ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সাতকানিয়ায় বাস বেবিট্যাক্সি সংঘর্ষে ৫ জন নিহত অন্যত্র ৮

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ২১ ডিসেম্বর ২০১৪

সাতকানিয়ায় বাস বেবিট্যাক্সি সংঘর্ষে ৫ জন নিহত অন্যত্র ৮

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ দেশের বিভিন্নস্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৩ জন নিহত এবং কমপক্ষে ২১ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় পাঁচজন, কিশোরগঞ্জের ভৈরবে তিনজন, মুন্সীগঞ্জে দুইজন এবং যশোর, লালমনিরহাট ও কুষ্টিয়ায় একজন করে নিহত হয়। শুক্রবার রাত ও শনিবার পৃথক দুর্ঘটনায় এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার আরাকান সড়কের সাতকানিয়া মৌলভীর দোকান এলাকায় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় সিএনজির পাঁচ আরোহী প্রাণ হারিয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যায় এ দুর্ঘটনার পর আরাকান সড়কে যানবাহন চলাচল বিঘিœত হয়। নিহত সবাই স্থানীয় বলে জানা যায়। এ রিপোর্ট লেখার সময় দোহাজারি থেকে সাতকানিয়া-কেরানীরহাট পর্যন্ত যানজট লেগেছিল। স্থানীয়রা জানান, সন্ধ্যা ছয়টার দিকে চট্টগ্রামগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মুখেমুখি সংঘর্ষ হয় বিপরীতমুখী সিএনজি চালক বেবিটেক্সির। দ্রুতগামী বাসটির সঙ্গে সংঘর্ষের পরই দুমড়েমুচড়ে যায় টেক্সিটি। টেক্সিটি কেরানীরহাট এলাকায় যাত্রী নিয়ে যাচ্ছিল দোহাজারি থেকে। ওই টেক্সির পাঁচ আরোহীর সকলেই ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান। এ ঘটনার পর পরই যাত্রীবাহী বাসের চালক ও হেলপার পালিয়ে যায়। মৌলভীর দোকানের পাঠানীপুল এলাকার লোকজন দ্রুত এগিয়ে আসে। রাস্তার ওপর এ দুর্ঘটনার কারণে লেগে যায় যানজট। নিকটস্থ হাইওয়ে পুলিশের দল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছিল। ভৈরবে হত তিন ॥ শনিবার ভোরে ঘন কুয়াশার কারণে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ সড়কের কুলিয়ারচরে মনোহরপুর এলাকায় যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে রাস্তার পাশে উল্টে ঘটনাস্থলেই মহিলাসহ তিনজন নিহত এবং কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। নিহতরা হলোÑ জসিম উদ্দিন (৬০), উম্মেজা খাতুন (৫৫) ও জাহেরা খাতুন (৭০)। এদের প্রত্যেকের বাড়ি ময়মনসিংহের নান্দাইলে বলে পুলিশ জানায়। এলাকাবাসী, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আহতদের উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠায়। গুরুতর আহত নয়জনকে ভাগলপুর জহুরুল ইসলাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মুন্সীগঞ্জে চালক-হেলপার নিহত ॥ চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী একটি ট্রাক গজারিয়ার বালুয়াকান্দিতে শনিবার সকালে বিকল হয়ে পড়ে। এ সময় চালক নিলু ও হেলপার ফিরোজ তা মেরামত করতে গাড়ির নিচে যায়। হঠাৎ গাড়িটি ঝুল খেয়ে চলতে শুরু করে। এতে তারা ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলে মারা যায়। লাশ উদ্ধার করে গজারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। ট্রাকটি পুলিশ হেফাজতে গজারিয়া থানায় রাখা আছে। কুষ্টিয়া, লালমনিরহাট ও যশোরে একজন করে হত ॥ কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে শনিবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে কয়েক শ্রমিক কিছু সরঞ্জাম নিয়ে নসিমনযোগে লক্ষীপুরে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে কুমারগাড়ায় বিপরীত দিক থেকে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাস নসিমনকে ধাক্কা দেয়। এতে নসিমনের চালক গুরুতর আহত হলে তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান। শুক্রবার রাত সাতটায় জেলা সদরের বিডিআর গেট দুর্গাপুর সড়কে মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে সাইকেল আরোহী আব্দুর রহমান (৪৫) ঘটনাস্থলে মারা গেছে। দুর্ঘটনার পর মোটরসাইকেল ফেলে আরোহীরা পালিয়ে যায়। পথচারীরা মোটরসাইকেলটি আটক করেছে। এ ঘটনার পর বিক্ষুব্ধ জনতা গভীর রাত পর্যন্ত রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে রাখে। পরে উর্ধতন পুলিশ কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে ব্যারিকেড তুলে নেয়া হয়। স্কুলছাত্রী মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না পিতা মিজানুর রহমানের (২৯)। দ্রুতগামী পরিবহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে তিনি ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন শিশুকন্যা জান্নাতুল ফেরদৌস (৭)। শনিবার বেলা ১১টার দিকে যশোর শহরের আরবপুর মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত মিজানুর রহমান শহরতলীর বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শী ও নিহতের স্বজনরা জানান, প্রতিদিনের মতো শনিবারও শিশুকন্যা জান্নাতুল ফেরদৌসকে শহরের স্কুল থেকে নিয়ে সাইকেলযোগে বাড়ি ফিরছিলেন মিজানুর রহমান। এদিন যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়কের যশোর শহরের আরবপুর মোড় পার হওয়ার সময় দ্রুতগামী শাপলা পরিবহন তাকে চাপা দেয়। ঘটনাস্থলেই নিহত হন মিজানুর রহমান। রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে আহত হয় শিশুকন্যা জান্নাতুল ফেরদৌস। তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ওই হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে।
×