ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা রিয়াল মাদ্রিদের

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ২২ ডিসেম্বর ২০১৪

ক্লাব বিশ্বকাপ শিরোপা রিয়াল মাদ্রিদের

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ অবশেষে বিশ্বসেরা হলো রিয়াল মাদ্রিদ! স্প্যানিশ পরাশক্তিরা বিশ্বের অন্যতম সেরা ও জনপ্রিয় ক্লাব হওয়া সত্ত্বেও এতদিন বিশ্বসেরার মর্যাদা পায়নি। সেই বন্ধ্যত্ব এবার ঘুচেছে। শনিবার রাতে ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে আর্জেন্টাইন ক্লাব সান লরেঞ্জোকে ২-০ গোলে হারিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বসেরার তকমা জিতেছে রিয়াল। এই প্রথম স্প্যানিশ পরাশক্তিরা বিশ্বের সেরা ক্লাবের মর্যাদা পেল। মরক্কোর মারাকেশ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনাল ম্যাচে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের হয়ে গোল করেন ডিফেন্ডার সার্জিও রামোস ও ফরোয়ার্ড গ্যারেথ বেল। রেকর্ড ১০ বারের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা সেমিফাইনালে ক্রুজ এ্যাজুলকে হারিয়েছিল ৪-০ গোলে। ওই ম্যাচে গোল পাওয়া রামোস, বেল চূড়ান্ত মহারণেও প্রতিপক্ষের জাল খুঁজে পেয়েছেন। এ নিয়ে ২০১৪ সালটা অসাধারণ সাফল্যগাথা দিয়ে শেষ করল রিয়াল। গত হতে যাওয়া বছরে মোট ৪টি শিরোপা জিতল কার্লো আনচেলত্তির দল। এগুলো হলোÑ উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ, কোপা ডেল রে, ইউরোপিয়ান সুপার কাপ ও ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। শুধু তাই নয়, স্প্যানিশ লা লিগায়ও পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থেকে বছর শেষ করেছে রিয়াল। ক্লাব বিশ্বকাপে রিয়ালের হয়ে দুটি ম্যাচেই আলো ছড়ান ডিফেন্ডার সার্জিও রামোস। সেমিফাইনাল ও ফাইনালে গোল করা ছাড়াও দুর্দান্ত ধারাবাহিক পারফর্মেন্স প্রদর্শন করেন। যে কারণে স্প্যানিশ তারকা আসরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ‘গোল্ডেন বল’ এ্যাওয়ার্ড জিতেছেন। সিলভার বল জিতেছেন রিয়ালের প্রাণভোমরা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। আসরের সবচেয়ে সুশৃঙ্খলিত দলের পুরস্কার ফিফা ফেয়ার প্লে এ্যাওয়ার্ডও জেতে নিয়েছে চ্যাম্পিয়ন রিয়াল মাদ্রিদ। আসাধারণ সাফল্যগাথার কারণে কোচ কার্লো আনচেলত্তি বলেছেন, রিয়াল মাদ্রিদই এখন বিশ্বের সবচেয়ে সেরা ক্লাব। এই ম্যাচে রিয়ালের হয়ে ‘৭০০’ ম্যাচ খেলার মাইলফলক স্পর্শ করেছেন দলটির অধিনায়ক ও গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াস। আসরে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে নিউজিল্যান্ডের ক্লাব অকল্যান্ড সিটি। স্থান নির্ধারণী ম্যাচে তারা পেনাল্টি শূটআউটে ৪-২ গোলে হারায় ক্রুজ এ্যাজুলকে। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা অমীমাংসিত ছিল ১-১ গোলে। দক্ষিণ আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন লরেঞ্জোকে হারিয়ে টানা জয়ের রেকর্ডটাকে ২২-এ নিয়ে গেছে রিয়াল। সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা জয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়তে গ্যালাক্টিকোদের দরকার আর মাত্র দুই জয়। ইতিহাস, ঐতিহ্য, সাফল্য আর শক্তির তুলনায় আর্জেন্টাইন ক্লাবটির চেয়ে অনেক এগিয়ে রিয়াল। পাশাপাশি টানা জয়ের রেকর্ড গড়ার আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলতে নামে স্প্যানিশ ক্লাবটি। এরপরও অবশ্য ম্যাচে প্রথম গোলের দেখা পেতে রিয়ালকে রীতিমত ঘাম ঝরাতে হয়। প্রথম ৩৫ মিনিটে তেমন কোন সুযোগ সৃষ্টি করতে পারেনি ইউরোপের সফলতম দলটি। অবশেষে ৩৭তম মিনিটে রামোসের নৈপুণ্যে এগিয়ে যায় রিয়াল। জার্মানির মিডফিল্ডার টনি ক্রুসের কর্নারে হেড করে গোল করেন স্পেনের এই ডিফেন্ডার। বিরতির পর ৫১ মিনিটে লরেঞ্জোর গোলরক্ষকের ভুলে দ্বিতীয় গোল পায় রিয়াল। স্প্যানিশ মিডফিল্ডার ইস্কোর ইসকোর পাস পেয়ে ডি বক্সের মধ্যে থেকে শট নেন বেল। ওয়েলসের এই ফরোয়ার্ডের শট আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক সেবাস্টিয়ান টোরিকোর হাতে নিচ দিয়ে জালে প্রবেশ করে। বাকি সময়ে আর কোন গোল না হলে ২-০ ব্যবধানের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে রিয়াল। ম্যাচ শেষে উচ্ছ্বাস আর আবেগ সামলাতে পারেননি রিয়াল কোচ কার্লো আনচোলত্তি। তিনি বলেন, এই শিরোপাটা আমাদের পাওনা ছিল। এটি আমাদের অপেক্ষায় ছিল। কোন সন্দেহ নেই আমরা এই শিরোপার যোগ্যতর দল। আমরা এখন বলতেই পারি, রিয়াল মাদ্রিদ বিশ্বের সেরা ফুটবল দল। দারুণ একটি বছর কাটিয়ে সুখে যেন ভাসছেন ইতালিয়ান কোচ। বলেন, এই বছরটা দারুণ গেছে। সত্যিই এই বছরটা সারাটা জীবন মনে রাখবে রিয়াল-সংশ্লিষ্টরা। আমরা এখন সত্যিকারের একটি দল। দারুণ একটা পরিবারও। আনচেলত্তি আরও বলেন, আমরা এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চাই। কারণ, এই মৌসুম এখনও শেষ হয়নি। আগামী বছর আমাদের আরও পরিশ্রম করতে হবে। টুর্নামেন্ট সেরা রামোসের প্রশংসা করে তিনি বলেন, রামোস এ বছর দুর্দান্ত খেলেছে। সে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনাল ও ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে গোল করেছে। প্রয়োজনের সময় দলের জন্য রামোস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
×