ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জার্মানির দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা

প্রকাশিত: ০৫:০১, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪

জার্মানির দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দারুণ একটি বছর কাটিয়েছে জার্মান ফুটবল দল। সবচেয়ে বড় সাফল্যটা এসেছে মর্যাদার বিশ্বকাপ জয়ের মাধ্যমে। ২৪ বছর অপেক্ষার অবসান ঘটেছে। আর এর মাধ্যমে আবারও বিশ্বের সেরা দলে পরিণত হয়েছে জার্মানরা। ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে এক নম্বরে অবস্থান করছে দলটি। বছর শেষ হয়ে যাচ্ছে। আগামীকাল ক্রিসমাস উৎসবটা বেশ ভালভাবেই উপভোগ করতে পারবে জার্মান ফুটবলাররা। কিন্তু জার্মান ফুটবল ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট উলফগ্যাং নিয়ের্সবাখ আনন্দের আতিশয্যে ভুলতে চান না আগত ভবিষ্যত কর্মপন্থা। এখন থেকেই এ বিষয়টা মাথায় ঘুরছে তাঁর। নিয়ের্সবাখ মনে করেন, এখন পেছনের কথা ভুলে গিয়ে আগামীর কথা ভাবতে হবে। সে জন্য দশ বছর মেয়াদী একটি পরিকল্পনা সাজানোর ইচ্ছা তাঁর। ২০২৪ ইউরো আসরও জেতার লক্ষ্য নিয়ে এগোতে হবে। কোচ জোয়াকিম লো নিজেও প্রত্যাশা করছেন আগামী বছরগুলোতে ধারাবাহিকতা রাখতে পারবে। যেমনটা স্পেন টানা দুই ইউরো জিতেছিল, তেমন কিছুই করবে তাঁর শিষ্যরা এমন প্রত্যাশা এ কোচের। নিজেদের চতুর্থ বিশ্বকাপ শিরোপার জন্য অনেক বছর অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে। মাঝে পাঁচটি বিশ্বকাপ গেছে। কিন্তু শিরোপাটা অধরা থেকেছে। অবশেষে এবার ব্রাজিলের মাটিতে গিয়ে কাক্সিক্ষত শিরোপার দেখা পেয়েছে জার্মান শিবির। এমন একটি সাফল্য যে বছর এসেছে তাদের জন্য ক্রিসমাস উৎসবটা সবচেয়ে আনন্দমুখর হবে, এতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু নিয়ের্সবাখ এবার সাবধানী হতে চান। আবার যেন দীর্ঘ সময় শিরোপাশূন্য থাকতে না হয় সে জন্য এখন থেকেই দীর্ঘমেয়াদী কর্মপরিকল্পনা সাজানো জরুরী বলে মনে করেন তিনি। তাই শুধু ফুলশয্যায় শুয়ে কাটাতে নারাজ জার্মানরা। এ বিষয়ে নিয়ের্সবাখ বলেন, ‘আমাদের পেছনে যে বছরটি পরে গেল সেটা সত্যিই অসাধারণ ছিল। কিন্তু এই একটিমাত্র বছর এমন থাকা উচিত নয়। আমরা সে জন্য পেছনের সন্তুষ্টি নিয়ে পড়ে থাকতে চাই না। আর সে কারণে আমরা একটি দশ বছর মেয়াদী পরিকল্পনা করছি।’ উচ্চাকাক্সক্ষা নিয়ে গড়া এ পরিকল্পনায় দলের পারফরম্যান্সটা স্থায়ীভাবে ভাল করার ব্যবস্থাপত্র থাকছে। তবে অনেকেই জার্মান ফুটবলকে ব্যর্থই বলবে। গত ১৮ বছরে এই প্রথম কোন আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছে দলটি। ১৯৯৬ সালে সর্বশেষ ইউরো জিতেছিল জার্মানি। তাই জাতীয় দলের পরিচালক অলিভার বিয়েরহফ মনে করেন, দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনায় শুধু সাফল্য পাওয়ার চিন্তা থাকলে সেটা হিতে বিপরীতও হতে পারে। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যখন কেউ প্রথম হয় তখন কিছু একটা হারাতেও হয়। এভাবে ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চিন্তা করা সে জন্য আমি মনে করি বিপজ্জনক। আমরা এমন দুঃসময় ১৯৯০ সালের পর পেরিয়েছি। দশ বছর পর আমরা হঠাৎ ঘুম ভেঙ্গে জেগে বিষয়টা আঁচ করতে পেরেছিলাম।’ তবে দলকে অবিস্মরণীয় আরেকটি সাফল্য এনে দেয়ার কারিগর জোয়াকিম লো। তাঁর ক্ষুরধার পরিকল্পনা, নির্দেশনা এবং দক্ষ চালনায় শিষ্যদের বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন। তিনি দলের ওপর দারুণ আত্মবিশ্বাসী। জোয়াকিম লো মনে করেন, জার্মানরা আরও কিছু সাফল্য বয়ে আনতে সক্ষম হবে দেশের জন্য। এ বিষয়ে আশাবাদী এ কোচ বলেন, ‘আমরা আগামী একযুগ নিজেদের পদচিহ্নটা রাখতে চাই। বিশ্বকে ভালভাবেই জানাতে চাই আমরা আছি। আশা করছি খেলোয়াড়রা এ বছর যেভাবে খেলেছেন সেটা তাঁরা ধরে রাখতে সক্ষম হবেন।’ ফ্রান্সে ২০১৬ ইউরো জয়ের মাধ্যমে এখন জার্মানির লক্ষ্য ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপেও শিরোপা জেতার। এরপর ২০২০ ও ২০২৪ ইউরো এবং ২০২২ বিশ্বকাপ জিতে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব অটুট রাখার কর্মপন্থা সাজানো হচ্ছে। এ বিষয়ে ব্রাজিল বিশ্বকাপে জোয়াকিমের সহকারী হানসি ফ্লিক বলেন, ‘আমরা এখনও ক্ষুধার্ত।’ নিয়ের্সবাখ আরও বলেন, ‘আমরা সত্যিই খেলোয়াড়দের ওপর সন্তুষ্ট এবং কৃতজ্ঞ তাঁরা যা উপহার দিয়েছেন। আমাদের অর্জন নিয়ে আমাদের সন্তুষ্ট থাকা উচিত। তবে ২০২৪ পর্যন্ত সবকিছুই জিততে পারার মতো কর্মপন্থা সাজানো হলে তা অনেক ভাল হবে।’
×