ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

গয়েশ্বর রায়কে গ্রেফতারের নিন্দা খালেদার

প্রকাশিত: ০৪:২১, ২৭ ডিসেম্বর ২০১৪

গয়েশ্বর রায়কে গ্রেফতারের নিন্দা খালেদার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গ্রেফতার, দলীয় নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা ও বাসায় বাসায় তল্লাশির তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বর্তমান ভোটারবিহীন সরকার এখন শেষ মরণ কামড় দেয়ার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর দমন-পীড়নের তীব্রতা বৃদ্ধি করেছে। জনগণকে কাছে টানতে না পেরে বিভৎস প্রতিহিংসায় মেতে উঠেছে। সব দেখে শুনে মনে হয় এই সন্ত্রাসী দুঃশাসনের প্রধান মুখপাত্র হচ্ছেন স্বয়ং বর্তমান অবৈধ সরকারের প্রধান। তার কাছে অহম ও ক্ষমতালিপ্সা বাংলাদেশের চেয়েও প্রিয় উল্লেখ করেন তিনি। বিএনপির দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম-মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, সরকার তার প্রতিহিংসার সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ ঘটাল গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে। এছাড়াও রাতে গ্রেফতারের উদ্দেশে ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের বাসায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তল্লাশিকে অবৈধ সরকারের দুর্বৃত্তায়িত চরিত্রেরই পুনরাবৃত্তি বলে উল্লেখ করেন। বিবৃতিতে খালেদা জিয়া আরও উল্লেখ করেন, এই অবৈধ সরকার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে, জাতীয় সংসদ দখল করে, জনগণের নাগরিক স্বাধীনতাকে হরণ করে মনে করেছিল চিরস্থায়ীভাবে ক্ষমতার রাজদ- ধরে রাখবে। আর এ জন্য তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নিজেদের অঙ্গসংগঠনগুলোকে দুর্বৃত্ত বাহিনীতে পরিণত করে বিএনপিসহ বিরোধীদলকে দমনে ব্যবহার করে যাচ্ছে। বিরোধীদলকে পর্যুদস্ত করার জন্য রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকেও অবৈধ আওয়ামী সরকারের প্রিয়জনদের দিয়ে সাজিয়ে সব ধরনের হিংসাত্মক অপতৎপরতা চলমান রাখা হয়েছে। আর সে জন্যই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা মামলা আর নির্বিচারে গ্রেফতার করতে এই অবৈধ আওয়ামী সরকারের জনপ্রশাসন অত্যন্ত পারঙ্গম। কিন্তু তারা বাংলাদেশের জনগণকে স্বস্তি ও নিরাপত্তা দিতে পারে না। তিনি বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা এখন ভয়াবহ সঙ্কটের মুখে। সাজানো প্রশাসন ও দুষ্কৃতকারী যুবলীগ-ছাত্রলীগের পা-াদের দিয়েই এই ভোটারবিহীন সরকার গুম, অপহরণ, গুপ্তহত্যার পথ ধরে জনগণের প্রতিবাদী স্বরকে থামাতে অপচেষ্টা করা, বিরুদ্ধ মত প্রকাশে কোন জায়গা না রাখা এবং রাজনৈতিক বন্দীদের ওপর অত্যাচার ও জুলুম অব্যাহত রেখেছে। আর এভাবে নিজেদের মসনদ গায়ের জোরে ধরে রাখতে তারা মূলত দেশের জনগণকেই পরাধীন করে রেখেছে। তিনি বলেন, গত ২৪ ডিসেম্বর আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে বকশীবাজার এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী সশস্ত্র পা-ারা যেভাবে পৈশাচিক হামলা করে তাতে মনে হয়, এই অবৈধ সরকার এক বর্বর হিংসাযুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। আর এই যুদ্ধে তারা মূলত জনগণকেই প্রতিপক্ষ বানিয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, একদলীয় অপশাসনের শৃঙ্খলে গোটা দেশকেই বন্দীশালায় পরিণত করা হয়েছে। উদ্বেল মিছিলে সংগ্রামী জনগণ এখন শৃঙ্খল ভেঙে এই অবৈধ ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতাবিলাসের যবনিকাপাত ঘটাতে ধেয়ে আসছে। বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। একই সঙ্গে বকশীবাজার এলাকায় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের পরিকল্পিত আক্রমণের ঘটনায় জনদৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে উল্টো বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল আউয়াল মিন্টু, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, আজিজুল বারী হেলাল, হাবিবুর রশীদ হাবিব, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান ও ইসাহাক সরকারসহ বিএনপি যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রায় শতাধিক নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।
×