ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আজ নওগাঁ হানাদার মুক্ত

প্রকাশিত: ০৬:০৫, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪

আজ নওগাঁ হানাদার মুক্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ১৭ ডিসেম্বর ॥ ’৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর দেশের বিজয় অর্জিত হলেও উত্তরের সীমান্ত ঘেঁষা নওগাঁ জেলা হানাদারমুক্ত হয় ১৮ ডিসেম্বর। দেশ স্বাধীনের দু’দিন পর জেলাবাসী প্রকৃত স্বাধীনতার স্বাদ পায়। সেই ’৭১-এর ১৬ ডিসেম্বর বেতার তরঙ্গ মারফত খবর আসে ঢাকায় পাকি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে। বাঙালী জাতি পায় বহু আকাক্সিক্ষত স্বাধীনতা। ওই রাতেই নওগাঁর দায়িত্বপ্রাপ্ত পাকিস্তানী মেজরের সঙ্গে মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার জালাল হোসেন চৌধুরীর কথা হয়। আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই সিদ্ধান্ত হয়, স্থানীয় পাকি সেনারা মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করবে। কথামত পরেরদিন ১৭ ডিসেম্বর সকাল আনুমানিক সাড়ে ৭টায় কমান্ডার জালাল হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী ফতেপুর থেকে সড়ক পথে নওগাঁ শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। ১৮ ডিসেম্বর শনিবার সকালে ভারতীয় মেজর চন্দ্র শেখর মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী সঙ্গে নিয়ে নওগাঁয় প্রবেশ করেন। পাকি বাহিনীর তখন আর কিছুই করার ছিল না। ফলে প্রায় ২ হাজার পাকি সেনা নওগাঁ কেডি স্কুল থেকে পিএম গার্লস স্কুল ও সরকারী বালিকা বিদ্যালয় থেকে শুরু করে থানা চত্বর (বর্তমান এসপির বাংলো) এবং এসডিও অফিস (বর্তমান ডিসির বাংলো) চত্বর পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে সারি বেঁধে অবনত মস্তকে আত্মসমর্থণ করে। ’৭১-এর ১৮ ডিসেম্বর শনিবার নওগাঁ হানাদারমুক্ত হয়। চট্টগ্রাম ও কিশোরগঞ্জ হানাদারমুক্ত হয় ১৭ ডিসেম্বর স্টাফ রিপোর্টার চট্টগ্রাম অফিস থেকে জানান, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে জেনারেল নিয়াজীর নেতৃত্বে পাকিস্তানের সৈন্যবাহিনী আত্মসমর্পণ করলেও চট্টগ্রাম শত্রুমুক্ত হয় পরদিন ১৭ ডিসেম্বর। পাকিস্তানী সেনারা বিজয় দিবসের দিনও চট্টগ্রামে সশস্ত্র সতর্কাবস্থায় অবস্থান করছিল। নগরীর প্রবেশ মুখগুলোতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের কারণে তারা এবং তাদের সহযোগী রাজাকার, আলবদর ও আলশামসরা ছিল কোণঠাসা। চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এ দিনই মুক্তিযোদ্ধারা উড়ান বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত জাতীয় পতাকা। সে দিন থেকে এখনও পর্যন্ত চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধারা ১৭ ডিসেম্বরকে শত্রুমুক্ত দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক চট্টগ্রামে একটি বিজয়স্তম্ভ নির্মাণে সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। নিজস্ব সংবাদদাতা কিশোরগঞ্জ থেকে জানান, ১৬ ডিসেম্বর সারাদেশ বিজয়ের আনন্দে মুখরিত হলেও একদিন পর ১৭ ডিসেম্বর, কিশোরগঞ্জ শত্রুমুক্ত হয়। তৎকালীন মহকুমা এ শহরকে শত্রুমুক্ত করতে বিভিন্ন দিক থেকে গেরিলা মুক্তিসেনারা ও ভারতীয় মিত্রবাহিনীর ক্যাপ্টেন চৌহানের নেতৃত্বে মিত্রবাহিনীও সেদিন কিশোরগঞ্জে আসে। মুক্তিযোদ্ধা, মিত্রবাহিনী, জনতার উল্লাস ধ্বনি, আনন্দ উচ্ছ্বাস আর মুক্তির চিরন্তন স্বপ্ন বাস্তবায়নের ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয় স্বাধীন কিশোরগঞ্জের মুক্ত আকাশ।
×