ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বীমা কোম্পানির অর্থের ৬০ শতাংশ বাজারে বিনিয়োগযোগ্য

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪

বীমা কোম্পানির অর্থের ৬০ শতাংশ বাজারে বিনিয়োগযোগ্য

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সাধারণ বীমা কোম্পানির বিনিয়োগযোগ্য অর্থের ৬০ শতাংশ ও জীবন বীমা কোম্পানির ৫৫ শতাংশ পুুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ রেখে খসড়া বিনিয়োগ নীতিমালা প্রণয়ন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। আগামীতে এই খসড়া নীতিমালাটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে যাবে। সেখানে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠকের পরে তা চূড়ান্ত। জানা গেছে, খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী বীমা কোম্পানির বিনিয়োগযোগ্য অর্থ সরকারী সিকিউরিটিজ, স্থাবর সম্পত্তি, অঙ্গ প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করা যাবে। এছাড়া তফসিলী ব্যাংক ও ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে (এনবিএফআই) আমানত হিসেবে, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ইস্যুকৃত বন্ডে, ঋণপত্র অথবা অন্যান্য সিকিউরিটিজে, অগ্রাধিকার অথবা সাধারণ শেয়ারে, মিউচুয়াল ফান্ডে এবং আইডিআরএ’র অনুমোদিত অন্য সম্পদে বিনিয়োগ করা যাবে। তবে সরকারী সিকিউরিটিজে উভয় শ্রেণীর বীমা কোম্পানিকে বাধ্যতামূলক বিনিয়োগ করতে হবে। জীবন বীমার জন্য সরকারী সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের সর্বনিম্ন পরিমাণ হবে বিনিয়োগযোগ্য অর্থের ৩০ শতাংশ। আর সাধারণ বীমার ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ। বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারে উভয় শ্রেণীর বীমা কোম্পানি বিনিয়োগযোগ্য অর্থের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারবে। মিউচুয়াল ফান্ডে সর্বোচ্চ ২০ শতাংশ; ঋণপত্র অথবা অন্যান্য সিকিউরিটিজে জীবন বীমা কোম্পানি বিনিয়োগযোগ্য অর্থের ১০ শতাংশ এবং সাধারণ বীমা কোম্পানি ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারবে। স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত যে কোম্পানি বিগত দুই বছর বোনাস লভ্যাংশসহ ১০ শতাংশ বা তার ওপর লভ্যাংশ দিয়েছে সে কোম্পানির প্রেফারেন্স শেয়ার অথবা সাধারণ শেয়ারে যে কোন বীমা কোম্পানি বিনিয়োগ করতে পারবে। তবে একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগযোগ্য অর্থের ৫ শতাংশ এবং ওই কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের বেশি হবে না। একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগযোগ্য অর্থের ৫ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যাবে। তবে বিগত তিন বছর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেয়া অথবা বিগত ৫ বছর ঋণপত্রের ওপর সম্পূর্ণ সুদ পরিশোধ না করা কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা যাবে না। আর শেয়ারে পুঞ্জীভূত বিনিয়োগের পরিমাণ হবে বিনিয়োগযোগ্য অর্থের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ। এছাড়া বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদিত অথবা নিয়ন্ত্রিত মিউচুয়াল ফান্ড ও ইউনিট ফান্ডে এবং বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদিত যে কোন ইউনিট ফান্ড ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগযোগ্য অর্থের ২০ শতাংশ বিনিয়োগ করা যাবে। একই সঙ্গে ঋণপত্র অথবা সরকার অনুমোদিত কোন সিটি কর্পোরেশনের ঋণপত্র অথবা সিকিউরিটিজ এবং যে কোন স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানির ঋণপত্রে বিনিয়োগযোগ্য অর্থের ১০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যাবে। খসড়া নীতিমালা অনুযায়ী সাধারণ বীমা কোম্পানি শর্তসাপেক্ষে বিনিয়োগযোগ্য অর্থ আমানত হিসেবে তফসিলী ব্যাংকে ৮০ শতাংশ ও ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ১০ শতাংশ পর্যন্ত রাখতে পারবে। এ ছাড়া স্থাবর সম্পত্তিতে ৩০ শতাংশ, সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে ২০ শতাংশ এবং আইডিআরএ’র অনুমোদিত অন্যান্য সম্পদে ৫ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারবে। ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ইস্যু করা বন্ডে সরকারী সিকিউরিটিজে বিনিয়োগের পর অবশিষ্ট থাকা বিনিয়োগযোগ্য অর্থের ১০ শতাংশ বিনিয়োগ করা যাবে। অন্যদিকে জীবন বীমা কোম্পানি শর্তসাপেক্ষে বিনিয়োগযোগ্য অর্থ তফসিলী ব্যাংকে আমানত হিসেবে ৬০ শতাংশ, স্থাবর সম্পত্তিতে ২৫ শতাংশ, সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে ২০ শতাংশ, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ইসু্যু করা বন্ডে ১৫ শতাংশ, অব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আমানত হিসেবে ১০ শতাংশ এবং কর্তৃপক্ষে অনুমোদিত অন্যান্য সম্পদে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারবে। আইডিআরএ সূত্রে জানা গেছে, খসড়া নীতিমালায় বাংলাদেশে অনুমোদন পাওয়া সব বীমা কোম্পানির জন্য দেশের অভ্যন্তরে বিনিয়োগ বাধ্যতামূলক। জীবন বীমার ক্ষেত্রে এ বিনিয়োগের পরিমাণ অপরিশোধিত মেয়াদোত্তীর্ণ উত্থাপিত দাবি এবং বাংলাদেশে বীমা পলিসির মেয়াদোত্তীর্ণ দাবি পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের কম হবে না। অন্যদিকে সাধারণ বীমা কোম্পানিকে দায়সমূহের অতিরিক্ত ১০ শতাংশ এবং নিট প্রিমিয়াম আয়ের ১০ শতাংশের মধ্যে যেটি বেশি হবে তার সমপরিমাণ অর্থ বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে হবে।
×