ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজনৈতিক উত্তেজনার মহড়া

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪

রাজনৈতিক উত্তেজনার মহড়া

রাজনীতির পরিম-লে কী অশনি সঙ্কেতের দেখা মিলছে? গত কয়েকদিনের বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ঘটনায় এ রকম প্রশ্ন সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে। শঙ্কিত মানুষ এ থেকে মুক্তি চায়। দেশে যখন রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রবহমান, জীবনযাত্রা স্বাভাবিক- ঠিক সেরকম সময়ে একটি মহল রাজনীতির বর্তমান শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করার চেষ্টায় লিপ্ত। শ্রমজীবী মানুষ, সচেতন মানুষ এই অশান্ত পরিবেশ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে। বুধবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে রাজধানীর বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকা বিশেষ আদালত-৩ থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পর্যন্ত এলাকা বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠন ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের কর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষে এলাকাটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে কয়েক দফায় কাঁদানে গ্যাস ও জলকামান ব্যবহারের পাশাপাশি লাঠিচার্জও করতে হয়। সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশত ব্যক্তি আহত হয়। এ সময় আশপাশের এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। মানুষের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষের এক পর্যায়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের সামনে বিএনপি সমর্থকরা নেত্রকোনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ছবি বিশ্বাসের ওপর হামলা ও তাঁর গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। এদিকে সংঘর্ষের দায় দু’পক্ষ একে অন্যের ঘাড়ে চাপিয়েছে। জানা যায়, দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়ার হাজিরাকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। বেগম জিয়ার গাড়িবহরের সামনে-পেছনে নিরাপত্তা কর্মীদের বাইরেও অতিরিক্ত কর্মী-সমর্থকদের লাঠিসোঁটা নিয়ে অগ্রসর হতে দেখা যায়। খালেদা জিয়াকে বহনকারী গাড়ি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে আদালতের ফটকে পৌঁছালে বিএনপি ও ছাত্রদল কর্মীরাও ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ বেধে যায়। পরে বিএনপির সশস্ত্র কর্মীরা বেপরোয়া হয়ে উঠলে সংঘর্ষ ভিন্ন মাত্রায় রূপ নেয়। এই সংঘর্ষে জামায়াতের সশস্ত্র কর্মীরা ওই এলাকায় বেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করে পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে। জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াত আগে থেকেই পরিকল্পিতভাবে খালেদা জিয়ার হাজিরাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক অঙ্গনকে উত্তপ্ত ও অস্থিতিশীল করার পরিকল্পনা নিয়েছিল। তাদের দ্বিতীয় পরিকল্পনা হলো শনিবার গাজীপুরে বেগম জিয়ার সমাবেশকে কেন্দ্র করে দ্বিতীয় দফায় রাজনীতির মাঠকে অশান্ত করা। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। রাজনৈতিক দলগুলোর মনে রাখতে হবে গণতন্ত্র চর্চা করতে গিয়ে যদি মানুষের মৌলিক অধিকারকে তারা ক্ষুণœ করে তাহলে জনতার আদালতে তাদের দাঁড়াতে হবে। দেশে যে শান্ত, স্বাভাবিক এবং স্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে একে কোনভাবে কেউ বা কোন মহল নষ্ট করুক সেটা জনগণ প্রত্যাশা করে না। তাই এই শান্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের মৌলিক অধিকারের বিষয়গুলো রাজনৈতিক দলগুলো বিবেচনায় আনবে- এ রকম প্রত্যাশা সবার।
×