জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ বলেছেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে সরকার। জনগণের জানমাল রক্ষার চেয়ে বড় আর কোন দায়িত্ব নেই। ইসলামাবাদে এক বৈঠকে ভাষণ দেয়ার সময় এ সব কথা বলেন তিনি। খাইবার পাখতুনখোয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখার জন্য বলেছে প্রাদেশিক সরকার। বর্তমানে প্রদেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শীতকালীন ছুটি চলছে। যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো না খোলার জন্য নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা অধিদফতর। আজ বুধবার প্রধানমন্ত্রী হাউসে সংসদীয় দলের নেতাদের বৈঠক ডেকেছেন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ। এই বৈঠকে সন্ত্রাসবাদ দমনে জাতীয় কর্মপরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে। পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান সোমবার আর্মি পাবলিক স্কুল এবং নিহত শিশু ও শিক্ষকদের বাড়িতে যান। এ সময় তিনি পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানান। এদিকে গণমাধ্যমকে মারাত্মক পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুমকি দিয়েছে তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)। খবর ডন অনলাইনের।
দেশে সন্ত্রাসবাদের ভয়াবহতা বিষয়ে ইসলামাবাদে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ বলেন, পেশোয়ার, কোয়েটা এবং ওয়াগায় জঙ্গীদের বর্বরতা আমরা ভুলতে পারব না এবং তাদের ক্ষমাও করতে পারব না। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের কোন বিকল্প নেই। এর আগে এক বৈঠকে সন্ত্রাসবাদকে বিন্দুমাত্র ছাড় না দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ তাঁর মঙ্গলবারের সকল নির্ধারিত কর্মসূচী বাতিল করেন এবং সন্ত্রাসবাদ বিষয়ে সংস্কারের জন্য পুরো দিন ব্যয় করার ঘোষণা দেন।
এদিকে খাইবার পাখতুনখোয়ার প্রাদেশিক সরকার ঘোষণা করেছে যে, শুধু নিরাপত্তা নিশ্চিত হলেই কেবল বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলো খোলা যাবে। কর্তৃপক্ষ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার আগে স্ব স্ব জেলার পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করতে বলেছে। ১৬ ডিসেম্বর আর্মি পাবলিক স্কুলে নারকীয় হামলার প্রেক্ষিতে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, নির্দেশনায় শিক্ষা অধিদফতর বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোকে প্রশাসনিক ভবনে পরিদর্শকদের ব্যাপারে কঠোর হওয়ার জন্য বলেছে। এ নির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাড়া অন্য ছাত্রদের হোস্টেলগুলো উচ্ছেদ করার কথাও বলা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যে সব গাড়ি প্রবেশ করবে সেগুলো যথাযথভাবে পরীক্ষা করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে দেয়ার আগে পরিদর্শক এবং গাড়িচালকদের বিস্তারিত জানার পর তাদের প্রবেশের অনুমতি দিতে প্রহরীদের প্রতি নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়া কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে আরও নিরাপত্তা মোতায়েনের জন্য বলা হয়েছে।
এদিকে টিটিপির মুখপাত্র মোহাম্মদ খুরাসানি বলেন, গত দু’দিনে তাঁর সংগঠনের ১২০ জঙ্গী নিহত হয়েছে। সোমবার দিনশেষে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে খুরাসানি টিটিপির এই ক্ষয়ক্ষতিকে আমল না দেয়ার জন্য গণমাধ্যম এবং বুদ্ধিজীবীদের দোষারোপ করেন। নিরাপত্তা বাহিনীকে সমর্থন দেয়ার জন্য গণমাধ্যমকে মারাত্মক পরিণতি ভোগ করতে হবে বলেও হুমকি দেন তিনি।