ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

তারেক ক্ষমা না চাইলে খালেদাকে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ২১ ডিসেম্বর ২০১৪

তারেক ক্ষমা না চাইলে খালেদাকে সমাবেশ করতে দেয়া হবে না

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে কটূক্তি করে ‘মিথ্যা বক্তব্য’ দেয়ার প্রতিবাদ জানিয়েছে ছাত্রলীগ। একই সঙ্গে তারেককে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। যদি তা না করা হয় তবে খালেদা জিয়াকে কোন ধরনের সভা-সমাবেশ করতে না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। শনিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আয়োজিত এক বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেয়া হয়। সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে তারেক যে ‘মিথ্যা বক্তব্য’ দিয়েছে তা অবিলম্বে প্রত্যাহার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে। তাকে (তারেক রহমান) বিএনপি থেকে বহিষ্কার করতে হবে। যদি তা না করা হয় তবে যেখানে তিনি (খালেদা) সমাবেশ করবেন সেখানেই ছাত্রলীগ সমাবেশ ডাকবে। তাকে প্রতিহত করা হবে। ছাত্রলীগ সভাপতির বক্তব্য সমর্থন করে খাদ্যমন্ত্রী এ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠু ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে হলে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে। এই দায়িত্ব ছাত্রলীগকেই পালন করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা সব সময় শুধু আন্দোলনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু তারা জানে না রাতের আঁধারে বৈঠক করে রাজপথের আন্দোলন হয় না। রাজপথে আন্দোলন করতে হলে ঘর থেকে বের হয়ে রাজপথে নামতে হবে। রাজপথে নেমে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন করলে সরকার তাতে বাধা দেবে না। কিন্তু ২০১৩ সালের মতো জঙ্গীবাদী স্টাইলে জ্বালাও-পোড়াও করলে তা নিয়মতান্ত্রিকভাবে প্রতিহত করা হবে। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, তারেক রহমানের মতো উন্মাদ পাগলকে নিয়ে আমি কোন মন্তব্য করব না। কারণ বাংলার মানুষ জানে যে দুর্নীতির দায়ে মুচলেকা দিয়ে দেশের মাটি থেকে বিদেশে পালিয়ে থাকে তাকে দিয়ে এর চেয়ে ভাল কোন বক্তব্য বা ভাল কোন কিছু আশা করা সম্পূর্ণই অসাড়। সমাবেশে বক্তারা বলেন, ক্রমাগত মিথ্যাচার এবং একটি দেশের প্রতিষ্ঠাতা ও অবিসংবাদিত নেতাকে নিয়ে শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য দিয়ে তারেক নিকৃষ্ট অপরাধ করছে। দেশের বাইরে থেকে কিছুদিন পর পর এ রকম বক্তব্য দিয়ে নিছক আলোচনায় থাকার উদ্দেশ্যে এ রকম মিথ্যাচার কোন সভ্য মানুষ করতে পারে না। তাকে অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এ সময় বদিউজ্জামান সোহাগের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি লিয়াকত শিকদার, মাহমুদ হাসান রিপন, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্যা মোহাম্মদ আবু কাউসার, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর হায়দার চৌধুরী রোটন প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন সহসভাপতি জয়দেব নন্দি, যুগ্ম সম্পাদক শামসুল কবির রাহাত, কেন্দ্রীয় সদস্য এনামুল হক প্রিন্সসহ সংগঠনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও ইউনিটের নেতাকর্মীরা। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। উল্লেখ্য, গত ১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার লন্ডনের এক আলোচনা সভায় তারেক জিয়া জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে ‘রাজাকার’ ও ‘পাকবন্ধু’ বলে বক্তব্য দেয়। এরপর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা ও প্রতিবাদের শুরু হয়। এরই অংশ হিসেবে দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচীর ঘোষণা দেয় সংগঠনটি। দেশের বিভিন্ন স্থানে তারেকের কুশপুতুলে আগুন কেন্দ্রের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে শনিবার বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচী পালন করেছে ছাত্রলীগ। জাতীয় প্রেসক্লাব, গাজীপুর, রংপুর, বগুরা, নওগাঁ, রাজশাহী, রাজশাহী মহানগর, নীলফামারী, সিরাজগঞ্জ, গাইবান্ধা, বরিশাল, খুলনা, যশোর, মাগুরা, ঝিনাইদহ, সিলেট, চট্টগ্রাম মহানগর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, ঝালকাঠি, পটুয়াখালী, বরগুনা, রাজবাড়ী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গোপলগঞ্জ, ফরিদপুর, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, নড়াইল, মেহেরপুর, বাগেরহাট, জামালপুর, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা উত্তর, মুন্সীগঞ্জসহ প্রায় ৫৭টি জেলায় এই কর্মসূচী পালিত হয়েছে।
×