ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

স্বদেশ রায়

রাজাহীন রাজপাট

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪

রাজাহীন রাজপাট

একটি পানসি নৌকা সমুদ্রবাহী নদীর ভাটার টানে বেশ জোরে এগিয়ে চলেছে। পানসি বা বজরা যাই বলুন না কেন, জোরে এগিয়ে চললেও তার একটি রাজকীয় স্বভাব থাকে, যার মিল আছে রাজহংসের চলার সঙ্গে। তাই ওই চলাতে কূলের সৌন্দর্য দেখতে কোন কষ্ট হয় না। বরং যার যেমন অনুভূতি সে তেমনি চোখ ভরে দেখতে পারে। সেদিনের সে পানসি নৌকার ছাদে যখন সকালের মিষ্টি রোদ পড়েছে ওই রোদে চার-পাঁচটি বালক-বালিকার সঙ্গে ছিল একজন শক্তসমর্থ গোছের তদারককারী। পানসি কিছুদূর এগিয়ে যেতেই বড় চার বা পাঁচ নদীর মোহনা। কিন্তু সে মোহনায় যাওয়ার আগেই তুলনামূলক একটি ছোট নদীর কূলজুড়ে ফুটে আছে কাঁটা ঝাড়ের ফুল। অর্থাৎ ওয়ার্ডসওয়ার্থের সেই বিখ্যাত ডেফোডিল। এই ফুল গাছগুলোর গোড়া থেকে তখন নেমে গেছে জোয়ারের পানি। রেখে গেছে গাছের গোড়ায় নরম পলি মাটির ছাপ। কোনটা আবার একেবারে ধোয়া পরিষ্কার। যেন জোয়ারের জল মালীর মমতা দিয়ে গাছগুলোর গোড়া ধুইয়ে দিয়ে গেছে। শীতের নরম রোদে পানসির ছাদে বসা বালক-বালিকাগুলোর চোখ ছিল এতক্ষণ কাঁটা ঝাড়ের ফুলের দিকে। হঠাৎ তাদের চোখ পড়ে ওই ফুল গাছগুলোর গোড়ায় অনেক লাল ফুলের মতো কী যেন! বাল্যকালের অবাক বিস্ময় তাই সঙ্গে সঙ্গে তাদের তত্ত্বাবধায়ক মামাকে প্রশ্ন করে, মামা ওগুলো কী ফুল? তিনি ওই সাগরের জোয়ার-ভাটায় অনেক পোড়খাওয়া মানুষ, হেসে বলেন, আরে ওগুলো ফুল নয়, কুমির হা করে রোদ পোহাচ্ছে। আর ওই লাল ফুলের মতো যা দেখছিস ও হচ্ছে কুমিরের গালের ভেতরটা। এর পর যতই মোহনার দিকে পানসি এগিয়ে চলে ততই ওই লাল ফুল। পানসিখানা এবার নদীর মোহনার দিকে এগিয়ে চলেছে। কোন দিকে কূল দেখা যাচ্ছে না। বালক-বালিকাগুলো মনে মনে ধরে নিয়েছে তারা সাগরে পৌঁছে গেছে। ওদের সঙ্গী একটি বালিকা ইতোমধ্যে জোড় হাত করে প্রণাম করে বসে। অন্যরা বলে, এই-এই তুই কী করছিস? সে বেশ বিজ্ঞের মতো বলে, তোরাও কর। বালকেরা সব সময়ই বৃদ্ধের থেকে স্বাধীনচেতা। কারণ তাদের পিঠে তখনও কোন চাবুক পড়েনি। তাই অত সহজে তারা নির্দেশ পালন করতে চায় না, তারপর আবার একজন সমবয়সীর। বরং ঘাড় সোজা করে বলে, কাকে প্রণাম করব রে? বালিকার জোর উত্তর, কেন মা তো বলেই দিয়েছে, সাগরকে দেখার সঙ্গে সঙ্গেই সাগরদেবীকে দু’হাতে প্রণাম করিস। তত্ত্বাবধায়ক মামা বিবাদ বাধার আগেই মীমাংসা করে দেন, এটা সাগর নয়। সাত নদীর মোহনা। পরাজিত বালিকার মুখ তখন শীতের রোদের আভায় আরও লাল। ওই নদীর মোহনা পার হতেই শীতের সূর্য পশ্চিমে হেলে যায়। তার তেজ নরম হয়ে আসে। কিন্তু ওপারে কূল পেতেই কিচির-মিচির শব্দ শুনে বালক-বালিকাগুলো আবার পানসির ছাদে চলে আসে। তাদের সকলের চোখে তখন অবাক বিস্ময় আর এক নতুন উত্তেজনা। কূলজুড়ে ঘন সবুজ ওড়া কেওড়ার বন। আর ওড়া কেওড়া গাছগুলোকে মাতিয়ে তুলেছে ঝাঁকে ঝাঁকে বানর। তার পরেও দীর্ঘপথ পাড়ি। রাত্রি যাপন। তবেই পাওয়া যায় সমুদ্র প্রণাম করার সমুদ্রকে। আর তার পাশজুড়ে ঘন সুন্দরবন। যা ভরা সুন্দরী, হেতাল, গেওয়া, গরান, গর্জন গাছে। গোলপাতা তো আছেই। এসব গর্জনের তেলে উজ্জ্বল হয় মাটি, পাথর ও কাঠের মূর্তি। গেওয়া কাঠের তবলাই তো তোলে ধা তিন, ধা তিন বোল। যাই হোক, বালক-বালিকাগুলো তাই সত্যি সত্যি যখন সাগর তীরের সুন্দরবনে পৌঁছায় ততক্ষণে তারা সুন্দরবনের সঙ্গে একটি মানসিক মিতালী তৈরি করে ফেলেছে। কারণ হঠাৎ করে তাদের সুন্দরবনে পৌঁছাতে হয়নি। রাজ সিংহাসনে বসা রাজার কাছে পৌঁছানোর আগে একের পর এক দ্বারী, রক্ষী, ছত্রী, মন্ত্রী, সেনাপতি সকলের সাজ, তাদের অভিবাদন যেমন রাজসভার আবহাওয়ার সঙ্গে পরিচিত করে নেয়, বনের রাজা সুন্দরবনেরও ছিল তেমনি ঘটা। সামাজিক, রাজনৈতিকসহ অনেক উত্থান-পতন পার হয়ে সত্তর দশকে ওই বালক-বালিকাদের কয়েকজন তাদের তারুণ্যে টগবগে শরীর নিয়ে আরও অনেক নতুন বন্ধুসহ আরেক শীতে চলেছে সুন্দরবন দেখতে। এবার আর বাহন পানসি নয়। এবারের বাহন লঞ্চ। বালকের চোখ ছোট ছিল না, আসলে নদী ছোট হয়ে গেছে- এ বিরাট প্রশ্ন এখন ওই সব তরুণের মনে। নদীগুলো আর সেদিনের মতো প্রমত্তা নেই। সাত নদীর মোহনাকে অনেক ছোট মনে হয়। সাত নদীর মোহনা পার হয়ে সুন্দরবনের প্রায় কাছে চলে এসেছে লঞ্চ। না, নদীর কোন পাড়ে কোথাও আর ওইভাবে কোন জঙ্গল নেই। ছোট নদী তো দূরে মরুক মোহনা পার হয়েও দেখা হয়নি একটি কুমিরের সঙ্গে। নদীর কূলে কূলে বিচ্ছিন্ন কয়েকটি ওড়া কেওড়ার গাছ আছে। খুব ছোট আকারের দু’একটা গোলপাতা বন। কিন্তু না, কোথাও বানর মহাশয় নেই। এমনি পথ পাড়ি দিয়ে পড়ন্ত বিকেলে তারা পৌঁছে যায় সমুদ্রের তীরেÑ সুন্দরবনে। এবার তাদের মনে হয়, এ যেন পরিত্যক্ত এক রাজপাট। রাজা নেই। রাজসভা নেই। নেই কোন রাজসভার আবাহন। শেষবারের মতো ওই বালক রিপোর্টারের নোটবুক নিয়ে ’৮৯ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পরে রিপোর্ট করতে যায় সুন্দরবনে। সঙ্গে সঙ্গী হিসেবে নিয়েছে কয়েকজন বনের পাশের শক্তসমর্থ মানুষ। যারা বাঘের হাত থেকে বাঁচাতে পারে। দুই দিন রাতে সুন্দরবন থেকে একটু দূরে একটি গ্রামে থাকা। আর দিন হলেই জঙ্গলের ভেতর রিপোর্ট সংগ্রহের জন্য খোঁজাখুঁজি। জোয়ার-ভাটায় তখন শুধু হরিণের মৃতদেহ। এমনকি মৃতদেহ বাঘেরও। আরও কত নাম না জানা ছোট প্রাণীর মৃতদেহ পড়ে আছে। মনে হলো সুন্দরবনের প্রাণিকুলের ওপর এবার প্রকৃতি মাতা যে চরম আঘাতটি হানল তা দেখা হলো নিজের চোখে। প্রতিটি রিপোর্টার মনে হয় একটি আশা নিয়ে বাঁচে। সে আশা হলো একদিন লিখব অনেক কিছু। যা দেখছি এ নিয়ে অনেক কিছু লিখব। কেউ কেউ যে লেখার সুযোগ পান না তা নয়। বন্ধু যারা ভাগ্যবান, যারা পশ্চিমা দেশে বা এশিয়ার সমৃদ্ধ দেশগুলোতে জন্মেছেন তাঁদের সে সৌভাগ্য হয়। তাঁরা অনেকেই অনেক ইউনিভার্সিটি বা ফাউন্ডেশনের সহায়তায় তাদের আশা পূরণ করে যান। আর আমাদের মতো আর্থিক, চিন্তা জগত ও মানসিক দীনতার দেশে যাদের জন্ম, তাদের জন্য তো আশা কুহকিনী। তারপরেও পৃথিবীর সব থেকে সুন্দরী মেয়ে আশা। তার মুখ কার না ভাল লাগে! ’৮৯-এর ঘূর্ণিঝড়ের পরে ধ্বংস হয়ে যাওয়া সুন্দরবনের গভীরে ঘুরতে ঘুরতে দেখি ওই আশা মেয়েটি তার সুন্দরী কিশোরী মুখটি নিয়ে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। ও তার নরম লতার মতো হাতের ডগায় হাতছানি দিয়ে নিয়ে গেল আবার ওর বাড়িতে। আবার আশার বাড়িতে। দৃঢ় মন এবার। না লিখতেই হবে। কারণ, জিয়াউর রহমানের আমলে অপ্রচলিত পণ্য রফতানি করে দেশের আয় বাড়ানোর নামে কিভাবে সুন্দরবনের সাপ ধরে রফতানি করা হয় সে সব নিজ চোখে দেখেছি। বন যেমন মানুষকে টানে কোন কোন প্রাণীরও তেমনি মানুষকে টানার অসীম ক্ষমতা। সাপ তাদের একটি। জীবনের একটি পর্যায়ে বেশ কিছুদিন কেটেছে সাপকে নিয়ে। তাই সাপ অনেক পরিচিত প্রাণী হয়ে গেছে জীবনের সঙ্গে। যাহোক, জিয়াউর রহমানের আমলে সুন্দরবন এলাকার সাপ ধরা ও তা রফতানির সেই অশ্লীল, বর্বর উৎসব দেখেছি। দেখেছি, ব্যাঙ, গুইসাপ ধরা ও রফতানির সেই নির্মম দৃশ্য। ব্যাঙের পা রফতানি হতো। মাথা কেটে তাই ফেলে দেয়া হতো বাকি অংশ। লাখ লাখ ব্যাঙের রক্তে লাল হতে দেখেছি নদীর পানি। রাতজুড়ে বর্ষাকালে তখন চলত ব্যাঙ ধরার মহাযজ্ঞ। গুইসাপ ও সুন্দরবনের শত প্রকার সাপ ধরে লঞ্চ ও নৌকাভর্তি করে নিয়ে আসত। ’৮৯ সালে সুন্দরবনের লাখ লাখ প্রাণীর মৃতদেহ দেখে তাই মনে হয়েছিল সুন্দরবন এলাকার এই প্রাণী ধ্বংসের ইতিকথা লিখতে হবে। অনেক বড় আকারে লিখতে হবে। জানিনা কোনদিন সে লেখা হবে কিনা! ’৮৯-এর ওই ঘূর্ণিঝড় নিয়ে খুব বেশি রিপোর্ট হয়নি। কারণ, ওই ঘূর্ণিঝড়ে মানুষ মারা গিয়েছিল খুবই কম। ঝড়ের মূল আঘাতটি এসে পড়েছিল বনের ওপর। তাই বন ও প্রাণী মরে বাঁচিয়ে ছিল লাখ লাখ মানুষকে। সেদিন এই মাতা সুন্দরবন কিভাবে নিজে ধ্বংস হয়ে যে তার মানুষ-প্রাণীগুলোকে বাঁচিয়েছিল সে ইতিহাস অগোচরেই থেকে গেল সকলের। এমনকি তখনকার সরকারপ্রধান সামরিক শাসক এরশাদও সেদিন ঘূর্ণি-বিধ্বস্ত ওই এলাকায় যাননি। গিয়েছিলেন শুধু শেখ হাসিনা। আর কোন রাজনৈতিক দলের কোন নেতা, কোন পরিবেশবাদী, কোন এনজিও নেতাকে সেদিন যেতে দেখিনি। কারণ যেহেতু মানুষ মারা যায়নি, তাই সেখানে ভোটের ব্যবসাও ছিল না, ছিল না ডোনারদের দেয়া অর্থের ব্যবসাও। সেই ’৮৯ থেকে আজ ২০১৪। না, আজ অবধি কোন উদ্যোগ দেখিনি সুন্দরবনের প্রাণিকুলকে রক্ষা করা যায় কিনা। বরং রাজা ছাড়া রাজপাটের মতো, গৃহীছাড়া পরিত্যক্ত বাড়ির মতো সুন্দরবনটি দিনে দিনে ধ্বংস হচ্ছে। না আছে কোন সরকারের কোন উদ্যোগ। আর পরিবেশবাদী, সত্যি কথা বলতে কী বাংলাদেশে পরিবেশ ব্যবসায়ী আছে, পরিবেশবাদী নেই। তাই কেউ কোন উদ্যোগ নেয়নি। কিছু কথা হয়, পত্রিকায় নাম ছাপানো হয়- এসব আর কী! ’৮৯-এর সেই বিধ্বস্ত সুন্দরবন দেখে ও তারপরে আজকের এ অবস্থা দেখে মনে হয়, আসলে ইংরেজরা না এলে হয়ত এই সুন্দরবন জরিপও হতো না। পিতা-পুত্র মিলে কিভাবে সেদিনের সেই ভয়ঙ্কর সুন্দরবন জরিপ করেছিলেন তারা। পিতার অসমাপ্ত কাজ পুত্র শেষ করেছিলেন। আর আমাদের স্বাধীন দেশে এখন আমরা যে কোন কাজে কমিশন খুঁজি। তাছাড়া সত্যি বলতে কী কোন মৌলিক কাজ করার যোগ্যতাও আছে কিনা আমাদের এটাও একটি প্রশ্ন। সুন্দরবন জরিপ তো দূরে থাকুক, বাঘ জরিপই করতে পারি না আমরা। আমাদের পার্লামেন্টে যখন বলা হয় চার শ’ আশিটি বাঘ আছে তখন ব্রিটিশ পদ্ধতি অনুযায়ী গণনার ফল বাস্তবে আমাদের সুন্দরবনে মাত্র ৭০টি বাঘ আছে। ধীরে ধীরে সুন্দরবনকে এভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। তার কফিনে আরেকটি বড় পেরেক পড়ল শ্যালা নদীতে তেলবাহী ট্যাঙ্কার ডুবে। কোন দেশের রূপকথা ঠিক এ মুহূর্তে মনে করতে পারছি না, তবে ওই রূপকথায় আছে, যে দেশে সবাই রাজ আনুকূল্যে জ্ঞানী হয়ে যায় ওই দেশ ছেড়ে প-িতরা পালিয়ে যান। বাংলাদেশের মনে হয় এখন সেই সময় এসেছে। তা না হলে নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান কিভাবে এ জ্ঞান অর্জন করে ফেললেন যে শ্যালা নদীতে তেলের ট্যাঙ্কার ডোবার পরে যেভাবে তেল ছড়িয়ে পড়েছে তাতে সুন্দরবনের কোন ক্ষতি হবে না। আসলে মন্ত্রিত্ব যদি জ্ঞান অর্জনের এত সহজ পথ হয় তাহলে মনে হয় দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বন্ধ করে দিয়ে আমাদের ছেলেমেয়েদের মন্ত্রী বানিয়ে দেয়া ভাল। কোন পরিশ্রম লাগবে না, একেবারে রাতারাতি সব বিষয়ে এক্সপার্ট হয়ে যেতে পারবে। তখন আর আমাদের দেহ বিক্রির জন্য বিদেশে যেতে হবে না এখনকার মতো, এক্সপার্টিজম বিক্রির জন্য সদর্পে যেতে পারব। তবে সব বড় নাট্যকারের নাটকের মতো আমাদেরও সব ঘটনায় একটি কমেডির দৃশ্য থাকে। শ্যালা নদীর দুর্ঘটনার পরে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন ঘষিয়াখালী চ্যানেলটি আবার চালু করতে হবে। জানা গেল ওই চ্যানেলে এখন চিংড়ি চাষ হয়। নৌপথ সহজ করার স্বার্থে ঘষিয়াখালী চ্যানেলটি কাটা হয়েছিল। এই নৌমন্ত্রী এত দাপটের সঙ্গে ছয় বছর মন্ত্রিত্ব করছেন অথচ উনি জানেন না ওই চ্যানেলটি মজে গেছে। সেখানে স্বার্থান্বেষীরা চিংড়ি চাষ করছে। এখন প্রধানমন্ত্রীকে নির্দেশ দিতে হলো। প্রায় নাটকে চরম ট্র্যাজেডির আগে বা পরে কমেডি থাকে। ঘষিয়াখালী চ্যানেলে চিংড়ি চাষ হচ্ছে এই কমেডির পরে চরম ট্র্যাজেডি হলো দেশের জন্য, এ কাজটুকুও শেখ হাসিনাকে করতে হয়। এর পরে শামসুর রাহমানের কবিতার লাইন ব্যবহার করে শুধু বলা যায়, ‘তোমার কন্যা এ-কি দুঃসহ ভার বয়।’ বাস্তবে শেখ হাসিনার এই দুঃসহ ভার বহন দেখে কেবলই মনে পড়ে রবীন্দ্রনাথের নকল বুদিগড় কবিতার ওই লাইনটি, ভূমি পরে জানু পাতি তুলি ধনু-শর একা কুম্ভ রক্ষা করে নকল বুদিগড়। শেখ হাসিনা বাংলাদেশ নামক এই বুদিগড়টি রক্ষার জন্য যেন হারাবংশী বীর কুম্ভর মতো একাই লড়াই করে যাচ্ছেন। শ্যালা নদীতে এই তেলের ট্যাঙ্কার ডোবার পর জ্ঞানী শাহজাহান খানের কি একবারও মনে হয়নি, আমাদের দেশে অন্তত কয়েকজন পানি বিশেষজ্ঞ আছেন, অন্তত আইনুন নিশাত আছেন, তাঁকে একটি ফোন করি। তাঁকে বলি, আপনি আসুন দেশকে এ বিপর্যয়ে সহায়তা করুন। নেতা সব সময় সব কিছু জানবেন না, কিন্তু তিনি যা সবার থেকে বেশি জানবেন তাহলো সঠিক লোকটিকে, সঠিক কাজে কিভাবে নিয়োগ করা যায়। [email protected]
×