত্রে ইনজুরির বিষয়টা আমাদের মাথায় রাখতে হবে। আমরা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত করে বলতে পারছি না কাদের দলে রাখা হবে। সবাইকে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। আলআমিন চলতি সুপার লীগেও খেলছেন না এবং ঠিক ছন্দে নেই। সবকিছুই আমরা আলোচনা করব। আর এভাবেই দল গঠন করা হবে।’ তবে ৭/৮ নম্বর পজিশনে সবচেয়ে কার্যকর কে হতে পারেন এটাই খুব বেশি করে ভাবছেন নির্বাচকরা। এটি নিয়েই এখন পর্যালোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন নান্নু। গতিময় উইকেটে স্পিনারদের ভাল করাটা বেশ কঠিন। অভিজ্ঞ স্পিনার আব্দুর রাজ্জাকের ইনজুরি জিম্বাবুইয়ে সিরিজে তাঁকে বাইরে রেখেছিল। এর আগের বেশ কয়েকটি সিরিজেও তিনি তেমন সুবিধা করতে পারেননি। আর অবৈধ বোলিং এ্যাকশনের কারণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আপাতত নিষিদ্ধ আছেন তিনি। সে কারণে সর্বশেষ সিরিজে দুই তরুণ উদীয়মান তাইজুল ইসলাম ও জুবায়ের হোসেন লিখনকে খেলানো হয়েছে। এছাড়াও আরাফাত সানি বেশ আলো ছড়িয়েছেন। এ বিষয়ে নান্নু বলেন, ‘লিখন এখনও অনেক তরুণ। তাঁকে আমরা বেশিদিন দেখার সুযোগ পাইনি। প্রাথমিক স্কোয়াডে যারা আছেন সবাইকে নিয়েই আমরা আলোচনা করব। চূড়ান্ত দলে কারা জায়গা করে নেবেন সেটা সময় হলেই জানা যাবে। লিখনও জায়গা করে নিতে পারেন। সময়ই সব বলে দেবে।’ পেসারদের ইনজুরি নিয়েই যত মাথাব্যথা। সব সিরিজেই দেখা গেছে পূর্ণ শক্তির পেস আক্রমণ নিয়ে দল গড়তে পারেনি বাংলাদেশ দল। সম্প্রতি ফর্মেও নেই সবাই। আবুল হাসান, তাসকিন ও শফিউল ইনজুরি কাটিয়ে ফিরেছেন। রুবেল ও আলআমিন আবার ছন্দে নেই। এ বিষয়ে নান্নু বলেন, ‘ইনজুরির বিষয়টা আমাদের অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে। বিশ্বকাপ দীর্ঘ সময়ের ব্যাপার তাই ফিটনেসের কথাও চিন্তা করতে হবে। যারা ইনজুরি কাটিয়ে উঠেছেন তাঁদের বর্তমান কি অবস্থা সেটা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। সবকিছু মিলিয়েই চিন্তা করতে হবে দল গড়ার সময়। এগুলো আমরা আলোচনা করব এবং যাকে সবচেয়ে ভাল মনে হবে তাঁকেই দলে নেয়া হবে। এত দ্রুতই নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়।’ আগামী ২ জানুয়ারি ক্রিকেটারদের ফিটনেস প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন নির্বাচকরা। এরপরই দল চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন নান্নু। বিশ্বকাপের জন্য বেশ কিছুদিন আগেই ৩০ সদস্যের প্রাথমিক দল ঘোষণা করেছে বিসিবি। এর বাইরে থেকে আর কারও দলে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনার কথা আগের দিনই প্রধান নির্বাচক ফারুক নিশ্চিত করেছেন। উল্লেখ্য, জানুয়ারির ৭ তারিখের মধ্যেই বিশ্বকাপের জন্য ১৫ সদস্যের চূড়ান্ত দল ঘোষণা করতে হবে। এটা আইসিসির বেঁধে দেয়া সময়সীমা। এর আগেই অবশ্য দল গঠন করে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠাবেন নির্বাচকরা।
×