ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসছেন আজ

প্রকাশিত: ০৪:২২, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪

চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসছেন আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং আই তিনদিনের সফরে আজ শনিবার ঢাকায় আসছেন। ঢাকা সফরকালে তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে দ্বি-পক্ষীয় বৈঠকে মিলিত হবেন। বাংলাদেশ-চীন কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দুই দেশে বেশ কয়েকটি কর্মসূচী পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা প্রাধান্য পাবে বৈঠকে। আঞ্চলিক যোগাযোগের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং আই শনিবার সন্ধ্যায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবেন। রবিবার দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হবেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সফর শেষে সোমবার ঢাকা ত্যাগ করবেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ওয়াং আই রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। এছাড়া মন্ত্রিপরিষদের কয়েক সদস্যের সঙ্গেও তাঁর বৈঠক হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত জুনে চীন সফরকালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াংকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। আগামী বছর দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্য ছিয়াংকের ঢাকায় আসার সম্ভাবনা রয়েছে। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সম্ভাব্য ঢাকা সফরের বিষয়ে আলোচনা মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে। সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরকালে কয়েকটি সমঝোতা চুক্তি সই করেন। প্রধানমন্ত্রী তার চীন সফরে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ এবং বাংলাদেশে চীনের অর্থনৈতিক ও শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠায় সমঝোতা চুক্তি সই করেন। সে সময় চীনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলায় এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াটের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তিও সই হয়। এছাড়া ইউনিয়ন পর্যায়ে তথ্যসেবা পৌঁছাতে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান, রাজশাহীতে পানি শোধনাগার নির্মাণ, চট্টগ্রামের কালুরঘাটে রেলসেতু নির্মাণ, চট্টগ্রাম-রামু-কক্সবাজার, রামু-ঘুনধুম ডুয়েলগেজ রেললাইন স্থাপন এবং ইস্টার্ন রিফাইনারির দ্বিতীয় ইউনিট প্রতিষ্ঠায় চীনের সহযোগিতা কামনা করে বাংলাদেশ। এসব বিষয়ে অগ্রগতি ও সম্ভাবনা নিয়েই দুদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হবে। কূটনৈতিক সূত্র জানায়, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের আলোচনায় বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও নিরাপত্তা ইস্যু বিশেষ গুরুত্ব পাবে। বর্তমানে চীনের বাজারে বাংলাদেশের পণ্য প্রবেশের ক্ষেত্রে ৬০ শতাংশ শুল্কমুক্ত কোটা সুবিধা পেয়ে থাকে। আগামীতে শতভাগ শুল্কমুক্ত কোটা সুবিধার বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। নৌবাহিনী আধুনিকায়নে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দেয়ার বিষয়েও চীন ইতিমধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তাই এ বিষয়েও আসন্ন সফরে আলোচনা হতে পারে। এ ছাড়া বড় ৯ প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ চীনের কাছে সহজশর্তে ঋণ চাইতে পারে। বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও মিয়ানমারের মধ্যে বিসিআইএম অর্থনৈতিক করিডর গঠনে চার দেশ একযোগে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীন সফরকালে বিসিআইএম করিডর গঠনে আন্তরিকভাবে কাজ করার জন্য আগ্রহও প্রকাশ করেছেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরে বিসিআইএম’র অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হবে। বর্তমানে চীন ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১০ বিলিয়ন ডলার। দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ চীনকে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দেয়।
×