ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

প্রসঙ্গ : মুক্তিযুদ্ধের ছবি

প্রকাশিত: ০৫:০১, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪

প্রসঙ্গ : মুক্তিযুদ্ধের ছবি

মহান স্বাধীনতাযুদ্ধের ঘটনা নিয়ে ‘বাঘা বাঙালী’ ছবিটি নির্মিত হয় স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে। এই ছবিতে স্বাধীনতা সংগ্রামের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছিল। ‘বাঘা বাঙালী’ ছবির পরিচালক নায়ক ছিলেন আনন্দ। ‘বাঘা বাঙালী’ দেখার সেই স্মৃতি আজও যে ভুলিনি- সেই ১৯৭২ সালে তখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। ‘বাঘা বাঙালী’ ছবিতে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ; স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন ছাড়াও এই ছবিতে প্রচার করা হয়েছিল- ‘জয় বাংলা’; ‘জয় বঙ্গবন্ধু’; ‘তোমার নেতা আমার নেতা শেখ মুজিব-শেখ মুজিব’; ‘বীর বাঙালী অস্ত্র ধরো বাংলা মাকে মুক্ত করো’ প্রভৃতি স্লোগান। মুক্তিযুদ্ধের গান-‘জয় বাংলা বাংলার জয়’; ‘তীর হারা ওই ঢেউয়ের সাগর’; ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে’; ‘এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা আমরা তোমাদের ভুলবো না’ প্রভৃতি ছিল এই ছবির প্রধান গান-যা ১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে আমরা নিয়মিত শুনতাম। ‘বাঘা বাঙালী’ ছবিতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী, রাজাকার, আলবদর আর আলশামস মিলে স্বাধীনতাকামী বাঙালী ও নিরীহ মানুষের ওপর কী নির্মম নির্যাতন করেছিল; কুমারী মেয়ে, গৃহ বধূ- এদের ধরে এনে জোরপূর্বক পালাক্রমে চালিয়েছিল বর্বরভাবে ধর্ষণ- এসব ঘটনাও উহ্য থাকেনি। তাই বলা যায়, মুক্তিযুদ্ধের একটি পূর্ণাঙ্গ ছবি ছিল ‘বাঘা বাঙালী’। অথচ এ যুগের বিনোদন রিপোর্টাররা এই ছবিটি উহ্য রেখে মুক্তিযুদ্ধের ১০টি ছবি নিয়ে লেখেন। অথচ ওই ১০টি ছবির মধ্যে কোন কোনটি আবার বঙ্গবন্ধুকে পাশ কাটিয়ে; জয় বাংলা স্লোগান; জয় বাংলা বাংলার জয় গানকে উহ্য রেখে নির্মিত হয়েছিল। স্বাধীনতা বা মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে আর তাঁকে বাদ দিয়ে তথাকথিত যেসব মুক্তিযুদ্ধ নামে ছবি হয়েছে তা আদৌ মুক্তিযুদ্ধের ছবি হতে পারে না। মুক্তিযুদ্ধ মানে- ১. জয় বাংলা (স্লোগান), ২. ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ, ৩. স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন, ৪. জয় বাংলা বাংলার জয় (গান)। রূপালি পর্দায় এসব উহ্য মানেই ইতিহাস বিকৃত করা এবং তা মুক্তিযুদ্ধের ছবি হতে পারে না। লিয়াকত হোসেন খোকন রূপনগর, ঢাকা।
×