ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

তবলীগ জামাতের অর্থ আত্মসাত নিয়ে বিরোধ

কাকরাইল মসজিদে দুই মুসল্লি গ্রুপের সংঘর্ষ, মামলা ॥ কারাগারে ২৪

প্রকাশিত: ০৫:০২, ২০ ডিসেম্বর ২০১৪

কাকরাইল মসজিদে দুই মুসল্লি গ্রুপের সংঘর্ষ, মামলা ॥ কারাগারে ২৪

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর কাকরাইল মসজিদ থেকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে আটক ২৪ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে হাজির করার পর আদালত তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম মিজানুর রহমান শুক্রবার বিকেলে এ আদেশ দেন। এর আগে রমনা থানা পুলিশ তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে উপস্থাপন করেন। তাদের জামিনের ওপর শুনানি রবিবার অনুষ্ঠিত হবে। তবলীগ জামাতের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা নিয়ে কাকরাইল মসজিদে মুসল্লিদের দুই পক্ষের বিরোধ শেষ পর্যন্ত সংঘর্ষ ও মামলা পর্যন্ত গড়াল। প্রায় ছয় মাস ধরে সাধারণ মুসল্লিরা অন্যতম এক আমিরের পরিবারের বিরুদ্ধে অর্থ লোপাটের অভিযোগ তুলে আন্দোলন করে যাচ্ছিলেন। তবে প্রভাবশালী ওই আমিরের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার গভীর রাত থেকে প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিজেরাই ধরা খেয়েছেন পুলিশের হাতে। ‘এ মুসল্লিরা মসজিদের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করছেন’ এমন অভিযোগ দিয়ে ২৪ প্রতিবাদকারীকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দিয়েছেন। একই সঙ্গে উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই আনা হয়েছে অর্থ লোপাটের অভিযোগ। ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার দিনভর রমনা থানার সামনে অবস্থান করেছেন তবলীগ জামাতের অর্ধশতাধিক কর্মী। পুলিশের হস্তক্ষেপে রাতে অবস্থানকারীরা তাদের কর্মসূচী প্রত্যাহার করে কাকরাইল মসজিদে চলে যান। মুসল্লিদের অভিযোগ, মসজিদের বর্তমান কমিটির নেতৃবৃন্দ টাকা আত্মসাত এবং নিজেরা ভাগ বাটোয়ারা করে নিচ্ছেন। এর প্রতিবাদ করায় মসজিদ কমিটি পরিবেশ নষ্ট করছে এমন অভিযোগ এনে থানায় অভিযোগ করা হয়। অভিযোগ পাওয়ার পর থানা পুলিশের একটি দল ২৪ জনকে আটক করে। পরে থানা পুলিশ তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। সাংবাদিকদের তবলীগ কর্মীরা বলেন, অন্যতম আমির সৈয়দ ওয়াসিফ ইসলাম কয়েক বছর ধরে তবলীগের টাকা মেরে দিচ্ছেন। হিসাব চাইলে তবলীগের নিয়ম অনুযায়ী কোন মাশোহারা ছাড়াই তিনি সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন। টাকা খরচ করছেন নিজের মতো। আমরা প্রতিবাদ জানালে আমাদের মারধর করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতেও এভাবে মেরে আমাদের ২৪ সাথীকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। তবলীগকর্মী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র মিতুল আহসান বলেন, আমি ১০ বছর ধরে তবলীগে সময় দিচ্ছি। প্রায় তিন বছর ধরে আমিরদের অন্যতম ওয়াসিফ সম্পর্কে অর্থ আত্মসাতের কথা শুনে আসছি। কর্মীরা অভিযোগ করেন, সৈয়দ ওয়াসিফ তবলীগের সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছেন। তার ছেলে উসামার বিরুদ্ধেও প্রশাসনের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি একটি গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করেছিল। কিন্তু অদৃশ্য কারণে সে তদন্ত থেমে গেছে। সাংবাদিকদের সামনে তবলীগকর্মী আবদুর রহমান বলেন, ওয়াসিফের দুর্নীতি নিয়ে কথা বলায় সাথীভাই হারুণ ভাইয়ের ছেলেকে কিডন্যাপড করা হয়েছিল। তাকে প্রতিনিয়ত মৃত্যুর হুমকি দেয়া হয়। কর্মীদের দাবি, তবলীগ জামায়াতের দুর্নীতির বিষয়ে সরকারের হস্তক্ষেপ এবং তদন্ত দরকার।
×