ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় ॥ আজ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক

প্রকাশিত: ০৬:৩০, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৪

চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় ॥ আজ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই তিনদিনের সফরে ঢাকায় এসেছেন। শনিবার সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছলে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এএইচ মাইমুদ আলী ও ওয়াং ই আজ রবিবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ সফরে বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দুই দেশে বেশ কয়েকটি কর্মসূচী পরিকল্পনার বিষয় আলোচনায় প্রাধান্য পাবে। আঞ্চলিক যোগাযোগেও বিষয়টি গুরুত্ব পাবে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ওই বৈঠকে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ওয়াং ই রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদের কয়েক সদস্যের সঙ্গেও বৈঠক হতে পারে তাঁর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত জুনে চীন সফরকালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াংকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আগামী বছর দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে চীনের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ওয়াং ইর ঢাকা সফরে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য ঢাকা সফরের বিষয় চূড়ান্ত হবে। সোমবার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা ত্যাগ করবেন। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরকালে কয়েকটি সমঝোতা চুক্তি সই করেন। চীন সফরে প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ ও বাংলাদেশে চীনের অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সমঝোতা চুক্তি সই করেন। সে সময় চীনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ১৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তিও সই হয়। এছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে তথ্যসেবা পৌঁছাতে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান, রাজশাহীতে পানি শোধনাগার নির্মাণ, চট্টগ্রামের কালুরঘাটে রেলসেতু নির্মাণ, চট্টগ্রাম-রামু-কক্সবাজার, রামু-ঘুনধুম ডুয়েলগেজ রেললাইন স্থাপন ও ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিট প্রতিষ্ঠায় চীনের সহযোগিতা কামনা করে বাংলাদেশ। এসব বিষয়ে অগ্রগতি ও সম্ভাবনা নিয়েই দুদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হবে। কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের আলোচনায় বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা ইস্যুও বিশেষ গুরুত্ব পাবে। বর্তমানে চীনের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য প্রবেশের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ শুল্কমুক্ত কোটা সুবিধা পেয়ে থাকে। আগামীতে শতভাগ শুল্কমুক্ত কোটা সুবিধার বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। বাংলাদেশের নৌবাহিনী আধুনিকায়নে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেয়ার বিষয়েও চীন ইতিমধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাই এ বিষয়েও আলোচনা হতে পারে। এ ছাড়া নয়টি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ চীনের কাছে সহজশর্তে ঋণ চাইতে পারে। বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে বিসিআইএম অর্থনৈতিক করিডর গঠনে চার দেশ একযোগে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরকালে বিসিআইএম করিডর গঠনে আন্তরিক আগ্রহও প্রকাশ করেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরে বিসিআইএম’র অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে। বর্তমানে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ডলার। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ চীনকে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেয়।
×