ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুুঁজিবাজারে সূচকের পতন থেমেছে

প্রকাশিত: ০৩:৫২, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৪

পুুঁজিবাজারে সূচকের পতন থেমেছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ অবশেষে সূচকের সামান্য উর্ধগতির মধ্য দিয়ে দেশের পুঁজিবাজারে টানা পাঁচ কার্যদিবস পতন থেমেছে। বেশিরভাগ কোম্পানির দর বাড়ায় সূচক বাড়লেও প্রধান বাজার ঢাকা স্টক একচেঞ্জের লেনদেন আগের দিনের তুলনায় প্রায় ১৯ শতাংশ কমেছে। মাঝারি মূলধনের কোম্পানিগুলোর দর বাড়ার দিনে বেশ কিছু বড় মূলধনী কোম্পানির দর কমেছে। যার কারণে প্রায় ৬০ শতাংশ কোম্পানির দরবৃদ্ধি ডিএসইর সূচকে আহামরি কোন পরিবর্তন আসেনি। তবে সপ্তাহের শেষ দিনে সূচকের কিছুটা উর্ধগতি বিনিয়োগকারীদের মনে আশার সঞ্চার করেছে। একইভাবে দেশের অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জেও সূচকের মিশ্রাবস্থা দেখা গেছে। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, গত কয়েকদিন ধরে ডিএসইতে সূচক ও লেনদেনের মন্দাবস্থা চলছেই। সেখানে নতুন প্রজন্মের স্বয়ংক্রিয় লেনদেন ব্যবস্থা চালুর পর থেকেই এই মন্দাবস্থার শুরু। শুরুতে বিনিয়োগকারীদের বোঝার সমস্যার সঙ্গে যোগ হয়েছিল হাওলা ও লাগা চার্জ নিয়ে পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তহীনতা। এই কারণে সেখানকার সার্বিক লেনদেন কমে প্রায় ১শ’ কোটি টাকার নেমে আসে। কিন্তু এখন লেনদেন কিছুটা বাড়লেও সূচকের মন্দাবস্থা কাটেনি। নতুন লেনদেন ব্যবস্থায় বিনিয়োগকারীদের অভিজ্ঞতার অভাবকেই দায়ী করছেন তারা। তাদের মতে, বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সঙ্গে নতুন অনুমোদিত প্রতিনিধিও এই সফটওয়ার বুঝতে পারছে না। ফলে নেতিবাচক প্রবণতা কাটেনি। তাদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও ছিল না। বৃহস্পতিবার থেকে ডিএসইতে হাওলা চার্জ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এর বিপরীতে লাগা চার্জের কমিশন আগের তুলনায় বেড়েছে। এটিরও খুব বেশি প্রভাব বাজারে পড়েনি। বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৩১ কোটি টাকার শেয়ার। আর আগের দিন এ বাজারে লেনদেন হয়েছিল ২৮৪ কোটি টাকার শেয়ার। আর এ হিসাবে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ৫৩ কোটি টাকার। ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ৩১০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৭২টি কোম্পানির, আর দর কমেছে ৯৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪১টির। সকালে সূচকের ইতিবাচক প্রবণতা দিয়ে লেনদেন শুরুর পরে ডিএসইতে দিনশেষে সার্বিক সূচকের উর্ধগতি দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। শেষ বিকেলে ডিএসই প্রধান বা ডিএসই এক্স সূচক ১৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৮৫৬ পয়েন্টে। ডিএসই এস বা শরিয়াহ সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ১৪৪ পয়েন্টে। এদিকে ডিএস৩০ সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৭৯২ পয়েন্টে। বৃহস্পতিবার ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে কাশেম ড্রাই সেলসের শেয়ার। এরপরে রয়েছে - ফু-ওয়াং ফুড, আরএকে সিরামিক, স্কয়ার ফার্মা, অগ্নি সিস্টেমস, তুং হাই নিটিং অ্যান্ড ডাইং, বেক্সিমকো ফার্মা, লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট, কেয়া কসমেটিকস এবং সামিট এ্যালায়েন্স পোর্ট। ডিএসইতে দরবৃদ্ধির সেরা কোম্পানিগুলো হলো : ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স, সোনালী আঁশ, বরকতউল্লাহ ইলেকট্রো ডায়নামিকস, ইবিএলএনআরবি মিউচ্যুয়াল ফান্ড, মুন্নু স্টাফলারস, শাহজিবাজার পাওয়ার, ফার্মা এইড, কাসেম ড্রাইসেল, জিএসপি ফাইনান্স ও ফু-ওয়াং ফুড। দর হারানোর সেরা কোম্পানিগুলো হলো : শ্যামপুর সুগার মিল, জেমিনি সী ফুড, এমবিএল ১ম মিউচ্যুয়াল ফান্ড, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, ফার ইস্ট নিটিং ও ডাইং, এপেক্স স্পিনিং, অলটেক্স, ফাস ফাইনান্স ও লিগ্যাসি ফুটওয়ার। এদিকে ঢাকার বাজারে ইতিবাচক প্রবণতা দিয়ে লেনদেন চললেও চট্টগ্রাম স্টক একচেঞ্জে সূচকের মিশ্রাবস্থা ছিল। সারাদিনে সিএসইতে ২২ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এদিন সিএসই সার্বিক সূচক ২৭ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১৪ হাজার ৯৫৮ পয়েন্টে। সিএসইতে লেনদেনে অংশ নিয়েছে ২৫৫টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ড। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২২টির, কমেছে ৯৮টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৫টির। সিএসইতে লেনদেনের সেরা কোম্পানিগুলো হলো : গ্রামীণফোন, তুং হাই নিটিং, সামিট এলায়েন্স পোর্ট, আরকে সিরামিক, স্কয়ার ফার্মা, কেয়া কসমেটিকস, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, হামিদ ফেব্রিক্স ও বেক্সিমকো।
×