ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৩:০০, ২১ ডিসেম্বর ২০১৪

সম্পাদক সমীপে

পাখি আর ডাকে না... একটা সময় গেছে প্রতিবছরই শীতকালে (১৯৮০ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত) সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জের হাওর-বিলে যেতাম পাখি দেখতে। যারা আজকাল বিল-হাওরে যান তারাই বলেন, পাখির দেখাতো তেমন একটা পেলাম না। যেজন্য শীতকালে সুনামগঞ্জ-হবিগঞ্জে যাওয়ার সেই ইচ্ছেটা যেন ফুরিয়ে গেছে এ জীবন থেকে। মনে পড়ে, ওই দিনগুলোতে রঘুনন্দন পাহাড়ের আশপাশে বেড়ানোটা ছিল বেশ আনন্দের। ওই দিনগুলোতে বনে হাওর-বিলে, জলাভূমিতে কত না প্রজাতির পাখি দেখেছিÑ তার হিসাব এতোদিনে অনেকটা ভুলেই গেছি। শীতের সময় হাওর, বনাঞ্চলে, পাহাড়ে, জলাভূমিতে যেসব পাখি দেখা যায় এদের একটা বড় অংশই হলো শীত যাপন করতে আসা বিদেশী পাখির দল। কিন্তু আজকাল বাংলার কোথাও ঘুরে এতোগুলো প্রজাতির পাখি দেখার কথা কেউই ভাবতে পারেন না। পারবেনই বা কেন? আমাদের বাংলাদেশে পাখি দেখার জন্য ক’টাইবা পার্ক অথবা পাখি অভয়ারণ্য রয়েছে। ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক ছাড়াও কয়েকটি অভয়ারণ্য থাকলেও ওইসব জায়গায় হাতে গোনা কয়েক প্রজাতির পাখিই দেখা যায় মাত্র। ১৯৫৮-৬০ সালে আমাদের ছোট্ট শহর পিরোজপুরে ঘুম ভাঙ্গতো পাখির ডাকে। পাপিয়া, বুলবুলি পাখি দেখে আমরাও গাইতাম- ‘ফুল ফুটানো গান গেয়ে যায় পাপিয়া বুলবুল গো...’। এ গান তো গেয়েছিলেন কানন দেবী। রেকর্ডে তার গান শুনে শুনে পথে-ঘাটে ঘুরে ঘুরে দেখতাম কত না পাখি। ইদানীং পিরোজপুর গিয়ে পাখিদের দেখাতো আর পেলাম না। তখন প্রশ্ন জেগেছিল, টিয়া, ময়না, বুলবুলি, পাপিয়া, তোতা, ময়ূর, পেঁচা, ঘুঘু ওরা কি চিরতরে হারিয়ে গেল! এই তো ৪৫ বছর আগে যখন গাবখান নদী দিয়ে ছোট লঞ্চে বসে শেখেরহাটে আসতাম তখন ঘুঘুর ডাক শুনে ছুটে যেতে মন চাইতো জুলুহারের দিকে। এই জুলুহার স্কুল থেকেই আমার বাবা আমির হোসেন মিয়া ১৯২৮ সালে ম্যাট্রিক পাস করেন। বাবার মুখেই শুনেছি, নদী পেরিয়ে গাঁয়ের পথ ধরে হাঁটতেই দু’ধারে দেখা যেত টিয়া, ময়না, ঘুঘু, পাপিয়া, বউ কথা কও, ডাহুক, পেঁচা পাখিদের অবাধ বিচরণ। ময়ূরও নাকি ছিল। সেই জুলুহারে ক’দিন আগে গিয়ে একটি পাখিও চোখে পড়ল না। তখন বার বার মনে হলো-কবির লেখা : ‘পাখি সব করে রব রাতি পোহাইল’ এ চরণটি কি আজ মিথ্যে হয়ে গেল! লিয়াকত হোসেন খোকন রূপনগর, ঢাকা। প্রয়োজন রেলের উন্নয়ন রেললাইন সমান্তরারল বয়ে যায়। রেল যোগাযোগ উন্নত হলে অর্থনীতির চাকাও হবে গতিশীল। রেল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে উপযোগী নিরাপদ ও জনপ্রিয় পরিবহন বটে। ব্রিটিশ শাসনামলে পরিকল্পিতভাবে রেলের একটি সুন্দর অবকাঠামো গড়ে উঠেছিল। বস্তুত তৎকালীন যোগাযোগ ব্যবস্থায় রেল বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিল। বিভিন্ন কারণে রেলের ভূমিকা অপরিসীম। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে মাত্র তিন বছরের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধকালে বিধ্বস্ত বিপুল সংখ্যক রেলসেতু ও রেলপথ নির্মিত হয়েছে। ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকা-ের পর রেলের উন্নযন মুখ থুবড়ে পড়ে, যা জাতির জন্য দুর্ভাগ্যজনক এবং লজ্জানকও বটে। স্বৈরাচারী সরকারের সময় রেল ছিল খুবই অবহেলিত। পরবর্তীতে প্রায় সব সরকারের সময় রেলের অবহেলার ধারা অব্যাহত ছিল। বস্তুত রেল ব্যবস্থা সম্প্রসারণের বদলে বরং সঙ্কুচিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে রেলের একটি মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। চারটি পর্যায়ে এই মহাপরিকল্পনায় ২৩৫ প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলওয়ে ডবল লাইনের উন্নতি করার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। রণজিত মজুমদার সোনাগাজী, ফেনী।
×