ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

তথ্য গোপন করে টাকা তুলছে শাশা ডেনিমস

প্রকাশিত: ০৩:১৬, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪

তথ্য গোপন করে টাকা তুলছে শাশা ডেনিমস

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ মূল্য সংবেদনশীল তথ্য গোপন করে পুঁজিবাজার থেকে ১৭৫ কোটি টাকা তুলছে শাশা ডেনিমস। আর এটি করতে গিয়ে ৭৭ কোটি টাকার সম্পদ বা মালিকানা হারাচ্ছেন কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকরা। ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া অর্থবছরে শাশা ডেনিমসের প্রকৃত শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) ছিল ৭৯.৬৫ টাকা। আর ওই অর্থবছরের জন্য বোনাস শেয়ার দেওয়ায় রিস্টেট (পুনর্মূল্যায়নসহ) এনএভিপিএস দাঁড়ায় ৬৬.৩৭ টাকা। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ এ তথ্য প্রকাশ করেনি। ৬৬.৩৭ টাকা এনএভিপিএসের শাশা ডেনিমস প্রতি শেয়ারে ৩৫ টাকা মূল্যে টাকা উত্তোলন শুরু করেছে। এতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) পরবর্তী এনএভিপিএস দাঁড়াবে ৫০.৩৮ টাকা। যেখানে আইপিও পূর্ববর্তীদের প্রতি শেয়ারে লোকসান হবে ১৬ টাকা। আর আইপিও বিজয়ীরা প্রতি শেয়ারে লাভবান ১৫.৩৮ টাকা করে। আইপিও পূর্ববর্তী শেয়ারহোল্ডারদের মোট সম্পদের পরিমাণ আছে ৩১৯ কোটি ১২ লাখ ৮২ হাজার টাকার। তবে ৩৫ টাকা মূল্যে পুঁজিবাজারে আসার কারণে তাদের এই সম্পদের পরিমাণ কমে দাঁড়াবে ২৪২ কোটি ২০ লাখ ৬২ হাজার টাকা। যেখানে উদ্যোক্তা পরিচালকদের বা আইপিও পূর্ববর্তী শেয়ারহোল্ডারদের ৭৬ কোটি ৯২ লাখ ১৯ হাজার টাকার লোকসান হবে। ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়া অর্থবছরের আইপিও পূর্ববর্তী কোম্পানিটিতে মোট শেয়ার সংখ্যা আছে সাড়ে ৪ কোটি ৮০ লাখ ৬ হাজার ২০০টি। আইপিওর মাধ্যমে সংগৃহীত ৫ কোটি নিয়ে যোগ হয়ে মোট দাঁড়াবে ৯ কোটি ৮০ লাখ ৬ হাজার ২০০টি। আইপিও পূর্ববর্তী প্রতি শেয়ারে শাশা ডেনিমসের সম্পদ মূল্য আছে ৬৬.৩৭ টাকা। আর আইপিওতে ৫ কোটি শেয়ার যোগ হলেও পূর্বের মতো সম্পদ যোগ হচ্ছে না। কিন্তু আইপিওতে আসা নতুন শেয়ারহোল্ডাররাও শেয়ার সংখ্যা অনুপাতে কোম্পানির মোট সম্পদের ওপর সমান অধিকার পাবেন, যাতে বিদ্যমান উদ্যোক্তা পরিচালকদের বিপুল পরিমাণ ছাড় দিতে হচ্ছে। প্রসপেক্টাসে প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী কোম্পানিটির সম্পদের ন্যায় ব্যবসায়িক সফলতাও উল্লেখ করার মতো। যেখানে সর্বশেষ অর্থবছরে ইপিএস হয়েছে ৩.৭৩ টাকা করে। তারপরও কোম্পানিটি সম্পদ মূল্য থেকে অনেক কম দরে পুঁজিবাজারে আসছে। কোম্পানিটিতে মূলধনের তুলনায় সম্পদ অনেক হলেও ফলাফল নাজুক। ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর কোম্পানিটিতে মূলধন ৪০ কোটি টাকা হলেও শেয়ারহোল্ডারদের মোট ইক্যুইটির পরিমাণ (রিভ্যালুয়েশন সারপ্লাসসহ) ৩১৯ কোটি ১২ লাখ টাকা। ব্যবসায় এই টাকার সম্পদ ব্যবহার করা হলেও ইপিএস গণনা করা হয় পরিশোধিত মূলধন ৪০ কোটি টাকা দিয়ে। এক্ষেত্রে ২০১৩ সালে ইপিএস হয়েছে ৩০.৭৩ শতাংশ। কিন্তু ৩১৯ কোটি টাকা দিয়ে গণনা করে রিটার্ন অন ইক্যুইটি হয় ৪.৬৮ শতাংশ, যা সম্পদ বা ইক্যুইটি ব্যবহারের তুলনায় কোম্পানিটির পারফরম্যান্স শোচনীয়। কিন্তু কোম্পানি কর্তৃপক্ষ বাড়িয়ে ৭ শতাংশ দেখিয়েছে।
×