ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

সৈন্য প্রত্যাহারের প্রশ্নই ওঠে না

প্রকাশিত: ০৬:১৪, ১৬ ডিসেম্বর ২০১৪

সৈন্য প্রত্যাহারের প্রশ্নই ওঠে না

ইসরাইলী প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দু’বছরের মধ্যে জেরুজালেম ও পশ্চিম তীর থেকে তার দেশের সৈন্য প্রত্যাহারের কথাবার্তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। ফিলিস্তিনিরা তাদের রাষ্ট্রের জন্য দাবি করছে এমন সব ভূখণ্ড থেকে সরে যাওয়ার সে কোন সময়সীমা নির্ধারণের উদ্যোগ ইসরাইল প্রতিহত করবে। নেতানিয়াহু মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরিকে একথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। ফিলিস্তিনি নেতারা রবিবার জানান যে, তারা ইসরাইলকে এর ওই দখলদারির অবসান ঘটাতে দু’বছরের সময়সীমা স্থির করে দিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে এক প্রস্তাব পেশ করার পরিকল্পনা করছেন। ইসরাইল অশাব্যক্ত করেছে যে, এর অধিকৃত ওই ভূখ- থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের কোন সময়সীমা নির্দেশ করতে জাতিসংঘে উত্থাপিত যে কোন প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্র ভেটো দেবে। কিন্তু এক উর্ধতন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, কোন কিছু বলার সময় এখনও আসেনি। কেরি ও নেতানিয়াহু সোমবার এক ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রগঠন সম্পর্কে জাতিসংঘে বিতরণকরা বিভিন্ন প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করার কথা। খবর এএফপির, গার্ডিয়ান ও অন্যান্য ওয়েবসাইটের। কেরি অচল হয়ে পড়া ইসরাইলি ফিলিস্তিনি শান্তি আলোচনা পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টায় ইউরোপে কতকগুলো বৈঠকের সূচনা করেছেন। ওই আলোচনা গত এপ্রিলে ভেঙ্গে পড়ে। তখন থেকে ফিলিস্তিনিরা পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী করে ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীর ও ইসরাইলী অবরুদ্ধ গাজা এলাকা নিয়ে তাদের নিজস্ব রাষ্ট্রগঠন করতে জাতিসংঘে একতরফা চেষ্টা চালাচ্ছে। জর্দান গত মাসে ফিলিস্তিনিদের খসড়া করা এক প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদের ১৫ সদস্যের মধ্যে বিতরণ করে। এতে ২০১৬ সালের নবেম্বরের মধ্যে ফিলিস্তিনি ভূখ-ের ওপর ইসরাইলি দখলদারির অবসান ঘটানোর আহ্বান জানানো হয়। ১৯৬৭ সালের এক যুদ্ধে ইসরাইল ওই ভূখ- দখল করেছিল। নতানিয়াহু কেরির পাশাপাশি ইতালীয় প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজির সঙ্গে দেখা করবেন। নেতানিয়াহু রবিবার কেবিনেটে বলেন, ইসরাইল সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়া ইসলামী চরমপন্থীর ঢেউয়ের মধ্যে বহুলাংশে এক বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মতো দাঁড়িয়ে আছে। আমি একথা তাদের উভয়কেই বলব। তিনি বলেন, এখন ইসরাইলকে অধিকৃত ভূখ- থেকে দু’বছরের মধ্যে সরে আসার জন্য বাধ্য করতে কূটনৈতিক চেষ্টা চালানো হতে পারে। তিনি বলেন, সৈন্য প্রত্যাহার করা হলে তা উগ্র ইসলামপন্থীদের তেল আবিবের উপকণ্ঠে এবং জেরুজালেমের কেন্দ্রস্থলে নিয়ে আসবে। আমরা এটি হতে দেব না। আমরা জোরালোভাবে ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে এটি প্রতিহত করব। ইউরোপীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করার জন্য কেরির প্যারিসেও যাওয়ার কথা। এরপর তিনি প্রধান ফিলিস্তিনি আলোচক সায়েব এরাকত ও আরব লীগের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনা করতে লন্ডন যাবেন। তারা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনি ভেটো না দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানাবেন। উর্ধতন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেন, তারা ২০১৬ সালের মধ্যে ইসরাইলী দখলদারিত্বের অবসান চেয়ে এক খসড়া প্রস্তাব কয়েকদিনের মধ্যে জাতিসংঘে উত্থাপন করবেন। ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থার সিনিয়র সদস্য ওরাসেল আবু ইউসুফ বলেন, ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব দখলদারির অবসান সম্পর্কিত তাদের প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটির জন্য আগামী বুধবার নিরাপত্তা পরিষদে সেটি উত্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি রামাল্লায় এক বৈঠকের পর এএফপির সঙ্গে কথা বলেছিলেন। কিন্তু মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এক উর্ধতন কর্মকর্তা বলেন, নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব উত্থাপন করাই যে সঠিক পথ, ওয়াশিংটন এখনও সেই সিদ্ধান্তে পৌঁছেনি। ইসরাইলের স্ট্যাটেজিক বিষয়ক মন্ত্রী ইউভাল স্টেইনিটজ সাংবাদিকদের বলেন, আমি মনে করি যে কোন ইসরাইল বিরোধী প্রস্তাবেই কোন মার্কিন ভেটো পড়বে। সব সময়েই তাই হয়ে এসেছে এবং আমরা তাই ঘটবে বলে আশা করছি। কিন্তু ইসরাইলী পররাষ্ট্রমন্ত্রী অভিগডর লিবারম্যান আর্মি রেডিওকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ইস্যুতে ভেটো প্রয়োগ করতে আগ্রহী নয় বলে মনে হয়, কিন্তু দেশটি নেতানিয়াহুর সঙ্গে সর্বোচ্চ সমন্বয় রেখে কাজ করতে চায়। ওই উর্ধতন মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, উত্তেজনা হ্রাস করা এবং বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রাখার চেষ্টা করাই আমাদের সাধারণ লক্ষ্য। তিনি বলেন, আমরা দুই রাষ্ট্র সমাধানের অশা উন্মুক্ত রাখতে চাই। আমরা সবাই আমাদের সাধ্যমত সহিংসতা বৃদ্ধি রোধ করতে চাই।
×