ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিষিদ্ধ টিনের বা কেরোসিনের বয়লারযুক্ত ভাঁটিতে ইট পুড়ছে

কয়লা নেই, ইটভাঁটিতে দেদারছে জ্বলছে কাঠ

প্রকাশিত: ০৬:২৪, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪

কয়লা নেই, ইটভাঁটিতে দেদারছে জ্বলছে কাঠ

সংবাদদাতা, আমতলী, ১৮ ডিসেম্বর ॥ বরগুনার আমতলীতে কয়লার অভাবে ঝিকঝাক ইটভাঁটির মাটির তৈরি ইট পোড়াতে পারছে না। আরেক দল পরিবেশ অধিদফতরের নীতিমালা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন স্থানে অবৈধ চিমনি, (ব্যারেলের) চুঙ্গা দিয়ে কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরি করছে। এ ইট চড়া দামে বিক্রি করছে। বিভিন্ন এলাকায় গাছ কাটার হিড়িক পড়েছে। বৈধ কিংবা অবৈধভাবে গাছ কাটায় পরিবেশের ওপর বড় ধরনের প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন পরিবেশবাদীরা। জানা গেছে, বরগুনার আমতলী উপজেলায় ১৭টি ইটভাঁটি রয়েছে। এর মধ্যে ১০টি ঝিকঝাক ও ৭টি চিমনি। ভাঁটিগুলোতে মাটির তৈরি ইট নিয়ে বসে আছে। কয়লার অভাবে ইট পোড়ানোর কাজ বন্ধ রয়েছে। ভাঁটিগুলোতে শত শত শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ও দাদনের টাকা দিয়ে কর্তৃপক্ষ কাজ করাচ্ছে। কয়লার মূল্য গত বছরের চেয়ে এ বছর দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর ১ টন কয়লা কিনতে হচ্ছে ১৮/২০ হাজার টাকায়। তাও পাওয়া যাচ্ছে না। শীঘ্রই ভাঁটিতে ইট পোড়ানোর কাজ শুরু করতে না পারলে মালিকদের পথে বসতে হবে। অপরদিকে আমতলীতে ৭টি ভাঁটিতে সরকারীভাবে নিষিদ্ধ টিনের বা কেরোসিনের ব্যারেল (চিমনি) ও বয়লারযুক্ত ইটভাঁটিতে ইট পোড়াচ্ছে । আমতলীর নাচনাপাড়া আরএবি ও মহিষডাঙ্গার এমসিকে ব্রিকস দু’টি সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে কোন কয়লা নেই। তারা কাঠ দিয়ে দেদার ইট পোড়াচ্ছে। এমনকি এমসিকে ভাঁটির মধ্যে স-মিল বসিয়ে বিভিন্ন স্থানের উঠতি গাছ কেটে ভাটায় দিচ্ছে। তালতলীর টেংড়াগিরি বিটের ফাতরার জঙ্গল, নিশানবাড়িয়া ও নিন্দ্রারচরসহ গ্রামাঞ্চলে গাছ কাটার হিড়িক পড়েছে। এ কাঠ কার্গো ট্রাক বোঝাই করে বিভিন্ন স্থানের ইটভাঁটিতে নিয়ে যাচ্ছে। ইত্যাবসরে খেজুর, তাল গাছ শেষ হয়ে গেছে। এখন অন্যান্য জাতের উঠতি গাছ কাটা হচ্ছে। কাটা গাছ মহাসড়কের পাশে রাখা হয়। ট্রাকে করে এ কাঠ বিভিন্ন ভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এক মণ রেইনট্রি গাছ ৬০/৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ঝিকঝাক ব্রিকসে ইট পোড়ানো বন্ধের কারণে ইটের দাম গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর এক হাজার ইট ৫/৬ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ বছর ওই ইট ৯/১০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গাইবান্ধায় যত্রতত্র ইটভাঁটি নিজস্ব সংবাদদাতা গাইবান্ধা থেকে জানান, নিয়মনীতি না মেনে যত্রতত্র গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠছে ব্যাপক ইট-ভাঁটি। এ সমস্ত ইটভাঁটিতে আবাদি জমির উর্বর টপ সয়েল ব্যাপক হারে ব্যবহৃত হওয়ায় কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদন ব্যাপক হারে হ্রাস পাবে বলে আশংকা করা হচ্ছে। জানা গেছে, জেলার সাদুল্যাপুর উপজেলাতেই প্রায় শতাধিক ইটভাঁটি রয়েছে। এসব ইটভাঁটি প্রধান উপকরণ এটেল ও দোঁআশ মাটি সংগ্রহ করতে আবাদি জমির টপ সয়েল (উর্বর মাটি) দেদাড়চ্ছে কিনে নিচ্ছে ইটভাঁটি মালিকরা। ফলে একদিকে যেমন আবাদি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। তেমনি পাশাপাশি পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতারও আশংকা দেখা দিয়েছে।
×