ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সম্পাদক সমীপে

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪

সম্পাদক সমীপে

তেঁতুল হুজুরের আবদার বিজয় দিবস উদযাপনের ডামাডোলের মধ্যে একটি সংবাদ মনে হয় সকলের নজর এড়িয়ে গেছে। নজরে এলেও কেউ ততটা এলে নেয়নি। জানায়নি প্রতিবাদ। ১৬ ডিসেম্বর দেশের সহযোগী একটি দৈনিকে খবরটি পড়ে যারপরনাই ক্ষুব্ধ হলাম। দেশের সচেতন নাগরিক মাত্রই ক্ষুব্ধ হওয়ার সংবাদ। খবরটি হলো ব্লাসফেমি আইনের আবদার করেছেন তেঁতুল হুজুর হিসেবে খ্যাত আহমদ শফী। বিজয় দিবসের মাত্র ১ দিন আগে বরিশাল বিভাগীয় কওমী মাদ্রাসা ঐক্য পরিষদের সম্মেলনে তেঁতুল হুজুর এই আবদার করেন। আমাদের জাতীয়তাবাদ ও অসাম্প্রাদায়িক চেতনা নিরিখে এমন দাবি ভয়াবহ এবং পৃথকভাবে আলোচনার দাবি রাখে। স্বাধীনতার ৪৩ বছর অতিক্রান্ত। বাঙালী জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার যে স্বপ্ন ও আকাক্সক্ষাকে সামনে রেখে বীর বাঙালী সশস্ত্র সংগ্রাম ও সীমাহীন ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্য দিয়ে পাকিস্তানী ঔপনিবেশিক শাসন-শৃঙ্খল থেকে নিজেদের মুক্ত করেছিল, তা আজও পুরোপুরি অর্জিত হয়নি। যেটুকুও বা হয়েছে ও হচ্ছে, আজ তা হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে ধর্ম ব্যবসায়ীদের অপপ্রয়াস, যুদ্ধাপরাধী ও রাজাকারদের সঙ্গে নিয়ে বিএনপির অপরাজনীতি এবং প্রতিক্রিয়াশীল ধর্মীয় মৌলবাদের উত্থানের মতো কার্যকলাপে। তেঁতুল হুজুর আহমদ শফী, আপনি যে ভূখ-ে দাঁড়িয়ে কথা বলছেন, তা লাখ লাখ শহীদের পবিত্র রক্তে সিক্ত। লাখ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি এই স্বাধীন বাংলাদেশ। ওই শহীদরা ব্লাসফেমি আইনের জন্য তাদের রক্ত বিসর্জন দেননি। শরীয়া আইনের জন্য মা-বোনেরা তাদের সম্ভ্রম বিসর্জন দেননি। তারা স্বপ্ন দেখেছিলেন একটি অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের, যেখানে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবাই সমান অধিকার নিয়ে বাস করবে। সবাই স্বাধীনভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে। ধর্মবিদ্বেষ দূর হবে। প্রতিষ্ঠিত হবে অসাম্প্রাদায়িক চেতনা। বিজয় দিবসের মাত্র একদিন আগে তেঁতুল হুজুরের এমন বক্তব্য শহীদের আত্মার প্রতি অবমাননার শামিল নয় কি? নয়কি লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম বির্জনের প্রতি তীব্র বিদ্রƒপ? শামসুজ্জামান খান শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রমোদে ঢালিয়া দিনু মন আমার মনের ভাব প্রকাশ করছি রবি ঠাকুরের একটি রণ গানের বাক্য দিয়ে, ‘প্রমোদে ঢালিয়া দিনু মন, তবু প্রাণ কেন কাঁদেরে?’ কাঁঠালতলী স্কুলের যে নবতর উন্নতি স্বাধন হচ্ছে আজ তার সকল আনন্দ পানিধারবাসীরও হতে পারত যদি তারা কাঁঠালতলী ছেড়ে বড়লেখায় যোগদান না করত পঞ্চাশের দশকে। তাই মন কাঁদছে। ওই সময় বড়লেখার সিংহগ্রাম স্কুলে আজমির গাঁয়ের শিক্ষক হাবিব আলী স্যার শীতের রাতে ৪-৫ জন মেধাবী ছাত্রকে নিয়ে বাঁশের ভাঙ্গা বেড়ার ঘর থেকে গভীর রাতে উঠে বৃত্তির জন্য মনোনীত ছাত্রদের শিক্ষা দান করতেন। ঠিক একই জিনিস করতেন কাঁঠালতলীর প্রধান শিক্ষক রঙ্গলাল সেন মহাশয়। উভয় শিক্ষকই এই শীতের রাতে কষ্টের বিনিময়ে কোন টাকা নিতেন না। আর আজ শিক্ষকদের বিভিন্ন কুর্কীতি আমরা সংবাদপত্রে পড়ি এবং নিজে দেখি। কিন্তু কোন বিচার নেই। চোখ অন্ধ হলেও প্রলয় বন্ধ থাকে না। রাধাকান্ত রায় দিনাজপুর। দুই নেত্রীর কাছে আকুল আবেদন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পুরাতন ঢাকায় সূত্রাপুর অঞ্চলে লালকুঠি, আইজি গেট, রায় সাহেববাজার, পদ্মানিধি লেন, বন্যগ্রামে যেসব ঘাতকরা সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছিল তাদের জীবিত অথবা মৃত্যু হলে মরণোত্তর বিচার ও তাদের পরিবারকে সমাজে সর্বঘৃণিত ও নিকৃষ্ট খেতাবে ভূষিত করা হোক। ওইসব মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারী ঘাতক পরিবারকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সব সুযোগ-সুবিধা থেকে যেমন ব্যাংক এ্যাকাউন্ট, বীমা পাসপোর্ট ইত্যাদির ব্যবহার বন্ধ করা হোক যেহেতু তারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা চায়নি। মাননীয় উভয় নেত্রী মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন আপনার মহান মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য স্বাধীনতা যুদ্ধে ওইসব মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারী ঘাতকদের কোন দল নেই এরা সুবিধাবাদী। কোন রাজনৈতিক দল বা কোন গোষ্ঠীকে ঘায়েল করার লক্ষ্যে নয় সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে বিচারের ব্যবস্থা করা হোক। ওইসব ঘাতকদের যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবে তাদের বিরুদ্ধে ও অনুরূপ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উভয় নেত্রী মহোদয়ের নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি। ঘাতকরা যেই হোক এদের ছাড় দেয়া যাবে না। এটাই হোক আগামীদিনের অঙ্গীকার। উল্লেখ্য, স্বাধীনতাযুদ্ধে উপরে বর্ণিত এলাকাসমূহের অসংখ্য নিরীহ রোকজনকে হত্যা করা হয় যার মধ্যে নয়জনই ছিল সশস্ত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা। মোঃ বাসেত উত্তর যাত্রাবাড়ী, ঢাকা।
×