ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৪:৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৪

সম্পাদক সমীপে

ক্ষমতায় থাকুক মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীরা ১৯৭১ সালে আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলামÑ ১. আলাদা একটি দেশ পাব, নাম হবে- ‘বাংলাদেশ’। ২. নিজস্ব জাতীয় পতাকা থাকবে- সবুজের ওপর গোলাকার লাল রং। ৩. জাতীয় সঙ্গীত হবে- ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’। ৪. বেতারÑ টেলিভিশনের সূচনা সঙ্গীত হিসেবে বাজবে- ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গানখানি। ৫. ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করেছিলাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে, তাই বাংলাদেশের জাতির জনক থাকবেন- ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’। ৬. জাতীয় স্লোগান হবে- ‘জয় বাংলা’; ‘জয় বঙ্গবন্ধু’। ৭. জাতীয় পরিচয় হবে- ‘বাঙালী’। ৮. দেশে থাকবে ধর্মনিরপেক্ষতা। ৯. প্রতিটি বাঙালী থাকবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী। ১০. দুর্নীতি, ঘুষ, লুটপাট, হত্যা, গুম প্রভৃতি ঘৃণা করে প্রতিটি বাঙালী সৎ জীবনযাপন করবেন। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পুরো বাংলাদেশ পাকিস্তানী হানাদারমুক্ত হলো। আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে- হঠাৎ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে হত্যার পর থেকে বাংলাদেশের চিত্রপট গেল পাল্টে। আমরা যে বাংলাদেশ চেয়েছিলাম তা আর থাকল কোথায়। খুনী মোশতাকের পর জেনারেল জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে দিনের পর দিন কারফিউ জারি করে শাসনের নামে চালিয়েছিল শোষণ। ’৭১-এর ঘাতকদের রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রী, আরও কত কি বানালেন তিনি। বহু দলীয় গণতন্ত্রের নামে দেশে একাত্তরের ইয়াহিয়ার প্রেতাত্মারা পাকিস্তান থেকে ফিরে এসে রাজনীতি শুরু করে দিল। জেনারেল জিয়ার শাসনামল থেকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম ভুলিয়ে দেয়ার নানা ছলচাতুরি- কৌশল শুরু“ হয়েছিল। ওরা বিশ্বাস করে না ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ- যেজন্য স্বাধীনতা বিরোধীদের নিয়ে বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন জাতীয় প্রচার মাধ্যমে প্রচার করতে দেয়নি ৭ মার্চের ভাষণ। জাতীয়ভাবে পালনও হয়নি ১৫ আগস্ট শোক দিবস। আসলে ওরা ক্ষমতায় এলে স্বাধীনতাযুদ্ধের ইতিহাস হয়ে যায় বিকৃত। শুধু কী তাই, ওদের শাসনামলে কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা পর্যন্ত উত্তোলন করা হতো না- এমন কি জাতীয় সঙ্গীত গাইতেও দেয়া হতো না। শুনি, এখনও নাকি কোন কোন মাদ্রাসায় জাতীয় সঙ্গীত- ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ পরিবেশিত হয় না। স্বাধীনতা বিরোধীরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দায়িত্বে থাকার জন্যই এ প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের অনেকেই জানে না বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত কি! এই স্বাধীনতা বিরোধীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল বিএনপির শাসনামল থেকে, অর্থাৎ তখন তো ক্ষমতায় ছিল স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতকে নিয়ে বিএনপি। কথাগুলো বলতে বাধ্য হলাম এজন্য যে, যারা আজও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না; মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান- ‘জয় বাংলা’ বলে না; মানে না ‘বঙ্গবন্ধু’কে- তাদের কেন এতো গুরুত্ব দেয়া। ওই বৃদ্ধ আরও জানালেন, মনে রাখবেন-স্বাধীনতা বিরোধীদের নিয়ে তারা আবার কোনভাবে ক্ষমতায় বসতে পারলেÑ ১. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা- ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি’ এই জাতীয় সঙ্গীত জামায়াতের প্ররোচনায় পড়ে তারা পাল্টে দেবে। ২. জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নাম চিহ্ন কিছুই রাখবে না। ৩. জাতীয় পতাকা, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব থাকবে কি-না তাতে সন্দেহ রয়েছে। ৪. স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে তাও চিরতরে মুছে দেবে ওরা। ৫. মুক্তিযুদ্ধের সম্পূর্ণ ইতিহাস বিকৃত করে পাল্টে দেবে। ৬. রাজাকারদের মুক্ত করে সত্যিকার মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর অত্যচার, নিপীড়ন, নির্যাতন চালাবেÑ ইত্যাদি আরও কত কি। সুতরাং সাবধান, এখনই বাঙালী জাতিকে সতর্ক হতে হবে, হতে হবে ঐক্যবদ্ধ। আমাদের প্রত্যাশা চিরদিন এই বাংলাদেশে যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীরা ক্ষমতায় থাকুক। সবার কণ্ঠে ধ্বনিত হোক ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’। লিয়াকত হোসেন খোকন ঢাকা। বিশ্বায়ন, পুঁজিবাদ এবং উন্নয়নশীল বিশ্ব ‘বিশ্বায়ন’ বর্তমানে বহুল আলোচিত একটি বিষয়। বিশ্বের ধনী এবং দরিদ্র রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সুসম্পর্ক এবং সাহায্য সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে- এ প্রত্যয় এবং আশা নিয়ে বিশ্বায়নের প্রসার ঘটলেও বাস্তবে তা ফলপ্রসূ হয় নি। এর মূল কারণ পুঁজিবাদ। অবাধ নীতির কারণে পূঁজিবাদের প্রসার যেভাবে ঘটেছে তাতে বিশ্বের সকল রাষ্ট্র সমান সুবিধা ভোগ করতে পারছে না। বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থার সিংহভাগ সুফল ভোগ করছে পুঁজিবাদী উন্নত রাষ্ট্রগুলো। বিশ্বায়ন ধারণার সুযোগ নিয়ে পুঁজিবাদ বিজয়ী বেশে এগিয়ে যাচ্ছে। আর এ সুবিধা থেকে দরিদ্র রাষ্ট্রগুলো বঞ্চিতই বলা যায়। উন্নয়নশীল দেশগুলোও এর সুফল পাচ্ছে না। বলতে গেলে পুঁজিবাদী ধনী রাষ্ট্রগুলো এর সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে। এক দিকে মনে হচ্ছে পুঁজিবাদী ধনী রাষ্ট্রগুলো দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সাহায্য করছে। আসলে শিল্পোন্নত পুঁজিবাদী দেশগুলো সাহায্য-সহযোগিতার নামে দরিদ্র দেশগুলোর সহজপ্রাপ্য সস্তা শ্রমকে শোষণ করছে। প্রকৃতপক্ষে বিশ্বায়ন বিশ্বের লোকগুলোকে একই জাহাজে কিন্তু বিভিন্ন শ্রেণীর কেবিনে পৃথক করে রেখেছে। খুব অল্প সংখ্যক লোক আধুনিক বিলাহবহুল কক্ষে ভ্রমণ করছে। তাদের জন্য রয়েছে পুষ্টিকর খাদ্য এবং বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। নিশ্চয়তা রয়েছে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা এবং বিলাস বহুল জীবনের নিশ্চয়তা। কিন্তু বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রের বিপুল সংখ্যক জনগণ তৃতীয় শ্রেণীর কামরায় ভ্রমণ করছে এবং ক্ষুধা ও রোগে ভুগছে। দরিদ্র এবং উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলো কঠিন শর্তে ঋণ গ্রহণ করে ক্রমশ দরিদ্র হয়ে পড়ছে। তারা বিশ্বায়নের বাইরের আবরণের চাকচিক্য দেখছে কিন্তু ভেতরের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ধনী রাষ্ট্রগুলো গরিব রাষ্ট্রগুলোকে সাময়িকভাবে কিছু সুবিধা ভোগের ব্যবস্থা করে দিলেও স্থায়ীভাবে দারিদ্র্য দূরিকরণে কোন ভূমিকা রাখছে না। বিশ্ব বাণিজ্যের সুবিধা সকল রাষ্ট্র সমানভাবে ভোগ করতে পারলে বিশ্বের সুবিধা সবাই সমানভাবে ভোগ করতে পারবে। অর্থাৎ বিশ্বায়ন সবার জন্য সুখ আনতে পারবে তখনই যখন একই জাহাজের সকল যাত্রী একটি শ্রেণীর কেবিনে ঐক্য, সাম্য ও ন্যায়ের শর্তে ভ্রমণ করতে পারবে। কিন্তু পুঁজিবাদী ধনী রাষ্ট্রগুলো তা কি কখনো হতে দিবে? না দিবে না। দিবে না এজন্য যে, তাহলে তাদের প্রাধান্য বিশ্বে কমে যাবে। অথচ বিশ্বে সকল মানুষের নিরাপত্তা, সুখ ও শান্তিই বিশ্বায়নের মূল শ্লোগান হওয়া উচিৎ। এমএ হামিদ খান সহকারী অধ্যাপক, ইংরেজী বিভাগ ধনবাড়ী কলেজ, টাঙ্গাইল। একটা সেতুর জন্য বরিশাল ও খুলনা দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় অনেকটা বাণিজ্যিকভাবে পিছিয়ে আছে। বাংলাদেশের অন্যতম নদীবহুল অঞ্চল বরিশাল। এ অঞ্চলের মানুষের আয়ের প্রধান উৎস হলো কৃষিকাজ আর কৃষি রফতানি। জন্য বরিশাল থেকে খুলনা, মংলা, যশোর, বেনাপোলে, যাতায়াতের একমাত্র মহাসড়কা বরিশাল-খুলনা মহাসড়ক। এ সড়কের মাঝে অবস্থিত সুপ্রসিদ্ধ কচানদী। যা পারাপার করা হয় বেকুটিয়া ছোট ছোট দুটি ফেরির মাধ্যমে। এ পথে এতো বাস, ট্রাক, পিকাপভ্যান এবং প্রাইভেট গাড়ি চলাচল করে যে, নদীর দুইপাড়ে সবসময়ই যানজট লেগেই থাকে। মাত্র ২ কি.মি. পার হতে সময় লাগে ২ ঘণ্টার বেশি। তাই দক্ষিণবঙ্গের লাখ লাখ মানুষের কষ্টের কথা চিন্তা করে বেকুটিয়ায় একটি সেতু নির্মাণ করার জন্য কতৃপক্ষের কাছে জনগণের আকুল আবেদন যেন বৃথা না যায়। মোঃ রুহুল আমিন (দুলাল) জয়কুল, কাউখালী- পিরোজপুর। সাংস্কারের অপেক্ষায় সড়ক রাজধানী ঢাকা নগরে এক কোটিরও অধিক মানুষ বসবাস করছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়! এই নগরের রাস্তাগুলোর অবস্থা করুণ! অলিতে-গলিতে আনাচে-কানাচে হাজার হাজার রাস্তা রয়েছে যেগুলো দিয়ে চলাফেরা করা জনসাধারণের পক্ষে কষ্টকর হয়ে পড়েছে। অথচ এ রাস্তাগুলোই জনসাধারণের বাধ্য হয়ে ব্যবহার করতে হচ্ছে। অন্য কোন উপায় না থাকায় এ্যা¤ু^লেন্স, হাতি-ট্রাক, রিকশা, সাইকেল, মোটরসাইকেলে বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষের বাধ্য হয়েই প্রতিদিন এসব নড়বড়ে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে নিয়ত দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। অথচ উর্ধতন কর্তৃপক্ষ এসব রাস্তাগুলো একটু সংস্কার করলে নগরের জনসাধারণ অসহনীয় দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পায়। কয়েকবার বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এসব ব্যাপারে লেখালেখি হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তেমন কোন ভাল পদক্ষেপ নেয়নি। আশা করি কর্তৃপক্ষ রাস্তাগুলো সংস্কারের ব্যাপারে জুরুরী পদক্ষেপ নেবেন। দিপু প্রামাণিক ও লাবণ্য ঢাকা।
×