ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সেন্টমার্টিনসহ বিভিন্ন দ্বীপে পর্যটক সংখ্যা সীমিত করা হবে

প্রকাশিত: ০৪:৪৩, ২০ ডিসেম্বর ২০১৪

সেন্টমার্টিনসহ বিভিন্ন দ্বীপে পর্যটক সংখ্যা সীমিত করা হবে

তৌহিদুর রহমান ॥ আন্তর্জাতিক আইন মেনে গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের লক্ষ্যে ‘জাতীয় সামুদ্রিক মৎস্য নীতিমালা-২০১৪’ প্রণয়ন করছে সরকার। নীতিমালা অনুযায়ী জাতীয় সামুদ্রিক মৎস্য নীতিমালা অনুযায়ী উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ, টেকসই আহরণ ও উৎপাদন বৃদ্ধি করা হবে। সামুদ্রিক প্রজাতি রক্ষায় সেন্টমার্টিনসহ বিভিন্ন দ্বীপে পর্যটকের সংখ্যা সীমিত করা হবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে এই নীতিমালার খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া নতুন নীতিমালা অনুয়ায়ী পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদের স্থায়িত্বশীল উন্নয়ন করা হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, মৎস্য নৌযান আহরিত মাছে ফরমালিনসহ সকল প্রকার রাসায়নিক বা জনস্বাস্থ্যহানিকর দ্রব্য ব্যবহার নিষিদ্ধ ও প্রতিরোধ করা হবে। সূত্র জানায়, জাতিসংঘের সমুদ্র বিরোধ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক আদালত এবং আন্তর্জাতিক সালিশী আদালতের মাধ্যমে বঙ্গোপসাগরে মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বিরোধ মামলা ইতিমধ্যেই নিষ্পত্তি হয়েছে। মামলার রায় অনুযায়ী বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত রাষ্ট্রাধীন অঞ্চল, ২০০ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল, ২০০ নটিক্যাল মাইলের বাইরে মহীসোপানের সম্প্রসারিত এলাকার ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মৎস্য ও খনিজসহ সকল ধরনের সম্পদ আহরণ করতে পারবে। সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশের মোট এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সামুদ্রিক ও উপকূলীয় জলসীমায় সম্পদ আহরণের অধিকার এবং সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই সমুদ্র এলাকায় সর্বোচ্চ টেকসই আহরণ অব্যাহত রাখার জন্য সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ আহরণ, সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত জাতীয় নীতিমালা প্রণয়ন জরুরী হয়ে পড়েছে। সে কারণে বিদ্যমান জাতীয় মৎস্য নীতিমালা ১৯৯৮, অন্যান্য জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিধি-বিধানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ‘জাতীয় সামুদ্রিক মৎস্য নীতিমালা ২০১৪’-এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে। খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে সামুদ্রিক মৎস্যের ব্যবহার ও বিপণন বৃদ্ধি করা হবে। এছাড়া মানসম্মত মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করা হবে। এছাড়া জাতীয় সামুদ্রিক মৎস্য নীতিমালার মধ্যে সামুদ্রিক মৎস্য শিক্ষা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বাজারজাতকরণ, আন্তর্জাতিক ব্যবসা-বাণিজ্য ও সমন্বিত উপকূলীয় অঞ্চল ব্যবস্থাপনা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। নীতিমালায় মৎস্য নৌযান আহরিত মাছে ফরমালিন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, সকল প্রকার মৎস্য নৌযান আহরিত মাছে ফরমালিনসহ সকল প্রকার রাসায়নিক বা জনস্বাস্থ্যহানিকর দ্রব্য ব্যবহার নিষিদ্ধ ও প্রতিরোধ করা হবে। এছাড়া মৎস্য আহরণ ও আহরণোত্তর কাজে নিয়োজিত সকল নাবিক ও মৎস্যজীবী জেলেদের ব্যক্তিগত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি পালন করে মৎস্য সংরক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ সেবা জোরদার করা হবে। সূত্র জানায়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, পররাষ্ট্র, শিল্প, স্বরাষ্ট্র, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কোস্টগার্ড, বাংলাদেশ পুলিশ, সমুদ্র পরিবহন অধিদফতর, মেরিন ফিশারিজ একাডেমি প্রভৃতি সংস্থা একত্রে ‘জাতীয় সামুদ্রিক মৎস্য নীতিমালা, ২০১৪’-এর খসড়া চূড়ান্ত করেছে। নীতিমালা চূড়ান্তের পর মন্ত্রিসভায় পাস হবে।
×