ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রুগ্ন পাটশিল্পের রুগ্ন অফিস ॥ তালাবদ্ধ সর্বক্ষণ

প্রকাশিত: ০৩:১২, ২২ ডিসেম্বর ২০১৪

রুগ্ন পাটশিল্পের রুগ্ন অফিস ॥ তালাবদ্ধ সর্বক্ষণ

রাজু মোস্তাফিজ, কুড়িগ্রাম থেকে ॥ রুগ্ন পাটশিল্পের মতো পাট অধিদফতরের রুগ্ন কুড়িগ্রাম অফিস কালের সাক্ষী হয়ে আছে একই ভাড়া বাড়িতে দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে। অজানা কারণে এই ডিজিটাল যুগে মুখ্য পাট পরিদর্শকের কার্যালয়টি ভাঙ্গাচোরা পুরনো টিনশেড ভবনে চলছে মূলত কাগজে কলমে। তালা ঝোলে দিনে-রাতে। দেখার যেন কেউ নেই। জানা যায়, পাটচাষী, ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্ক উন্নয়ন তথা পাটশিল্পের উৎকর্ষ সাধনে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী, নাগেশ্বরী ও সদর উপজেলায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অধীন পাট অধিদফতরের তিনটি অফিস রয়েছে। স্বাধীনতার বছর দুই আগে থেকে কুড়িগ্রাম সদরে মুখ্য পাট পরিদর্শকের কার্যালয় এবং বাকি উপজেলায় দুটি শাখা অফিস কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ৪৫ বছর ধরে একই জরাজীর্ণ ভাড়া বাড়িতে অফিসটি বর্তমান। বর্তমান বাড়ি ভাড়া ২৫০০ টাকা। একই মূল্যে আধুনিক সুবিধাসহ উন্নত বাড়ি ভাড়া একই এলাকায় পাওয়া সম্ভব। অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাড়ির মালিকের কোন যোগসাজশে বাড়ি ভাড়া বেশি দেখিয়ে আত্মসাত করা হতে পারে বলে স্থানীয়দের ধারণা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অফিসটি সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে চলছে মূলত কাগজে-কলমে। মাঠে-ঘাটেও নেই পাট অফিসের কার্যক্রম। অফিসে এলেও কারও দেখা মেলে না। সরেজমিন পুরনো কুডিগ্রাম শহরের কুড়িগ্রাম-ভুরুঙ্গামারী সড়কসংলগ্ন অফিসে গিয়ে দেখা যায় অফিস বন্ধ। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অফিসের কাউকেই পাওয়া যায়নি। আশপাশে খোঁজ করে জানা যায়, সকালে একবার অফিস খুলে দু’কর্মকর্তা উধাও হয়ে যান। এক পর্যায়ে মোবাইল নম্বর খুঁজে তাদের সাংবাদিক পরিচয়ে খবর দিয়ে আনা হয় অফিসে। মুখ্য পাট পরিদর্শক আবদুল কাদের জানান, জেলার তিনটি অফিসেই প্রয়োজনীয় লোকবল ও অর্থ যোগান না থাকায় খুবই কষ্টের মধ্যে তাদের কার্যক্রম চালাতে হয়। জেলা অফিসে ৫টি পদের বিপরীতে মাত্র ২ জন কর্মরত। এছাড়া চিলমারী ও নাগেশ্বরী উপজেলায় ১টি পরিদর্শক ও ২টি সহকারী পরিদর্শকের পদ থাকলেও উপজেলা দু’টিতে একজন করে সহকারী পরিদর্শক পরিদর্শকের দায়িত্বে কর্মরত আছেন। জেলা অফিসের দু’জন কর্মকর্তাকে প্রায়ই বাইরে ফিল্ডে যেতে হয়। দুপুরের পরে অফিস বন্ধ থাকলেও প্রতিদিনই সকালে খোলা হয়। দীর্ঘদিন ধরে এই ভাঙ্গাচোরা পুরনো বাড়িতে অফিস কার্যক্রম কি কারণে চলছে এ বিষয়ে তিনি বলেন, স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই এই বাড়িতে অফিস ছিল। বাজেট বরাদ্দ না থাকায় ভাল বাড়িতে অফিস নেয়া যাচ্ছে না।
×