ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মিথ্যাচার ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়

প্রকাশিত: ০৪:৫২, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪

মিথ্যাচার ইতিহাসের আঁস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত হয়

তারেক রহমানের মিথ্যাচারের ওপর চতুরঙ্গের পাতায় আগে একবার লিখেছিলাম। সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ওখানেই থেমে যাব। একাধিক কলাম লেখার মতো চরিত্র বা রাজনৈতিক নেতা কোনটাই নন এই তারেক রহমান। তিনি এখন দুর্নীতির মামলায় গ্রেফতারী পরোয়ানা মাথায় নিয়ে ফেরারি আসামি হিসেবে বিদেশে পলাতক আছেন। শোনা যায়, লন্ডনের এক অভিজাত এলাকায় তাঁর বসবাস। লন্ডনের মতো একটি ব্যয়বহুল নগরীতে সপরিবারে জীবনযাপনের অর্থ কোন্ গৌরী সেন যোগান দেন জানি না। কেবল ধনাঢ্য জীবনযাপন নয়, হোটেল ভাড়া করে ইতিহাস চর্চাও করছেন ইদানীং। যার সবই বানোয়াট ও মিথ্যার ওপর ভর করে। তারেক রহমানের ওপর তো লিখব না বলেছিলাম। কিন্তু তার মা বেগম খালেদা জিয়াও যখন গলা মিলিয়ে মিথ্যাচার শুরু করেছেন তাতে করে কলম না ধরে থাকা যায় না। ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ করেনি, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের দল নয়।’ কেউ যখন এমন মিথ্যাচার করেন তখন বুঝতে হবে সুদূরপ্রসারী দূরভিসন্ধি আছে। অর্থাৎ তিনি কোন আত্মঘাতী ষড়যন্ত্রের পথে পা বাড়িয়েছেন। তখন কি আর চুপ থাকা যায়? বেগম খালেদা জিয়া ২১ ডিসেম্বর ২০১৪ রবিবার ঢাকার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশে বক্তৃতা করেন। হাতেগোনা কিছু মুক্তিযোদ্ধার সামনে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মিথ্যাচার করেছেন। আওয়ামী লীগের দীর্ঘ ৬৬ বছরের পথ চলায় পাহাড় সমান সাফল্যের মধ্যে একটা-দুইটা ছিটেফোঁটা ভুল-ভ্রান্তি ছিল না এমন কথা কেউ বলবে না। আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধ করেনি, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের দল নয়, এমন নির্জলা মিথ্যা কেবল খালেদা জিয়াই বলতে পারেন। বাংলাদেশের অজপাড়াগাঁর আলো-বাতাসহীন নিভৃত কুঁড়েঘরের অক্ষরজ্ঞানহীন বৃদ্ধাকেও বিশ্বাস করানো যাবে না। কারণ মিথ্যারও একটা সীমা থাকে। খালেদা জিয়ার মতে, “স্বাধীনতাযুদ্ধে আওয়ামী লীগের ভূমিকা ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। এর কারণ জাতির সেই সঙ্কটকালে তারা ইতিহাস নির্ধারিত দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছিল। রণাঙ্গনে জীবনবাজি রেখে তারা যুদ্ধ করেনি। তারা ভারতে আশ্রিত জীবন কাটিয়েছে।’ এই বক্তৃতা যখন খালেদা জিয়া দিচ্ছিলেন তখন নিশ্চয়ই সেখানে উপস্থিত মুজিবনগর সরকারের কর্মচারী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বা ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর কিংবা মেজর জে. (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহিমের মতো মুক্তিযোদ্ধারা মুচকে হাসছিলেন। খালেদা জিয়া সেদিন বক্তৃতা দেবার সময় বার বার নিচের দিকে তাকাচ্ছিলেন। মনে হয়েছে লিখিত বক্তৃতা তিনি পাঠ করছিলেন। আমি নিশ্চিত যে কোন রাজাকার বা রাজাকারপন্থী বক্তৃতাটি তাকে লিখে দিয়েছেন। যারা লিখে দিয়েছেন তারাই দেশাভ্যন্তরে থাকতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে ‘দুই কুত্তার লড়াই’ বলে দুইদিকে বন্দুক চালিয়েছেন। যাদের একটি অংশ ভারতেও গিয়েছিলেন, তাদেরও বেশির ভাগই ১৬ ডিসেম্বরের পর দেশে ফিরেছিলেন। মুজিবনগর সরকারেও তারা ছিলেন না। তারা মুক্তিযুদ্ধের মালা পরেন কিন্তু রণধ্বনি ‘জয় বাংলা’ ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ বলেন না। দৈনিক জনকণ্ঠে পরদিন (২২ ডিসেম্বর ২০১৪) প্রকাশিত খালেদা জিয়ার সেই বক্তৃতা থেকে কিছু অংশ তুলে ধরলেই তার অসার ও মিথ্যাচার পরিষ্কার হয়ে যাবে। খালেদা জিয়া বলেছেন- ‘তাদের (আওয়ামী লীগ) ব্যর্থতার পটভূমিতে জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ করেছিলেন। হানাদার বাহিনীর অধিনায়ক জাঞ্জুয়াকে হত্যা ও বাকিদের বন্দী করেছিলেন। বেতার মারফত স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন। তাঁর ঘোষণার মাধ্যমেই বিদ্রোহ উন্নীত হয়েছিল বিপ্লবে।’ এর প্রেক্ষিতে বলতে হয়, স্বাধীনতা ঘোষণা দেবার সাংবিধানিক কোন এখতিয়ার কি জিয়াউর রহমানের ছিল? তিনি জনপ্রতিনিধিও ছিলেন না। ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন কর্মচারী। এমনকি ২৭ মার্চ ’৭১ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার আগে কেউ তাঁর নামও জানত না। একজন পাকিস্তান মিলিটারি মেজরকে চেনার কোন কারণও ছিল না। কোন্ প্রেক্ষিতে সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র খালাস করতে চট্টগ্রাম বন্দরে যাবার পথে তাকে ফেরানো হয়েছিল এবং মেজর রফিক বীর উত্তম (তৎকালীন ইপিআর-এর ক্যাপ্টেন) যখন যুদ্ধ করছিলেন তখন তিনি পটিয়ার দিকে কিভাবে পালিয়েছিলেন এবং সেখান থেকে তাকে ধরে এনে (বঙ্গবন্ধুর পক্ষে ও নামে) বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করানো হয়েছিল- সেই সব ইতিহাস প্রতিটি সচেতন বাঙালীর জানা। নতুন করে বলার কিছু নেই। শুধু একটা ব্যাপার উল্লেখ করতে চাই, খালেদা জিয়া বলেছেন- “জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে বিদ্রোহ করেন হানাদার বাহিনীর ‘অধিনায়ক জাঞ্জুয়াকে’ হত্যা করেছিলেন।” এই যদি ঘটনা হয়, তবে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হবার পর পাকিস্তানের কোন্ জাঞ্জুয়ার মৃত্যুতে প্রোটোকল ব্রেক করে শোকবার্তা পাঠিয়েছিলেন? এই জাঞ্জুয়া কি তবে জিয়ার হাতে নিহত, সেই জাঞ্জুয়ার প্রেতাত্মা ছিল? আসলে মিথ্যাচারেরও একটা লিমিট থাকে? তবে এই জাঞ্জুয়াকে নিয়ে অনেক মুখরোচক কথাও আছে, যা উল্লেখ করাটাও আমি অসম্মানজনক বলে মনে করছি। বস্তুত খালেদা জিয়া কিছুদিন যাবত তাঁর ফেরারি পুত্র তারেক রহমানের লন্ডনে প্রদত্ত বানোয়াট ইতিহাস চর্চার সমর্থন করতে গিয়ে এত কথা বলেছেন। অবশ্য তা বুমেরাং হয়ে তাঁকেই প্রশ্নবিদ্ধ করছে। তারেক রহমান বলেছেন, তার পিতা মিলিটারি জিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক ও প্রথম রাষ্ট্রপতি। জিয়া স্বাধীনতার ঘোষক এ দাবি এখন ডাস্টবিনে। ‘প্রথম রাষ্ট্রপতি’ এ দাবির প্রেক্ষিতে বলতে চাই- আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনার দলিল সংবিধানের ভিত্তি হলো ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিব নগরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দ্বারা ঘোষিত ‘স্বাধীন সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের ঘোষণাপত্র।’ যাতে বলা হয়েছে : “যেহেতু বাংলাদেশে ৭ ডিসেম্বর ১৯৭০ হইতে ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, এবং “যেহেতু এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ ১৬৯ জনের মধ্যে ১৬৭ জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করেন যাহারা আওয়ামী লীগের সদস্য, এবং ... “যেহেতু এহেতু বিশ্বাসহন্তা আচরণের ঘটনায় (অর্থাৎ পাকিস্তানী মিলিটারি জান্তা প্রধান জে. ইয়াহিয়া কর্তৃক ১৯৭১ সালের ৩ মার্চ আহূত সংসদ অধিবেশন স্থগিত করায়) ও পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের সাড়ে ৭ কোটি জনগণের অবিসম্বাদী নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের বৈধ অধিকার পূরণের জন্য ঢাকায় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতার একটি যথোচিত ঘোষণা দেন... যেহেতু (জনপ্রতিনিধিগণের মুজিবনগর তথা কুষ্টিয়ার বৈদ্যনাথ তলায় আম্রকাননের সেই সভায় জনপ্রতিনিধিগণ সম্মিলিতভাবে ঘোষণা করেন- “(আমরা) ঘোষণা দিতেছি এবং প্রতিষ্ঠা করিতেছি যে, বাংলাদেশ হইবে সার্বভৌম জনগণের প্রজাতন্ত্র এতদ্বারা ইতোপূর্বে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ঘোষিত স্বাধীনতার ঘোষণাকে নিশ্চিত করিতেছি এবং “এতদ্বারা নিশ্চিত করিতেছি ও সিদ্ধান্ত লইতেছি যে, সংবিধান যে সময় পর্যন্ত প্রণীত না হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি থাকিবেন এবং সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রজাতন্ত্রের উপ-রাষ্ট্রপতি থাকিবেন, এবং “রাষ্ট্রপতি প্রজাতন্ত্রের সকল সশস্ত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক হইবেন, ... “আমরা আরো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিতেছি, স্বাধীনতার এই ঘোষণাপত্র ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ হইতে কার্যকর হইয়াছে বলিয়া বিবেচিত হইবে।” এ ঘোষণাই বাংলাদেশের সংবিধান তথা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের সংরক্ষক রক্ষাকবচ। একে বিতর্কিত করা গেলে স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকেও বিতর্কিত করা যাবে। তখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে। খালেদা-তারেকদের আসল উদ্দেশ্যও তা-ই। যেভাবে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জিয়া দেশের ৭৪টি ট্রাইব্যুনাল ভেঙ্গে দিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের ছেড়ে দিয়েছিলেন। অবশ্য যারা তাদের মা-বেটাকে এটি শিখিয়েছে, তারা বামপন্থী বুদ্ধিজীবী এবং লন্ডনে বসবাসকারী জামায়াত-শিবির। ওদের মাথাই শয়তানের কারখানা। এটা খালেদা জিয়া যত তাড়াতাড়ি অনুধাবন করবেন ততই তার জন্যে ভাল হবে। অবশ্য খালেদা জিয়া যে ডাল ধরেছেন তা-ই ভেঙ্গে যাচ্ছে, ঘুণে ধরা কিনা! আসলে তিনি তাঁর প্রয়াত স্বামী জিয়াউর রহমানের জন্য ইতিহাসে একটা জায়গা চাচ্ছেন। যেমন তিনি বলেছেন- “আমি প্রস্তাব দিয়েছিলাম, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী, মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান ও শহীদ (?) প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান- এই ‘পাঁচ কৃতী’ সন্তানকে জাতীয় নেতা হিসেবে মর্যাদা দিয়ে সকল বিতর্কের উর্ধে রাখা হোক। কিন্তু তাদের (আওয়ামী লীগ) সম্মতি মিলেনি।” বেগম জিয়া ও তদীয় পুত্র তারেক রহমানের অবগতির জন্যে জানাচ্ছি যে, উল্লেখিত পাঁচজনের মধ্যে প্রথম চারজন বাঙালী জাতির কাছে সম্মানীয় এবং সকল বিতর্কের উর্ধে ব্যক্তিত্ব। প্রথম তিনজন সিনিয়র হলেও বাঙালী জাতির প্রতি অবদানের দিক থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবার উপরে। তিনি বাঙালীর জাতি-রাষ্ট্র পিতা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী। যেমন ভারতে মওলানা আবুল কালাম আজাদ, জহরলাল নেহরু, সি আর দাশ, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস অনেক বড় নেতা হলেও মহাত্মা গান্ধী সবার ওপরে ভারতের জাতির পিতা, ঠিক তেমনি পাকিস্তানে কায়েদে আযম মুহম্মদ আলী জিন্নাহ। বাংলাদেশেও মিলিটারি জিয়ার নাম আসবে ঐ চারজনের অনেক অনেক পরে, অর্থাৎ লেজের দিকে। যেমন- সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী, এএইচএম কামরুজ্জামান, জেনারেল এমএজি ওসমানী, মনি সিং, অধ্যাপক মুজাফ্ফর আহমদ, বিএলএফ চার শীর্ষ লিডার শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ : (দ্বিতীয় পর্যায়ের নূরে আলম সিদ্দিকী, আসম আবদুর রব, শাজাহান সিরাজ ও আবদুল কুদ্দুস মাখন; বাঙালী সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে কে কোর্সের প্রধান ও সেক্টর কমান্ডার জেনারেল খালেদ মোশাররফ- এর পরেই কেবল জেড ফোর্স প্রধান মিলিটারি জিয়ার নাম থাকতে পারে। যদিও জিয়াকে মুক্তিযুদ্ধের ভেতরেই সেক্টর কমান্ডার পদ থেকে বাদ দেয়া হয়, যেমন করে খন্দকার মোশতাককে পররাষ্ট্র মন্ত্রীর পদ থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের শেষের দিকে তাকে এ রকম কর্মহীন করে রাখা হয়েছিল যে কারণে জিয়ার কোন যুদ্ধ ইতিহাস নেই। তারপরও আমি বলব বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠকারী হিসেবে মিলিটারি জিয়ার নাম ঘোষণা পাঠকারী প্রথম ব্যক্তি আবদুল মান্নানের পাশে এবং উপরোক্ত সিরিয়াল অনুযায়ী থাকতে পারে। বেগম জিয়া বা তারেক তা মেনে নিলে ভাল করবেন। ঢাকা ॥ ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪ লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক
×