ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সহিংসতা ছেড়ে গণতান্ত্রিক পথে আসুন ॥ সুরঞ্জিত

প্রকাশিত: ০৪:২১, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪

সহিংসতা ছেড়ে গণতান্ত্রিক পথে আসুন ॥  সুরঞ্জিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সংঘাত-সহিংসতার সর্বনাশা পথ ছেড়ে নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক পথে ফিরে আসার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও প্রবীণ পার্লামেন্টারিয়ান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত। বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, এখনও সময় আছে সংঘাত ও জঙ্গীবাদের সর্বনাশা পথ পরিহার করুন, না হলে আগামীতে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। শুক্রবার রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘চলমান রাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনাসভার আয়োজন করে বঙ্গবন্ধু একাডেমি। আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ফয়েজ উদ্দিন মিয়া, ব্যারিস্টার জাকির আহমেদ। সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক রাজনীতি করলে আমাদের কোন আপত্তি নেই। কিন্তু দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে দৃঢ় হস্তক্ষেপে মোকাবেলা করা হবে। এটাই হবে সাংবিধানিক সরকারের দায়িত্ব ও কর্তব্য। সম্প্রতি রাজধানীর বকশীবাজারে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরার সময় বিএনপি-ছাত্রলীগের সংঘর্ষের ঘটনার বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর দায় কেবল ছাত্রদলের নয়, এর দায় বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট নেতাদেরও নিতে হবে; না হলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত খালেদা জিয়ার উদ্দেশে আরও বলেন, প্রমাণ করুন, আপনি এতিমের টাকা আত্মসাত করেননি বরং এতিমকে টাকা দিয়েছেন। আদালতে গিয়ে বিচারের মুখোমুখি হয়ে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করুন। আমরা আপনাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করব। আর যদি প্রমাণ হয় আপনি দোষী সে ব্যবস্থা আদালতই নেবে। আদালতে গিয়ে সহিংসতা চালাবেন এবং আদালতকে অবজ্ঞা করবেন তা গণতান্ত্রিক নেতা হিসেবে কাম্য নয়। গাজীপুর এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের বিষয়ে সুরঞ্জিত বলেন, ৫ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের সমাবেশ পূর্বঘোষিত কর্মসূচী। আপনারা (বিএনপি) অন্য কোনদিন সমাবেশের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করুন। এতে আমাদের কিছু বলার নেই। গাজীপুরের সভা একেবারে প্রশাসনিক ব্যাপার। প্রশাসনিক ব্যাপার প্রশাসনই নিষ্পত্তি করবে। এটা তাদের এখতিয়ার। কাউকে নৈরাজ্য করার সুযোগ দেয়া হবে না-খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ॥ খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র ২০১৩ সালের মতো দেশে আবারও নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর দেশে শান্তি ফিরে এসেছে। মানুষের মধ্যে এখন আর আতঙ্ক নেই। দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। এখন কাউকে আর নৈরাজ্য সৃষ্টির সুযোগ দেয়া হবে না। শুক্রবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বীরউত্তম খাজা নিজামুদ্দিন মিলনায়তনে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি করে বক্তব্য দেয়ায় তারেক রহমানের বিচার ও শাস্তির দাবিতে এই আলোচনাসভার আয়োজন করা হয়। সভাপতি হাসিবুর রহমান মানিকের সভাপতিত্বে আলোচনাসভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা। কামরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি একদিকে বিদেশী বন্ধুদের দিয়ে সরকারকে চাপ সৃষ্টি করছে, অন্যদিকে নাশকতার চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে তারা যতই চেষ্টা করুক, কোন লাভ হবে না। সন্ত্রাস করলে পরিণতি হবে ভয়াবহ। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে খালেদা জিয়া আদালতে যাবেন না বলেই গত বুধবার একটি অঘটন ঘটিয়েছেন। আগামী ৭ জানুয়ারি তিনি নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে আদালতে যাবেন না; তাই ক্ষেত্রটি তৈরি করছেন খালেদা জিয়া নিজে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ক্যাডার ও লাঠি নিয়ে আদালতে যাওয়া, এটা কোন্ ধরনের সংস্কৃতি? এ ধরনের আচরণ করে খালেদা জিয়া আদালতকে অপমান করেছেন। ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি ২০১৩ সালের মতো অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে আর কাউকে এমন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার সুযোগ দেয়া হবে না। বিএনপি এদেশের রাজনৈতিক শিষ্টাচার নষ্ট করেছে। তাই খালেদা ও তারেককে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে। তবেই এ দেশের রাজনীতিতে শিষ্টাচার ফিরে আসবে।
×