ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

হয়রানির শিকার হচ্ছে নিরীহরা

সিলেট বিমানবন্দর সংলগ্ন জমির মালিকানা জটিলতা

প্রকাশিত: ০৩:৪৯, ২১ ডিসেম্বর ২০১৪

সিলেট বিমানবন্দর সংলগ্ন জমির মালিকানা জটিলতা

স্টাফ রিপোর্টার সিলেট অফিস ॥ সিলেট ওসমানী বিমানবন্দর সংলগ্ন বেশ কিছু ভূমির মালিকানা নিয়ে সিভিল ডিফেন্সের সঙ্গে সৃষ্ট জটিলতার কারণে নিরীহ লোক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এসব জমি নিয়ে মামলা মোকদ্দমার কারণে অযথা সরকারের যেমন অর্থ গচ্ছা যাচ্ছে তেমনি সাধারণ মানুষও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি মালিকানা নির্ধারণী নিয়ে টানাপড়েনে আছেন। মালিকানা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বছরের পর বছর চলছে মামলা-মোকদ্দমা। এসব মালিকানার জমি মিলিটারি স্টেট অফিসারের কার্যালয় থেকে বছর ভিত্তিক লীজ এনে দখল প্রচেষ্টার কারণেও নিত্য ঘটছে দাঙ্গা-হাঙ্গামা। জানা যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সিলেট বিমানবন্দর নির্মাণকালীন জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এ সময়ে যুদ্ধকালীন ব্যবহারের জন্য এল-এ কেইস ২৪-এর আওতায় বেশ কিছু জমি ২ বছরের জন্য রিক্যুজিশন করা হয়। পরবর্তী পর্যায়ে ১৯৫৬ সালে জরিপকাজ শুরু হলে এই সময় মালিকদের অবর্তমানে জমিগুলো সিভিল ডিফেন্সের নামে রেকর্ড হয়ে যায়। যুদ্ধ শেষে মালিকরা পর্যায়ক্রমে নিজেদের জমি জমা ভোগদখলে ফিরে আসেন। কিন্তু রেকর্ড রয়ে যায় ডিফেন্সের নামে। পরবর্তীতে রেকর্ড সংক্রান্ত জটিলতা গোচরিভূত হলে তৈরি হয় নানান সমস্যা। অনেকে নিজেদের জমির রেকর্ড সংশোধন করে নিতে আদালতের শরণাপন্ন হন। রেকর্ড সংশোধনের মামলা চলতে থাকে বছরের পর বছর। এদিকে এক শ্রেণীর সুবিধাভোগী লোক রেকর্ড থাকার সুবাদে সিভিল ডিফেন্স থেকে খ- খ- করে এ সব জমি লীজ এনে দখল করার চেষ্টা চালায়। এই নিয়ে দাঙ্গা-হাঙ্গমার সৃষ্টি হয়। সিভিল ডিফেন্স থেকে এই সকল জমি এক বছর মেয়াদে চাষাবাদ করে ভোগ করার নিমিত্তে লীজ প্রদান করা হলেও অনেকে লীজ নেয়া জমি স্থায়ীভাবে ভোগ দখলের চেষ্টা চালাতে থাকেন। এ নিয়েও দেখা দেয় নানা জটিলতা। ২০০৫ সালে বিমানবন্দর সংলগ্ন নয়াবাজারের পূর্বদিকে ১৪৮৭, ২০৪৭, ২০১৬ দাগে হেলেন আহমদ নামে একজন এক একর ৫০ শতক জমি মিলিটারি স্টেট অফিসারের কার্যালয়, ইস্টার্ন সার্কেল, চট্টগ্রাম সেনানিবাস থেকে লীজ গ্রহণ করেন। এই জমি নিয়ে অন্য মালিকদের আদালতে রেকর্ড সংশোধন মামলা চলছে। এদিকে হেলেন আহমদ এই জমি লীজ গ্রহণ করে সেখানে পাকা দেয়াল নির্মাণসহ অন্যান্য স্থাপনা তৈরি করতে থাকেন। এই পর্যায়ে লীজের শর্ত ভঙ্গের কারণে ২০০৭ সালের ২৭ ডিসেম্বর ইসি/সিটিজ/এলসি/৫২-২/২০০৭/৫২ স্মারকে স্টেট অফিসারের কার্যালয় থেকে তাদের লীজ বাতিল করে দেয়া হয়। সেনাবাহিনী সেখানে গিয়ে সকল স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়। উক্ত হেলেন আহমদ তাদের লীজ বাতিল সত্ত্বেও উক্ত জমির ওপর দখল প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
×