ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

গরু ও হাঁস-মুরগির ভেজাল ওষুধ তৈরির কারখানা সিলগালা

প্রকাশিত: ০৫:২৯, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪

গরু ও হাঁস-মুরগির  ভেজাল ওষুধ তৈরির কারখানা সিলগালা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তিনি লেখাপড়া জানেন না। কিন্তু ভেজাল ওষুধ কিভাবে বানাতে হয় সেটা ভালই জানেন। গত ক’বছর ধরে গবাদিপশুর ওষুধ তৈরি করে দিব্যি বাজারজাত করেছেন। তার কাজের নৈপুণ্য দেখে কারোর পক্ষে তাকে নকল ফার্মাসিস্ট বলে সন্দেহ করাটাও ছিল কঠিন। এমনকি বুধবার যখন তার কারখানায় র‌্যাব হানা দেয় তখনও তাকে দেখে চমকে যায়। অবশ্য র‌্যাবের চোখে তিনি একজন পেশাদার প্রতারক ও ভেজাল ওষুধ প্রস্তুতকারক হিসেবে ধরা খেয়েছেন। এই নিপুণ ভেজাল কারিগরের নাম মেহেদী হাসান (২০)। তার অপরাধ হাতেনাতে প্রমাণ হওয়ায় তাকে তাৎক্ষণিক একলাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ওষুধ জব্দ ও কারখানা সিলগালা করা হয়েছে। রাজধানীর ১৭৮/ডি, রোড নং-০১ নিকুঞ্জ-০২, টানপাড়া, খিলক্ষেতের এই ওষুধ তৈরির অবৈধ কারখানায় হানা দেয় র‌্যাব-১। মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করেন র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম আনোয়ার পাশা । ওই বাড়ির মালিক তোফাজ্জল হোসেন (৬০)। টিনশেড বাড়ির একপাশে টিনের ছাপড়া তুলে গোবাদিপশুর ওষুধ তৈরির কারখানা স্থাপন করা হয়। এখানে তৈরি করা হতো গবাদিপশু ও হাঁস-মুরগির ওষুধ। ববিভেট-৩ পাওয়ারলাইট,পাওয়ার জাইম, রুমেনটিসহ ১৯ প্রকারের ওষুধ তৈরি করে বাজারজাত করা হচ্ছিল। ববিভেট-৩ ওষুধের লেবেলে ভারতের তৈরি লেখা থাকলেও তা এখানেই তৈরি করা হতো। অত্যন্ত নোংরা পরিবেশে তৈরি হতো এগুলো। অভিযানের সময় দেখা যায়, এ কারখানায় টিনের ছাপড়ার দুটি কক্ষে ওষুধ তৈরির বিভিন্ন কাঁচামাল, মোড়ক, লেবেল একসঙ্গে গাদাগাদি ফেলে রাখা হয়েছে। অশিক্ষিত ব্যক্তির মাধ্যমে ওষুধ তৈরি ও প্যাকিংয়ের কাজ চলছিল। নিয়ম অনুযায়ী কেমিস্ট ও ভেটেরিনারিয়ানের তত্ত্বাবধানে ওষুধ তৈরি বাধ্যতামূলক হলেও মেহেদী হাসানই সমুদয় কাজ পরিচালনা করছিলেন। কারখানায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। মিক্সার মেশিনটিও নষ্ট। প্লাস্টিকের বালতিতে কাঁচামাল নিয়ে তাতে মিশিয়ে ওষুধ তৈরি করা হচ্ছিল। হাতে তৈরি এসব উপকরণ প্যাকেটে ভরে হিট মেশিনের মাধ্যমে প্যাকেট সিল করে তাতে লেবেল লাগিয়ে তৈরি হচ্ছিল এসব ওষুধ।
×