ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ব্রাজিলে রাজনৈতিক পরিবারের পতন বয়ে আনবে পরিবর্তন

প্রকাশিত: ০৪:২৩, ২৮ ডিসেম্বর ২০১৪

ব্রাজিলে রাজনৈতিক পরিবারের পতন বয়ে আনবে পরিবর্তন

ব্রাজিলের ৩১তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন জোশে সারনি। দেশটির এক সময়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তিনি। পাশাপাশি আইন পেশা এবং লেখালেখির সঙ্গেও যুক্ত। সর্বশেষ সারনি ছিলেন ব্রাজিলের সিনেট সদস্য। কিন্তু এই সারনি আর আগামীতে দেশটির সিনেটে লড়বেন না বলে সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন। তার এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে ব্রাজিলের রাজনীতিতে একটি বড় ধরনের পরিবর্তনের সূচনা হলো। গত অক্টোবরে ব্রাজিলের মোরানওহাও অঙ্গরাজ্যেও নির্বাচনে তার সমর্থকরা হেরে যায়। এরপর আর নির্বাচনে না লড়ার ঘোষণা দেন ৮৪ বছর বয়সী সারনি। তার এই ঘোষণা ব্রাজিলের রাজনীতিতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক পরিবর্তনের সূচনা করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের কর্মী রডরিগো লাগো বলেন, সারনির এই ঘোষণার মধ্য দিয়ে ব্রাজিলীয় রাজনীতির সর্বশেষ অধিনায়কের পতন সূচিত হলো। তিনি দীর্ঘদিন থেকে ব্রাজিলের উত্তর-পূর্বের একটা বিশাল অংশকে দীর্ঘদিন অত্যন্ত শক্ত হাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ব্রাজিলের এই অংশটি অত্যন্ত দারিদ্র্যপীড়িত হিসেবে পরিচিত। এই রাজ্যের লোকজন জীবিকার জন্য তাদের সামনে এখন কৃষি কাজই প্রধান ভরসা। এছাড়া তাদের সামনে এখন আর অন্য কোন পথ খোলা নেই। ব্রাজিলের এই অংশের পরিবর্তন হলে দেশটির অন্যান্য এলাকা থেকেও গোষ্ঠীতন্ত্রের অবসান সম্ভব বলে মনে করেন রডরিগো লাগো। ব্রাজিলের অপর উত্তর-পূর্বের রাজ্য পারিবা। এ অঙ্গরাজ্যেও দীর্ঘদিন ধরে গোষ্ঠীতন্ত্র চলে আসছে। এখানে রোনাল্ডো চুনহা লিমার ছেলে ক্ষমতায় রয়েছেন। লিমা পারিবার সাবেক গবর্নর। ৪৮ বছর বয়সী সুয়েলী চেলেসটি নামে এক নারী বলেন, আমরা সারনির জন্য কাজ করেছি। কিন্তু ওই সময়টি এমন ছিল যে আপনি আপনার মোবাইল ফোন বের করে ছবি তুলতে গেছেন ঠিক ওই সময় কোন মাতাল এসে আপনার ফোনটি নিয়ে গেছে। ওই সময় মানুষের মধ্যে একে-অপরকে সম্মান করার প্রবণতা ছিল কম। মোরানওহাও অঙ্গরাজ্যের মিডিয়া থেকে শুরু করে বড় বড় রিয়েল স্টেট ব্যবসা এখনও সারনি পরিবারের দখলে। এসব মিডিয়াতে প্রতিনিয়ন সারনির গুণসান গাওয়া হচ্ছে বলে শন মিচেল নামে রুটজার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নৃতত্ত্ব বিজ্ঞানী বলেছেন। তিনি বলেন, তা সত্ত্বেও সারনি পরিবার যে জনসভা দিচ্ছে তা খুবই হতাশাব্যঞ্জক। জাতিসংঘ মানব উন্নয়ন সূচকে ব্রাজিলের ২৬টি অঙ্গরাজ্যের মধ্যে মোরানহাওয়ের অবস্থান শেষের দিক থেকে দ্বিতীয়। অবশ্য মানব উন্নয়ন সূচকের এই পরিসংখ্যান অস্বীকার করেন সারনি। তার পারিবারিক মালিকানাধীন এক পত্রিকার খবরে বলা হয়, এই সূচক সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলোর তৈরি। তারা এভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোর দুর্বলতাকে নিজ স্বার্থে ব্যবহারের জন্য তারা এ সূচক কাজে লাগিয়েছে। আর এই সূচকের প্রধান উদ্দেশ্য ব্রাজিল সম্পর্কে খারাপ ধারণা তৈরি করা। -ইন্টারন্যাশনাল হেরাল্ড ট্রিবিউন।
×