ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অধিনায়ক স্মিথকে হ্যাডিনের স্বীকৃতি

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪

অধিনায়ক স্মিথকে হ্যাডিনের স্বীকৃতি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ তিনি সহঅধিনায়ক, সঙ্গে দলের অন্যতম অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। নিয়মিত অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের ইনজুরিতে ব্র্যাড হ্যাডিনের দায়িত্ব পাওয়াটা ছিল প্রায় নিশ্চিত। এমন কি এ্যাডিলেডে অনিশ্চিত হয়ে পড়ার পর ক্লার্কও তাই চেয়েছিলেন, পরিষ্কার বলে দিয়েছিলেন টেস্টের নেতৃত্বে হ্যাডিনকেই দেখতে চান তিনি। কিন্তু ব্রিসবেনে দ্বিতীয় টেস্টের একদিন আগে আচমকাই ঐতিহ্যবাহী দলের অধিনায়ক করা হয় ২৫ বছরের তরুণ স্টিভেন স্মিথকে। দায়িত্ব পাওয়ার অনুভূতি জানাতে গিয়ে স্মিথ প্রথমেই বলেছিলেন, মাঠে হ্যাডিনের অভিজ্ঞতাই তাঁর সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হবে। এবার ‘পিচ্চি স্মিথকে’ অধিনায়ক হিসেবে স্বীকৃতি দিলেন সেই হ্যাডিন। ‘প্রথমে ধন্যবাদটা ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) প্রাপ্য। তারা স্মিথের মতো একজন তরুণকে টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে বেছে নিয়ে দুর্ধর্ষ কাজটাই করেছে। আমি মনে করি এটা ওর জন্য উপযুক্ত সময়। সেরা কোন প্রতিভাবান যদি মাঠেও সেরা ফর্মে থাকে তবে অনেক কিছু নিয়ন্ত্রণ করা সহজ। স্মিথের ক্ষেত্রেও তাই হবে। গত দুই মৌসুমে ব্যাট হাতে অসাধারণ সময় পার করছে ও। দলে আসা তরুণদের মধ্যে স্মিথ ব্যতিক্রম; ও অনেক গুণে গুণান্বিত। মানুষকে সম্মান করতে জানে, আবার সাহায্য চাওয়ার কৌশলটাও সরল’Ñ বলেন বয়স ও খেলার দিক দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে সিনিয়র সদস্য হ্যাডিন। গাব্বার বাউন্সি উইকেটে অধিনায়কত্বের অভিষেকে স্মিথের শুরুটা হয় দুর্দান্ত। সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ম্যাচসেরার পুরস্কার তুলে নেয়ার পাশাপাশি ম্যাচ জিতে সিরিজে ২-০তে এগিয়ে যায় তাঁর দল অস্ট্রেলিয়া। স্মিথকে নিয়ে ব্যক্তিগত স্মৃতিচারণায় হ্যাডিন আরও যোগ করেন, ‘প্রথম যখন দলে আসে তখন ও আমাকে চেঞ্জ রুমে জিজ্ঞেস করেছিল কোন্ চেয়ারে বসবে। আমি বলেছিলাম তুমি যেখানে খুশি বসতে পার। এখন দেখছি ব্যাট হাতেও সে সব পজিশনে ফিট, নতুন ও পুরনো বলে সমান সাবলীল! মাঠে ওর জুটি হিসেবে খুব কাছে থেকে তা দেখছি।’ ২০০১ সালে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আসা হ্যাডিনের টেস্ট অভিষেক ২০০৮ সালে। এই ৩৭ পেরোনো বয়সেও উইকেটের পেছনে সমান দুর্দান্ত। ব্রিসবেনে ৯ ডিসমিসাল নিয়ে নাম লিখিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান রেকর্ডে। এ নিয়ে ক্যারিয়ারে দু’বার ৯ ডিসমিসালের কীর্তি গড়েন তিনি। ১০ ডিসমিসালে তাঁর চেয়ে এগিয়ে কেবল সাবেক তারকা এ্যাডাম গিলক্রিস্ট। স্মিথের প্রশংসা করতে গিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের সঙ্গে অনেকটা মজা করে বিজে (নিক নেম) বলেন, ‘দুর্ভাগ্য যে অধিনায়ক হিসেবে স্মিথের দুরন্ত অভিষেকের মাঝে আমার কীর্তিটা ঢাকা পড়ে গেল, তবু আনন্দের শেষ নেই!’ ওদিকে গাব্বায় প্র্যাকটিসের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সফরকারী অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি যে অভিযোগ তুলেছেন- সেটি উড়িয়ে দিয়ে কড়া জবাব দিয়েছেন প্রথম টেস্টে জয়ের নায়ক নাথান লিয়ন। অভিজ্ঞ অসি স্পিনার বলেন, ‘হারলে কারোই মাথা ঠিক থাকে না! ঐতিহাসিক ব্রিসবেনের সুবিধা নিয়ে অতীতে কোন দলই অভিযোগ তোলেনি। এছাড়া আমার মনে হয় যেকোন পরিস্থিতিতে আম্পায়ারদের সিদ্ধান্তে সম্মান রাখা উচিত। দুই ক্ষেত্রেই ধোনি কাজটা ভাল করেননি।’ ডিআরএস না থাকায় চলতি সিরিজে রিভিউর নিয়ম নেই। আম্পায়ারদের একাধিক সিদ্ধান্ত তাঁর দলের বিরুদ্ধে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন ধোনি, শেষোক্ত বাক্যে তারই জবাব দেন শেন ওয়ার্নের পর অস্ট্রেলিয়ার নির্ভরযোগ্য স্পিনার লিয়ন। এ্যাডিলেডের পর ব্রিসবেনেও টানা দুই হারে কোণঠাসা ক্রিকেট-মোড়ল ভারত। সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে বক্সিং ডে টেস্টে জিততেই হবে সফরকারীদের। শুক্রবার শুরু হতে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই ব্যর্থতা ঝেড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ধোনি। অতিথি অধিনায়ক বলেন, ‘চার টেস্টের লড়াইয়ে ২-০তে পিছিয়ে পড়া মানে সিরিজ শেষ হয়ে যাওয়া নয়। এই দুই ম্যাচের মতো মেলবোর্নেও আমরা ইতিবাচক, জয়ের জন্য নামব। আমাদের এই দলের অনেকেরই অস্ট্রেলিয়া সফরের অভিজ্ঞতা নেই। অথচ দুটি ম্যাচেই ছেলেদের চেষ্টা দেখে ভাল লাগছে। সবাই শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছে। মেলবোর্নেও আমরা আক্রমণাত্মক খেলা চালিয়ে যাব।’ ভারতের জন্য কিছুটা সুসংবাদ ইনজুরি কাটিয়ে সুস্থতার পথে সাম্প্রতিক সময়ে দলটির সেরা পেস বোলার ভূবনেশ্বর কুমার। দলের সঙ্গে যোগ দেয়া নবীন তারকা ব্যাটিং প্র্যাকটিস করেছেন, অবশ্য একাদশে অন্তর্ভুক্ত হবেন কিনা, তা দেখতে নির্বাচকরা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকবেন।
×