ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জোড়া ভারতরত্ন, মোদির নয়া রাজনৈতিক চমক

প্রকাশিত: ০৪:৫৫, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৪

জোড়া ভারতরত্ন, মোদির  নয়া রাজনৈতিক চমক

ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী ও মদনমোহন মালব্যকে বুধবার ভারতরতœ খেতাব দেয়া হয়েছে। ঘটনাক্রমে তারা দু’জনই নিজেদের জন্মদিনের ঠিক একদিন আগে এ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক ঢিলে অনেক পাখি মেরেছেন বলে বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলছেন। আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন। বৃহস্পতিবার মোদির নিজের নির্বাচনী কেন্দ্র বারানসিতে যাওয়ার কথা রয়েছে। ফিরে এসে বাজপেয়ীর সঙ্গে দেখা করবেন। বড়দিনের আগে এমন দু’জনকে ভারতরত্ন দেয়ার জন্য বেছে নিলেন মোদি, যার বিরোধিতা ঘোর বিরোধিরাও করবে না বলে বিজেপি মনে করছে। কয়েকটি কারণে এতে থেকে মোদি রাজনৈতিক সুবিধা পাবেন। প্রথমত, হিন্দুত্ব ইস্যুর বিরোধিতা নিয়ে যখন বিরোধী শিবির একজোট হয়েছে, সেই সময় মোদি বাজপেয়ীকে সামনে আনলেন। সবার কাছেই বাজপেয়ীর মোটামুটি গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। কাশ্মীরের ওমর আবদুল্লাহ ও মেহবুবা মুফতিও বাজপেয়ীর সমর্থক। ওমর বাজপেয়ীকে ভারতরতœ দেয়ার দাবি তুলেছিলেন। মুফতিও বিজেপির সঙ্গে সমঝোতার রাস্তা খোলা রাখতে বাজপেয়ী সরকারের সঙ্গে ঘর করার কথা মনে করিয়েছেন। দ্বিতীয়ত, মুখে হিন্দুত্বের কথা না বললেও মোদি আগেই বাজপেয়ীর জন্মদিনকে ‘সুশাসন দিবস’ হিসেবে পালন করার কথা ঘোষণা করেছেন। উদ্দেশ্য বড়দিন পালনের বদলে সবার মনোযোগ বাজপেয়ীর দিকে ফেরানো। এ নিয়ে খ্রিস্টানদের একাংশ মোদির নিন্দা করেছে। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী নিবাসে খ্রীস্টানদের এক প্রতিনিধি দলকেও অবশ্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তৃতীয়ত বাজপেয়ীর নাম দলের ভেতরকার দ্বন্দ্ব চাপা দেয়া। দু’দিন আগেই মোদির দিকে তোপ দেগেছিলেন লালকৃষ্ণ আদভানি। ভারতরতœ ঘোষণার পরে আদভানি বলেন, অনেকদিন ধরে তিনি বাজপেয়ীকে ভারতরতœ দেয়ার সুপারিশ করেছিলেন। মোদি টুইট করেছেন, অটলজি সকলের কাছে ‘অনেক কিছু’ পথপ্রদর্শক, অনুপ্রেরণা ও সেরাদের সেরা। এছাড়া মালব্য হিন্দু জাতীয়তাবাদের কা-ারি হলেও তিনি কংগ্রেসের সভাপতিও ছিলেন দু’বার। লোকসভার প্রচারে নিজের কেন্দ্র বারানসিতে গিয়ে মালব্যকে ভারতরতœ দেয়ার দাবি তোলেন মোদি। এ বার নিজের সরকারে সেটি ঘোষণা করে কৃতিত্বটি নিজের ঝুলিতেই পুরলেন তিনি। মোদির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে কংগ্রেস। সাধুবাদ জানিয়েছেন, তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জী এবং জেডিইউ নেতা নীতীশ কুমার। দু’জনেই বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। তবে শিবসেনা বলেছে, দলের প্রতিষ্ঠাতা বাল ঠাকরের অবদান বাজপেয়ীর থেকে কোন অংশে কম নয়। তাই অবিলম্বে তাকেও মরণোত্তর ভারতরতœ সম্মানে ভূষিত করা হোক। মালব্যকে মরণোত্তর সম্মান দেয়ার সমালোচনা করেছেন ইতিহাসবিদ রামচন্দ্র গুহ।
×